হেমলক সোসাইটির সিক্যুয়েল হিসেবে আসছে কিলবিল সোসাইটি। আগেরবারের মন্ত্র ছিল মরবে মরো ছড়িও না। এবারের মরতে হলে বাঁচতে হবে। এবার আনন্দ কর মৃত্যুঞ্জয় কর হয়ে ফিরছেন। আর ছবি মুক্তির আগে প্রচারের জন্য একটি নতুন পোস্টার প্রকাশ্যে আনা হয়। আর তারপরই যারপরনাই কটাক্ষের মুখে পড়েন ছবির নির্মাতারা।
কী ঘটেছে?
কিলবিল সোসাইটির প্রচার একটি পোস্টার প্রকাশ্যে আনা হয়েছে যেখানে লেখা 'অসহায় লাগছে? হোয়াসঅ্যাপ করুন। মৃত্যুঞ্জয় কর।' বলে একটি নম্বর দেওয়া। এই ছবিটি দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছেন নেটিজেনরা। এক ব্যক্তি গোটা বিষয়ের বিরোধিতা করে লেখেন, 'আপনি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন। অথবা, বাসে বা অটোয় চড়ে কোথাও যাচ্ছেন। হঠাৎ দেখতে পেলেন, রাস্তার ধারে সাঁটা রয়েছে এই বিজ্ঞাপনী পোস্টার। তাতে লেখা, 'অসহায় লাগছে? হোয়াটসঅ্যাপ করুন এই নম্বরে'। আপনি হয়তো গভীর কোনও মনস্তাত্ত্বিক সমস্যায় আক্রান্ত, অথবা জটিল কোনও মনের সঙ্কটে আচ্ছন্ন। সত্যিই এই মুহূর্তে আপনার বড় অসহায় লাগছে। মাঝে মাঝে সাপের ফণার মতো মৃত্যুপ্রবণতাও উঁকি মারছে মনে। মনোরোগের কোনও চিকিৎসককে খুব প্রয়োজন আপনার। কিন্তু নানা কারণে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। এ বার খড়কুটো আঁকড়ে ধরার মতো করেই আপনি হয়তো যোগাযোগ করলেন বিজ্ঞাপনী পোস্টারে দেওয়া ফোন নম্বরে। উত্তরও পেলেন সঙ্গে সঙ্গে। এবং তখনই জানতে পারলেন, ওই পোস্টার আসলে মুক্তি-আসন্ন একটি বাংলা ছবির কৌতূহলোদ্দীপক বিজ্ঞাপন। এ যুগের আধুনিক লব্জে যাকে বলে Teaser।' তিনি আরও লেখেন, 'কিন্তু প্রশ্ন হল, মানসিক সমস্যা বা মনোরোগ নিয়ে এই বালখিল্যতার কি কোনও প্রয়োজন ছিল? যে দেশে মানসিক সমস্যা-বিহ্বল যে কোনও মানুষ খুব সহজেই হাসির খোরাক হয়ে ওঠেন, যে দেশে একটি বিরাট অংশের মানুষ 'মনের অসুখ' ব্যাপারটাকেই সোনার পাথরবাটি বলে মনে করেন, যে দেশে মনোরোগ চিকিৎসককে দেখানোর সঙ্গে লোকলজ্জার ভয় এখনও ওতপ্রোত ভাবে জড়িত, সে দেশে এমন বিভ্রান্তিকর, অবিমৃষ্য এবং অসংবেদনশীল বিজ্ঞাপন রাস্তায় কী ভাবে শোভা পায়, ভেবে বিস্মিত হচ্ছি। অবসাদগ্রস্ত, হতাশ বা আত্মহত্যাপ্রবণ কোনও মানুষ যদি সত্যিই ওই নম্বরে যোগাযোগ করার পরে বিফলমনোরথ হন, তা হলে তাঁর মনের অবস্থা কেমন হবে, একটি বার কি ভেবে দেখেছেন?'
তাঁর এই লেখাটি বিপুল ভাবে শেয়ার হয়েছে। মনো-সমাজকর্মী রত্নাবলী রায় সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি এই পোস্ট শেয়ার করেছেন।
কী জবাব দিলেন সৃজিত?
সৃজিত মুখোপাধ্যায় এদিন এই পোস্টার নিয়ে হইচই পড়ে যাওয়ায় জানান এটার সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। পরিচালকের কথায়, 'এটা সবার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে আমার কোনও ভূমিকা নেই কিলবিল সোসাইটির প্রচার জন্য কোনও ক্রিয়েটিভ কিছুতে। তাই যাঁরা আমায় প্রশ্ন করছেন এই ছকের বাইরে গিয়ে ভাবনা এবং এটার কি ক্ষতিকারক প্রভাব পড়তে পারে সমাজে সেটা নিয়ে আমায় প্রশ্ন না করে যথাস্থানে করুন। আমি লেখক এবং পরিচালক হিসেবে এটুকু বলতে পারি হেমলক সোসাইটির মতো এটাও ভীষণ ভাবে জীবনমুখী সিনেমা।'
আরও পড়ুন: বিরাটের পর এবার শাহরুখ! কিং খানকে দেখার নেশায় রেলিং টপকে মাঠে ঢোকার চেষ্টা যুবকের, তারপর...?
প্রসঙ্গত এদিন সিনেমা সংক্রান্ত আলোচনার একটি গ্রুপে এক ব্যক্তি জানান তিনি উক্ত নম্বরে মেসেজ করেছেন। সেই বিষয়ে তিনি লেখেন, 'অসহায় লাগছে? এই পোস্টারটি এখন কলকাতার রাজপথে ছেয়ে গেছে। অনেকেই খেয়াল করেছেন আশা করি, সেই পোস্টারের নীচে একটি Whatsapp Number-ও দেওয়া আছে, ভীষণ কৌতুহলি হয়ে গতকাল সেই নাম্বারটিতে একটি ম্যাসেজ করেছিলাম, খুব অসহায় ছিলাম মৃত্যঞ্জয় কর- এর সাথে একটু গল্প করব কিন্তু যা বুঝলাম তিনি সিনেমা হলেই একমাত্র মুখ খুলবেন, তার আগে নয়। যাই হোক, সৃজিত বাবুর পোস্টার ভাবনাটা বেশ অভিনব লাগল তাই শেয়ার করলাম।'

কিলবিল সোসাইটি প্রসঙ্গে
ছবিটির পরিচালনা করেছেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়। প্রযোজনা এসভিএফ। মুখ্য ভূমিকায় দেখা যাবে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, কৌশানি মুখোপাধ্যায়কে। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আছেন সন্দীপ্তা সেন, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, প্রমুখ। কিলবিল সোসাইটি ছবিটি আগামী ১১ এপ্রিল মুক্তি পাচ্ছে।