বলিউডের ফিল্মি পরিবারে জন্ম তাঁর। শুধু ফিল্মি পরিবার বরং, বলিউডের ফার্স্ট ফ্যামিলি- কাপুর খানদানের চিরাগ শাম্মি কাপুর পুত্র আদিত্য রাজ কাপুর। অথচ বলিউড অভিষেকের আগেই আচমকা সন্ন্যাস, বেঁকে বসেন আদিত্য- ছেড়ে চলে যান গ্ল্যামার দুনিয়াকে। সেই কারণ এতদিন গোপনেই ছিল অবশেষে নিজের জীবনে ঘটা ঘটনার ঘনঘটা নিয়ে মুখ খুললেন তিনি।
শাম্মি কাপুর পুত্র জানান তাঁর গোটা দুনিয়াকে ওলোট-পালোট করে দিয়েছিল মা- অভিনেত্রী গীতা বালির মৃত্যু। এই ঘটনায় তিনি ভীষণরকমভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং সিদ্ধান্ত কেন কোনওভাবেই অভিনয় জগতে তিনি পা রাখবেন না। সেই সময় কাপুর পরিবারের হোম প্রোডাকশন আরকে ব্যানারের আওতায় একটি ছবিতে লিড রোলে কাজ করার কথা ছিল তাঁর।
তিনি বলেন- আমার বয়স তখন সবে ১৭, আমি কোনও কারণ ছাড়াই হয়ত বিদ্রোহী ছিলাম, তার উপর ছবিতে ডেব্যিউ করতে যাচ্ছিলাম। তারপর আমি একজন ধর্মগুরুর সান্নিধ্যে আসি এবং আমার জীবন পালটে যায়। উনি আমায় বলেন-ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে দাও'।
আদিত্য যোগ করেন, সেটা ওই সময় যখন আরকে ব্যানারের আওতায় ববির মাধ্যমে ঋষিকে (কাপুর) লঞ্চ করার পর আমাকে লঞ্চ করার পাকা কথা হয়ে গিয়েছে। আমি সেইসময় রাজ সাহাবের সহযোগী পরিচালক হিসাবে কাজ করছি, স্বপ্ন ছিল পরিচালক হব। আমার বাবা বারংবার আমার সিদ্ধান্ত বদলের চেষ্টা করেছিলেন, তবে আমি অনড় ছিলাম নিজের সিদ্ধান্তে। এরপর ২৫ বছর ধরে আমি সিনেমার দিকে ফিরেও তাকাইনি। একদম বন্ধ করে দিয়েছিলাম ছবি দেখা। তবে ফিরে আসার নেশা কোনওদিনই পিছু ছাড়েনি। আমার গুরুজির মৃত্যুর পরেও আমি ছবি দেখিনি কখনও, তবে দুবাইতে চলে যাওয়ার পর আমি ছবির জগতে ফিরি'।
৫২ বছর বয়সে মু্ম্বই ফেরেন আদিত্য। সেই সময় ফের একবার বাবা শাম্মি কাপুরের জোরাজুরিতে মন বদলায় তাঁর। এবং ছবির জগতে পুনরায় ফিরে আসেন আদিত্য। স্পটবয়ই'কে তিনি বলেন- ‘অবশেষে ৫২ বছর বয়সে আমি অভিনেতা হলাম। আমার ৭৬ বছর বয়সী বাবা আমার ছবির প্রতিটা ফ্রেম মন দিয়ে দেখেছেন, কারণ উনি আমার গাইড, মেন্টর। আজ উনি নেই তবে আমি গর্বিত যে উনি আমার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন, আমি যা করতে চেয়েছি উনি সেটা সমর্থন করেছেন- আমার পাশে থেকেছেন। আমার সন্তানদের সঙ্গেও আমি সেটাই বজায় রাখার চেষ্টা করি- এটাই বোধহয় জীবনের বৃত্ত’।
দিওয়ানগি নে হদ কর দি (২০১০), ইসি লাইফ মে (২০১০), সে ইয়েস টু লাভ (২০১২), ইমলা পাগলা দিওয়ানা ২ (২০১১)-এর মতো বেশ কিছু হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন আদিত্য। আশুতোষ গোয়ারিয়ারের সিরিজ এভারেস্টেও দেখা মিলেছে তাঁর।