৫ই জানুয়ারি খাতায়-কলমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন। নথি বলছে, ১৯৫৫ সালের এই দিনে জন্মেছিলেন বাংলার ‘দিদি’। যদিও আজ তাঁর আসল জন্মদিন নয়, দুর্গাষ্টমীর দিন জন্ম তাঁর। ৫ই অক্টোবর, সে কথা নিজের মুখে দিদি নম্বর ১-এ এসে খোলসা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও সাল জানাননি।
এদিন অফিসিয়্যালি ৭০-এ পা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গত বছর মমতার হাত ধরে রাজনীতির ময়দানে নেমেছেন বাংলার আরেক দিদি, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা তাঁর উপর যে ভরসা দেখিয়েছিলেন, তাঁর মান রেখেছেন 'দিদি নম্বর ১' রচনা। এখন তিনি হুগলির জয়ী সাংসদ। মমতার অফিসিয়্যাল জন্মদিনে ‘দিদি’র জন্য মনের ঝাঁপি খুলেছেন রচনা। ব্যক্তি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন তারকা সাংসদ। আনন্দবাজার অনলাইনকে রচনা জানান, মমতা তাঁকে কেন এত স্নেহ করেন, সেই কারণ তিনি নিজেও জানেন না। তবে নেত্রীর বাইরে ‘দিদি’র সত্ত্বাটাই আসল। রচনা জানান, ‘প্রয়োজনে সরাসরি ওঁর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা যায়। দিদি কিন্তু সারা ক্ষণ হোয়াটসঅ্যাপে নজর রাখেন। নিজে জবাব দেন। নির্দেশ দেন।’
মমতাকে ঘিরে হাজারো সমালোচনা, কটাক্ষ- কোনওটাই নজর এড়ায় না দিদির। রাতে বাড়ি ফিরে সারাদিন তাঁকে নিয়ে কে কী বলেছেন, নজর বুলিয়ে নেন মমতা। নিজেই জানিয়েছেন সেই কথা। রচনা জানান ট্রোলিং-কটাক্ষ সমালানোর জাদুমন্ত্র দিদির কাছেই শেখা। তিনি বললেন, ‘দিদি জানেন দিদি কী। তাই হাজার কটাক্ষেও কোনও প্রতিক্রিয়া জানান না। জানানোর প্রয়োজন বোধ করেন না। আমরাও ওঁকে দেখে শিখছি’।
গত কয়েক মাসে রাজ্য-রাজনীতি তোলপাড় হয়েছে আরজি কর কাণ্ডের জেরে। গত অগস্ট মাসে শহরের আর জি কর হাসপাতালে কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসকদের খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় বারংবার বিরোধী থেকে সাধারণ মানুষ কাঠগড়ায় তুলেছেন মমতা-সরকারকে। রচনা জানান ব্যক্তিগত মহলে আরজি করের ঘটনায় ভেঙে পড়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রচনা জানান, ‘শহরে ঘটে যাওয়া আরজি কর-কাণ্ডের মতো ঘটনাতেও মুখ্যমন্ত্রী অবিচল। আমাদের সঙ্গে আলোচনার সময় দিদি কিন্তু ভেঙে পড়েছেন। তিনি নিজে এক জন মহিলা। অন্য নারীর সঙ্গে অন্যায় ঘটলে কী করে মেনে নেবেন?’

রচনা ওই সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছিলেন রাজ্য পুলিশ এই মামলার তদন্ত করুক, কিন্তু সিবিআইয়ের হস্তক্ষেপেও কোনও বাধা দেননি। মৃতার পরিবারকে সুবিচার পাইয়ে দেওয়াই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য। রচনা মনে করান, বাংলায় এইরকম ভয়ঙ্কর ঘটনা অন্য মুখ্যমন্ত্রীদের আমলেও ঘটেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেইসময়ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন, আজও জানাচ্ছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শত ব্যস্ততার ফাঁকেও নিজের পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসেন, শিকড়ের সঙ্গে আজও জুড়ে আছেন তিনি। তাঁর যা মনে, তাই মুখে। রচনার কথায়, প্রয়োজনে সহকর্মীদের বকতেও পিছপা হননি তিনি। যদিও স্বস্তির কথা রচনা এখন ওঁনার কাছে বকা খাননি।