আশির দশকের শেষে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির পছন্দের জুটি ছিলেন প্রসেনজিৎ-দেবশ্রী। ছোটবেলার বন্ধু দুজনের, সেই বন্ধুত্বই ছাদনাতলায় গড়িয়েছিল ১৯৯২ সালে। তবে খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি এই সম্পর্ক। তিন বছর পরেই ভেঙে যায় প্রসেনজিৎ-দেবশ্রীর বিয়ে। এই বিচ্ছেদ নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি টলিপাড়ায়। এরপর কেটে গিয়েছে তিন দশক। প্রথম বিয়ে ভাঙার পর অপর্ণা গুহঠাকুরতাকে বিয়ে করেছিলেন প্রসেনজিৎ, তাঁদের মেয়ে প্রেরণা। সেই সম্পর্কেও প্রসেনজিৎ ইতি টানেন ২০০২ সালে। এখন অর্পিতাকে নিয়ে তাঁর সুখী গৃহকোণ। তাঁদের একমাত্র পুত্র তৃষাণজিৎ।
ছেলেবেলার বন্ধু বুম্বার সঙ্গে বিয়ে ভাঙার পর চুমকি কিন্তু আর বিয়ের পিঁড়িতে বসেননি। বরং নিজের অভিনয় কেরিয়ার, রাজনীতি, সোশ্যাল ওয়ার্ক- এইসব নিয়েই কেটেছে দেবশ্রী রায়ের জীবন। ছোটপর্দার ‘সর্বজয়া’ আপতত রাজনীতি থেকে দূরে, সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতে আজকাল উদ্যোগী দেবশ্রী রায়। সম্প্রতি এই সময়কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের কেরিয়ার থেকে বোনঝি রানির সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুলেছেন আশি ও নব্বইয়ের দশকে বাংলা ইন্ডাস্ট্রি কাঁপানো অভিনেত্রী। উঠে এসেছে ‘ইন্ডাস্ট্রি’ প্রসঙ্গও।
‘প্রথম স্ত্রী দেবশ্রীর সঙ্গে কথা বলে মিটমাট করতে চাই…', মাস কয়েক আগেই এমন কথা প্রকাশ্যে বলেছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। এর মাঝেই টলিপাড়ায় গুঞ্জন দেবশ্রীর কাছে নাকি ছবি করার প্রস্তাব গিয়েছে বুম্বাদার তরফে। এই প্রসঙ্গে অভিনেত্রীর কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল, ‘যে নায়ককে সারা বাংলা ইন্ডাস্ট্রি বলে চেনে, তাঁর কাছ থেকে আপনার কাছে ছবি করার প্রস্তাব এসেছিল?’ জবাবে দেবশ্রী সাফ জানান, ‘শুরুতে শুধরে দিই, একটা মানুষ ইন্ডাস্ট্রি হতে পারে না। বাংলা ছবির ইন্ডাস্ট্রি সবাইকে নিয়ে। আমি অভিনেত্রী, ভালো কাজ করতে চাই। আমার সহশিল্পী কে হবেন তা নিয়ে মাথাব্যাথা নেই। দেখা যাক কী হয়, এখন কিছু বলতে পারব না’। এরপর টলিগঞ্জের ‘চুমকি’র সংযোজন, ‘ইন্ডাস্ট্রি প্রসঙ্গে বলি, ইন্ডাস্ট্রি একজনই ছিলেন উত্তম কুমার’।
কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী মঞ্চে একফ্রেমে পাওয়া গেছে প্রসেনজিৎ এবং দেবশ্রীর বোনঝি রানি মুখোপাধ্যায়কে। কিন্তু সেখানে হাজির ছিলেন দেবশ্রী। কেন? তাঁর সাফ জবাব, ‘অনেক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাওয়া হয়ে গিয়েছে, থালি গার্লও হয়েছি। সত্যজিৎ রায়ের পাশে দাঁড়িয়েছি.. আর এ সবের দরকার নেই’। দিন কয়েক আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দেবশ্রী সাফ জানিয়েছিলেন, ‘যোগ্য সম্মান না পাওয়া'র জন্যই ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে হাজির হন না তিনি।
রানি শহরে এলেও দুজনের ব্যস্ত শেডিউলের ফাঁকে দেখা করা সম্ভবপর হয়নি, স্পষ্ট জানান দেবশ্রী। পাশাপাশি আদিরার জন্মদিনের পার্টিতে ডাক না পাওয়া নিয়েও মুখ খোলেননি তিনি। জানান, সেইসময় দেবশ্রীর মা মারা যাওয়ার জন্যই রানি বড় মুখ করে মাসিকে আমন্ত্রণ জানাননি মেয়ের জন্মদিনে। আগামিদিনে অভিনয়ের পাশাপাশি নিজের নাচের ট্রুপের উপর মন দিতে চান দেবশ্রী। তাঁদের নিয়ে নতুন একটা প্রোডাকশনের ইচ্ছে রয়েছে তাঁর।