বুধবার সকালে ND স্টুডিয়ো থেকে উদ্ধার হয়েছিল বলিউডের খ্যাতনামা আর্ট ডিরেক্টর নীতীন দেশাইয়ের ঝুলন্ত দেহ। ময়না তদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, গলায় ফাঁস দেওয়ার কারণেই মৃত্যু। আরও সামনে আসে যে নীতীনের মাথায় ছিল বিপুল ঋণের বোঝা। তারপর থেকে প্রশ্ন উঠতে থাকে, এই বিপুল পরিমাণ অর্থ জোগাড় করতে না পেরেই কি নিজেকে শেষ করে দেওয়ার রাস্তা বেছে নিলেন তিনি?
শনিবার নীতীন দেশাইয়ের মেয়ে মানসী দেশাই একটি বিবৃতি জারি করেন। যাতে তিনি স্পষ্ট করে দেন, কারও টাকা মারার কোনও উদ্দেশ্যই তাঁর বাবার ছিল না।
এএনআইকে মানসী বলেন, ‘আমার বাবার কাউকে প্রতারণা করার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। তিনি যে সমস্ত অর্থ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা তিনি পূরণ করতেনই। তবে করোনার মহামারীর কারণে একটানা কোনও কাজ ছিল না এবং স্টুডিয়োও বন্ধ ছিল। এবং এর কারণে তিনি আর নিয়মিত অর্থপ্রদানে সক্ষম হননি।’ মানসী আরও প্রকাশ করেছেন যে, তাঁর বাবা একটি কোম্পানি থেকে ১৮১ কোটি ঋণ নিয়েছিলেন, যার মধ্যে তিনি ৮৬.৩১ কোটি টাকা পরিশোধ করেছেন।
‘ঋণের পরিমাণ ছিল ১৮১ কোটি, এবং আমরা ইতিমধ্যেই ৮৬.৩১ কোটি টাকা পরিশোধ করেছি। আমরা ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে সমস্ত অর্থ প্রদান করেছি। তারপরও তারা ছয় মাসের সুদও চেয়েছিল, যা আমার বাবা পাওয়াইতে তার অফিস বিক্রি করে পরিশোধ করেছিলেন। কাউকে জালিয়াতি করার কোনো উদ্দেশ্যই ছিল না। কারণ তিনি তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতিমতো অর্থ প্রদান করে যাচ্ছিলেন।’, আরও জানান মানসী।
মানসী মিডিয়ার কাছে অনুরোধ জানান যাতে তাঁর বাবাকে নিয়ে মানহানিকর ও অপপ্রচারমূলক সংবাদ প্রকাশ বন্ধ করা হয়। সঙ্গে কোনও তথ্যের দরকার পড়লে যেন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
মানসী জানান, করোনা পরবর্তী সময়ে যে কোম্পানির থেকে ঋণ নিয়েছিলেন নীতীন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ছাড়ের অনুরোধ করেছিলেন। সময় চেয়েছিলেন, যাতে তারা তাকে পাওনা পরিশোধ শেষ করার সময় দেয়। কিন্তু সেই কোম্পানি ‘মিথ্যা প্রতিশ্রুতি’ দেয় ও প্রয়াত আর্ট ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করে।
মানসী সব শেষে মহারাষ্ট্র সরকারকে অনুরোধ করেন স্টুডিওর দায়িত্ব নেওয়ার। তাঁর কথায়, ‘আমি মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে এই বিষয়টি দেখার আবেদন করছি এবং তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী এনডি স্টুডিওর দায়িত্ব নেওয়ার অনুরোদও জানাচ্ছি। অনুগ্রহ করে তাঁকে বিচার দিন।’
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই ঋণ দেওয়া সংস্থা এডেলওয়েসিস অ্যাসেট রিকনস্ট্রাকশন কোম্পানি চেয়ারম্যান রাশেস শাহ, কেউর মেহেতা, স্মিথ শাহ, আরকে বনশাল এবং জিতেন্দ্র কোটরির বিরুদ্ধে খালাপুর পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ দায়ের করেছেন নীতীন দেশাইয়ের স্ত্রী নেহা দেশাই। সঙ্গে মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিসও বিধানসভায় নীতীন দেশাইয়ের মৃত্যুর নেপথ্যে ঋণদাতা সংস্থা এডেলওয়েসিস অ্যাসেট রিকনস্ট্রাকশন কোম্পানির ভূমিকা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন।