দু'দিন আগেই ধর্মতলায় জুনিয়র ডক্তারদের অনশনকে 'অরাজনৈতিক' বলে জানিয়েছিলেন আন্দোলনের অন্যতম মুখ কিঞ্জল নন্দ। আর এরপরই ডাক্তার-অভিনেতা কিঞ্জলের এমন মন্তব্যে একটু হলেও বিরক্ত হয়েছেন বলে জানান শ্রীলেখা মিত্র। যিনি কিনা শুরু থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে সমর্থন করে এসেছেন, হঠাৎ সেই শ্রীলেখাই কিঞ্জলের 'অরাজনৈতিক আন্দোলন' মন্তব্যে সহমত হতে পারেননি।
বিরক্ত শ্রীলেখা নিজের ফেসবুকের পাতায় লেখেন, ‘কালকে ধর্মতলায় আন্দোলন ও প্রেস মিটের সময় ভিড়ের পিছনে দাঁড়িয়ে ছিলাম বিশ্বাস করুন ছাই না করুন। সেটা কথা নয়, কিঞ্জল নন্দ সহ এমডি সেলিম এবং অনশনকারী ডাক্তারদের বক্তব্য শুনলাম, আসল কথায় ফিরি- কিঞ্জলের এখনও ওই অরাজনৈতিক বিষয়টা কানে লাগলো… খানিক অবাক হলাম, হালকা বিরক্ত হলাম… এখনও? কোনও আন্দোলন অরাজনৈতিক হয় কি? কে জানে কম বুঝি আজকাল হয়ত। কারুর সংগ্রামকে অপমান করছি ভেবে বসবেন না যেন!’
আর এবার নাম না করে শ্রীলেখার এই পোস্টেরই কি জবাব দিলেন ডাক্তারদের আন্দোলনের অন্যতম মুখ কিঞ্জল নন্দা? ঠিক কী বলেছেন তিনি?
কিঞ্জল নন্দ ফেসবুকের পাতায় লেখেন, ‘৯/৮/২৪, সেই জঘন্য, ঘৃণ্য অপরাধের দিনে, ঘটনাটির ধাক্কা সামলানোর আগেই আওয়াজ তুলেছিলাম আমরা সবাই। প্রত্যেকটি মানুষের কোন না কোন রাজনৈতিক মতাদর্শ আছে। থাকবেই। কিন্তু সেদিন আমরা যে সকল ডাক্তাররা অন্যায়ের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেছিলাম তাদের মুল লক্ষ্য একটাই ছিল.. ন্যায় বিচার। সেদিন সেখানে প্রত্যেকটি মানুষ নিজেদের দলীয় রঙকে বাইরে রেখে এক হয়ে আওয়াজ তুলেছিলেন। এরপর আমাদের আন্দোলন জনসাধারণের আন্দোলন হয়ে ওঠে। সেখানে সেই বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষের একটাই রঙ ছিল … সত্য। যে সকল মানুষ যাঁরা নিজেদের রাজনৈতিক দলমত নির্বিশেষে শুধুমাত্র সেই সত্যের লড়াইয়ে সামিল হতে এসেছেন তাঁদের আমরা সসম্মানে আহ্বান জানিয়েছি। কিন্তু যাঁরা দলীয় রাজনীতি করতে চেয়েছেন WBJDF এর আন্দোলন নিয়ে তাঁদের প্রথম দিন থেকেই বাঁধা দিয়েছি আমরা, এর পরেও দেব। আন্দোলন করা প্রত্যেকের অধিকার। রাজনৈতিক দলেরও। কিন্তু তাঁদের আন্দোলন তাঁদের মত হোক। আন্দোলনের অধিকার যেমন শুধুমাত্র WBJDF এর না, তেমন আন্দোলনের দায়ও শুধুমাত্র আমাদের না। আমরা সবাই ডাক্তার, রাজনীতিবিদ নই। যেখানে আমার ভাই বোনেরা মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে, তাদের জীবন নিয়ে প্রতি মুহূর্তে সংশয়, সেখানে আমরা প্রত্যেকে আবেগগত দুশ্চিন্তায়। সেখানে সবাইকে পাশে চাইছি। রাজনীতি চাইছি না।’
কিঞ্জল সবশেষে লেখেন, ‘আমার কোনো কথা যদি কাউকে আঘাত দিয়ে থাকে, আমি ক্ষমাপ্রার্থী। Social media তে এতদিন এক দল আক্রমণ করেছে, এখন আর এক দল করছে, বাকিরাও বাদ রাখবেন কেন? কিন্তু তাতে আন্দোলন থামবে না। আন্দোলন অরাজনৈতিক ও অদলীয়ই থাকবে আর তীব্র থেকে তীব্রতর হবে কারণ জনসাধারণ এর জোর কতটা সেটা এই আন্দোলন বুঝিয়ে দিয়েছে।’
এদিকে কিঞ্জল নন্দর এই পোস্টে লাইক করেছেন সুদীপ্তা চক্রবর্তী সহ আরও অনেকেই।