বাংলা নিউজ > বায়োস্কোপ > EXCLUSIVE: মাদক মামলায় ক্লিনচিট আরিয়ান খানকে, কোনও তথ্যপ্রমাণ পেল না বিশেষ তদন্তকারী দল

EXCLUSIVE: মাদক মামলায় ক্লিনচিট আরিয়ান খানকে, কোনও তথ্যপ্রমাণ পেল না বিশেষ তদন্তকারী দল

আরিয়ান খান 

মাদক মামলায় আরিয়ানের বিরুদ্ধে কোনও তথ্যপ্রমাণ পায়নি এনসিবির বিশেষ তদন্তকারী দল।

আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের অংশ হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল আরিয়ান খানের বিরুদ্ধে, তবে এই অভিযোগের স্বপক্ষে কোনওরকম তথ্যপ্রমাণ পেল না এনসিবির বিশেষ তদন্তকারী দল। বৃহত্তর কোনও ষড়যন্ত্র কিংবা আন্তর্জাতিক মাদক পাচারের সঙ্গে শাহরুখ পুত্রের যোগসাজশের কোনওরকম হদিশ পাওয়া যায়নি, পাশাপাশি এনসিবির যে রেইডে গত ২রা অক্টোবর কোর্ডেলিয়া ক্রুজ থেকে আটক করা হয়েছিল আরিয়ানকে সেটির মধ্যেও একাধিক অনিময়ের খোঁজ মিলেছে। অর্থাত্ সঠিক প্রোটোকল অনুসরণ করে ওই অভিযান চালানো হয়নি বলেই রিপোর্টে জানিয়েছে সিট (SIT), হিন্দুস্তান টাইমসকে এমনটাই জানাচ্ছে এনসিবি সূত্র। 

এনসিবির মুম্বই ইউনিটের তরফে যে অভিযোগ উঠেছিল তা কার্যত নস্যাত্ করে দিয়েছে এই বিশেষ তদন্তকারী দল। হিন্দুস্তান টাইমসের হাতে আসা তথ্য অনুসারে সিটের তরফে কার্যত ক্লিনচিট দেওয়া হয়েছে আরিয়ানকে। আরিয়ান খানের কাছে কোনও মাদক পাওয়া যায়নি, তাই তার ফোন বাজেয়াপ্ত করবার প্রয়োজন ছিল না, দরকার ছিল না তাঁর ব্যক্তিগত চ্যাট খতিয়ে দেখবার। সেই চ্যাটে এমন কিছুই নেই যা থেকে এটা প্রমাণ হয় আন্তর্জাতিক মাদকচক্রের সঙ্গে কোনওরকম সম্পর্ক রয়েছে আরিয়ানের। এনসিবির নিয়ম বলছে যে কোনও তল্লাশি চালানোর সময় ভিডিয়ো রেকর্ড করা বাধ্যতামূলক, সেই প্রোটোকলও মানা হয়নি সমীর ওয়াংখেড়ের নেতৃত্বাধীন ওই টিমের তরফে। এই মামলায় একাধিক ব্যক্তিদের থেকে উদ্ধার হওয়া মাদককে ব্যক্তিগত জিম্মায় থাকা ড্রাগ হিসাবেই রিপোর্টে জানানো হয়েছে। 

তবে এখনও সম্পূর্ণ হয়নি সিটের এই তদন্ত।  চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগে আরও মাস কয়েক সময় চায় তাঁরা, এরপরই এনসিবির ডিরেক্টর জেনারেল এসএন প্রধানের হাতে রিপোর্ট সঁপে দেবে তারা। চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার আগে সবরকম আইনি পরামর্শও নেওয়া হবে,যার মধ্যে অন্যতম বিষয় হবে ড্রাগ সেবনের জন্য আরিয়ান খানের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ আনা যাবে কিনা, কারণ তার সঙ্গে কোনওরকম ড্রাগ ছিল না, জানিয়েছে এই তদন্তের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অফিসার। 

সিটের এই তদন্ত থেকে যে সব তথ্য উঠে আসছে তাতে আরও প্রশ্ন উঠছে এজেন্সির মুম্বই জোনাল ইউনিটের প্রাক্তন ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়েকে নিয়ে।  এই মামলা নিয়ে একাধিকবার সিটের প্রশ্নের মুখে পড়েছেন ওয়াংখেড়ে, এনসিবির ভিজিল্যান্স টিমও তাঁকে প্রশ্ন করেছে। 

মুম্বই থেকে গোয়াগামী প্রমোদতরীতে ২রা অক্টোবরের বিকালে হানা দিয়েছিল এনসিবির যে দল তার নেতৃত্বে ছিলেন তত্কালীন এনসিবির মুম্বই ইউনিটের প্রধান সমীর ওয়াংখেড়ে। ওইদিন কোর্ডেলিয়া ক্রুজ থেকে মাত্র ১৩ গ্রাম কোকেন, পাঁচ গ্রাম মেফেড্রোন, ২১ গ্রাম মারিজুয়ানা এবং ২২টা MDMA ক্যাপসুল উদ্ধার হয়েছিল। পাশাপাশি ছিল ১.৩৩ লক্ষ টাকা নগদ। 

উল্লেখ্য গত ২৮শে অক্টোবর বম্বে হাইকোর্ট কোর্ডেলিয়া ক্রুজ মামলার জামিনের শুনানিতে যে সব পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছিল, সেই বিষয়গুলিই উঠে এসেছে সিটের প্রাথমিক তদন্তে। আরিয়ানের বিরুদ্ধে কোনওরকম ষড়যন্ত্রের প্রমাণ নেই, স্পষ্ট জানিয়েছে এনসিবির সূত্র। 

কোর্ডেলিয়া ক্রুজ মাদক মামলায় গাফিলতি বা অনিয়মের যে অভিযোগ রয়েছে সেটি পৃথকভাবে খতিয়ে দেখতে একটি ভিজিল্যান্স কমিটি। ২রা অক্টোবর প্রমোদতরী থেকে আটক করবার পর আরিয়ান খান ও আরিয়ানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আরবাজ মার্চেন্ট এবং মুনমুন ধামেচাকে দীর্ঘ সময় ধরে জেরা করে এনসিবি। পরদিন দুপুরে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁদের। এই মামলায় মোট ১৭ জনকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় মাদক নিয়ন্ত্রনকারী দল। 

আরিয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারীদের, এনসিবির এমন দলিল মানতে রাজি ছিল না বম্বে হাইকোর্ট। আরবাজ আদালতকে জানায় তাঁর কাছে ৬ গ্রাম মারিজুয়ানা ছিল সেটা তারা সেবন করত। আরিয়ান খানের নাম এই মামলায় জড়িয়ে পড়ায় শুরু থেকেই লাইমলাইটে উঠে আসে এই মাদক মামলা। পরবর্তী সময়ে এনসিবির এই সাক্ষী বেঁকে বসলে বিতর্ক দেখা দেয় এই মামলাকে ঘিরে। এনসিবির তত্কালীন মুম্বই চিফ সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে ২৫ কোটি টাকা তোলাবাজির অভিযোগ আনে প্রভাকর সেইল নামের ওই সাক্ষী। 

 

বন্ধ করুন