শুক্রবার কবিগুরুর ১৫৯ তম জন্মবার্ষিকী। এইদিন কবি-প্রণামে মুখরিত থাকে গোটা বাংলা।কিন্তু এবছরের ছবিটা সম্পূর্ন আলাদা। এই বছর রবীন্দ্র-জয়ন্তী উত্সবেও মারণভাইরাস করোনা থাবা বসিয়েছে। অনান্যবার উপসনা মন্দিরে এইসময় রবীন্দ্রসঙ্গীতের গমগমে আওয়াজ ধ্বনিত হয়। কিন্তু আজ ছবিটা এক্কেবারেই আলাদা। করোনার জেরে বিশ্বভারতীতে বন্ধ রবীন্দ্র-জয়ন্তীর উত্সব! যদিও এই ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও মন্তব্য করেনি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
এদিন সকাল থেকেই উপাসনা মন্দিরের সামনের রাস্তায় অধিক সংখ্যক নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। যাতায়াতের উপর বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে,বলে সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, কোনও সাংস্কৃতিক আনুষ্ঠান না হলেও উপাচর্য সহ বেশ কয়েকজন আধিকারিক ক্যাম্পাসে গিয়ে রবীন্দ্রনাথের চেয়ারে মাল্যদান করবেন। নমঃ নমঃ করেই এবার কবি-প্রণাম সারবে বিশ্বভারতী। স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ পড়ুয়াদের। গোটা বছর ধরে এই দিনটার প্রতীক্ষায় থাকে তাঁরা। কত প্র্যাক্টিস,কত আয়োজন-করোনার জেরে সবই বিফলে।তাই মন ভারাক্রান্ত।
১৯১০ সালে রবীন্দ্রনাথের জীবদ্দশায় বিশ্বভারতীতে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করা শুরু হয়েছিল। পরের বছর বিশ্বকবির পঞ্চশতম জন্মবর্ষ ঘটা করে পালিত হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে। সেইসময় শান্তিনিকেতনে গ্রীষ্মের প্রচুর দাবদাহ থাকায়,রবীন্দ্রনাথ ঠিক করেছিলেন ২৫শে বৈশাখের পরিবর্তনে ১লা বৈশাখ রবীন্দ্র-জয়ন্তী পালন করা হবে। তারপর থেকে তেমনই রীতি ছিল সেখানে। যদিও সুজিত বসু উপাচার্য থাকাকালীন নিয়ম বদলায়। ১লা বৈশাখও অনুষ্ঠান হয় ঠিকই,কিন্তু ২৫ বৈশাখই ঘটা করে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করা শুরু হয়।
সত্যি, এবছর যেন এক অন্য ২৫ বৈশাখ।শান্তিনিকেতনে আনাচে-কানাচেতে আজ ধ্বনিত হচ্ছে না কবিগুরুর গান। চতুর্দিক খাঁ-খাঁ করেছে।করোনা ঘিরে সর্বত্রই সতর্কতা। আগামিবছর ছবিটা পাল্টাবে। ফের রবীন্দ্রনাথযাপন সম্ভব হবে বড় পরিসরে আশা তেমনটাই। আজ না হয় ফাঁকাই থাক উদয়ণ গৃহ, উপাসনা মন্দির,ছাতিমতলা। ঘরে বসেই রবীন্দ্র-অনুরাগীরা স্মরণ করবে তাঁদের প্রাণের রবিকে।