ভারতের প্রথম কোটিপতি গায়ক কিন্তু লতা মঙ্গেশকর বা মহম্মদ রফি ছিলেন না। তাঁদের থেকে বহু সময় আগে তিনি কাজ করেছেন। কিন্তু হলে কী হবে, উক্ত দুই অভিনেতার থেকেও বেশি পারিশ্রমিক নিতেন তিনি। কে ভারতের প্রথম কোটিপতি গায়িকা জানেন? গওহর খান। যাঁকে দ্য গ্রামোফোন গার্লও বলা হতো।
আরও পড়ুন: ঢেউয়ে চেয়ার উল্টে গেছিল, সেটা তোলার পর দেখা গেল তার নিচে কাঞ্চনদা: সুহোত্র
কে এই গওহর খান?
একটি আর্মেনিয়ান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন গওহর খান। তাঁর প্রথম জীবনের নাম ছিল অ্যাঞ্জেলিনা ইয়োওয়ার্ড। পরবর্তীতে ১৮৭৯ সালে যখন তাঁর বাবা মায়ের বিচ্ছেদ হয় গওহর খানের বয়স তখন ৬। এরপর তাঁর মা ভিক্টোরিয়া একজন মুসলিম ব্যক্তিকে বিয়ে করেন। বদলান নাম। হয়ে ওঠেন মালকাজান। আর অ্যাঞ্জেলিনা হন গওহর। অল্প সময়েই গওহর খানের মা গানে জগতে নাম করেন। কলকাতায় আসেন। কেনেন নিজের কোঠি। সেখানেই গানের শিক্ষা লাভ করেন গওহর খান। ১৮৮৮ সালে প্রথমবার পারফর্ম করেন তিনি। দ্বারভাঙা রাজের রাজসভায় তাঁকে নিয়োগ করা হয় সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে। পরে টি কলকাতায় পারফর্ম করা শুরু করেন ১৮৯৬ সালের দিকে।
১৯০০ এর গোড়ার দিকে তিনি এক একটি গান এবং ক্লাসিক্যাল আবৃত্তি পাঠ করতে ১০০০ থেকে ৩০০০ টাকা নিতেন প্রতি রেকর্ডিং। পরবর্তীতে যখন লতা মঙ্গেশকর বা মহম্মদ রফি গান গাওয়া শুরু করেন তাঁরা ১৯৫০ এর দিকে ৫০০ টাকা করে পারিশ্রমিক নিতেন যা অনেকটাই কম গওহর খানের তুলনায়।
বেঙ্গালুরু মিররের তরফে একটি রিপোর্টে জানানো হয় একটা সময় তিনি এতটাই বিত্তশালী হয়ে যান যে তিনি ঘোড়ায় টানা গাড়ি করে গোটা শহর ঘুরতেন যা সেই সময় খালি ভারতের ভাইসরয় করতে পারতেন। ১০০০ টাকা জরিমানা পর্যন্ত দিয়েছেন এটার জন্য। এমনকি তাঁর নিজস্ব একটা ট্রেন ছিল যাতে করে তিনি গোটা ভারত ঘুরে বেড়াতেন। ১৯১১ সালের মধ্যে তিনি কোটিপতি হয়ে যান রাজবংশের সদস্য না হয়েও।
১৯৩০ সালে মাত্র ৫৬ বছর বয়সে প্রয়াত হন গওহর খান। মাইসোরে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। শেষ জীবনে অবসাদে ভুগতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে জানা যায় তিনি তাঁর গোটা জীবন ধরে যত যা উপার্জন করেছিলেন, জমিয়েছিলেন তিনি বেঁচে থাকতেই সব খরচ করে যান। মারা যাওয়ার পর সেই অর্থে তাঁর আর কোনও সম্পদ বা সম্পত্তি ছিল না।