১ জুন ছিল মহীনের ঘোড়াগুলির অন্যতম পিলার গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিন। তাঁর এই বিশেষ দিনে কী এই ব্যান্ডের বিষয়ে একাধিক তথ্য প্রকাশ্যে আনলেন গায়ক অভিষেক চক্রবর্তী। তিনি জানালেন আমরা, শ্রোতারা এমনকি অনেক গায়করা যে পরিচিত গানগুলোকে মহীনের ঘোড়াগুলির গান বলে জানেন সেগুলো আদতেই এই ব্যান্ডের গান নয়।
আরও পড়ুন: 'খেলা হবে নাকি হয়ে গেছে সেটা তো...' অনীক দত্তকে হত্যার হুমকি প্রসঙ্গে মত কাঞ্চনের
গৌতম চট্টোপাধ্যায় এবং মহীনের ঘোড়াগুলি নিয়ে কী লিখলেন অভিষেক?
এদিন অভিষেক লেখেন, 'গতকাল গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিন ছিল। সবাই ওঁর গান গেয়েছেন, ছবি দিয়েছেন, ওঁর জীবনের নানান দিক নিয়ে লিখেছেন। খুব ভালো লাগছিল। তবে যেহেতু ওঁকে আমরা ডিজিটাল এজ অবধি পাইনি, ওঁর সম্পর্কিত অনেক ভুল তথ্য সারা বছর ধরে ইন্টারনেটে ঘুরে বেড়ায়। এই ভুল তথ্যের উৎস নিয়ে আলোচনায় গেলে অনেক কথা বলতে হয়। প্রথমত অ্যালবাম ইনলেতে যথাযত ক্রেডিট না দেওয়া থেকে এর উৎপত্তি। সেসবের মধ্যে না গিয়ে কয়েকটা কথা বলি যারা জানেন না তাদের উদ্যেশ্যে। আমি নিশ্চিত উনি বেঁচে থাকলে উনি এর তীব্র বিরোধিতা করতেন। ১৯৯৫ সাল থেকে যে পাঁচটা অ্যালবাম বার হয়, সেগুলো মহীনের ঘোড়াগুলির অ্যালবাম নয়, মহীনের ঘোড়াগুলি সম্পাদিত গানের অ্যালবাম, অর্থাৎ মহীনের ঘোড়াগুলির সদস্যরা সেই সময়ের (অথবা তার আগে) নানান শিল্পীর (অথবা দলের) তৈরি করা কিছু নির্বাচিত মৌলিক গানকে এক জায়গায় করে, বলা যায় কিউরেট করে সেগুলো রেকর্ড করার ব্যবস্থা করেন। সেখানে গড়ের মাঠের গান আছে, অরুণেন্দু দাসের গান আছে, সুরজিৎ চ্যাটার্জীর গান আছে, দিব্য মুখোপাধ্যায়ের গান আছে, দেবজ্যোতি মিশ্রর গান আছে, নীল মুখার্জির গান আছে, অর্ণব চট্টোপাধ্যায়ের গান আছে, তাপস দাসের গান আছে এবং আরও অনেক শিল্পীর গান আছে। তার মধ্যে আছে মহীনের ঘোড়াগুলিরও কিছু গান।
অর্থাৎ, মহীনের ঘোড়াগুলি সম্পাদিত ৪ টে album এ আপনারা যে গানগুলো শোনেন, সেগুলো সবকটা মহীনের ঘোড়াগুলির গান নয়। সাধারণ মানুষ তো বটেই, আমি অনেক মিউজিসিয়ান কেও এই ভুল করতে দেখেছি'
তিনি আরও লেখেন, 'টেলিফোন, পৃথিবী ইত্যাদি মহীনের ঘোড়াগুলোর গান নয়। ওগুলো গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের গান। কারণ আরও অন্যান্য গানের মতো এই গানগুলো উনি লেখেন ৭০ এর দশকে মহীনের ঘোড়াগুলি ভেঙে যাওয়ার অনেক পরে। ১৯৯৫ সালে মহীনের ঘোড়াগুলি তৈরি হওয়ার ২০ বছর পরে বইমেলার এ মুখার্জি স্টল থেকে মুক্তি পায় মহীনের ঘোড়াগুলি সম্পাদিত গানের প্রথম অ্যালবাম আবার বছর কুড়ি পরে। তার পরের অ্যালবামের নামগুলো দিলাম: আবার বছর কুড়ি পরে: ১৯৯৫, ঝরা সময়ের গান: ১৯৯৬, মায়া: ১৯৯৭, ক্ষ্যাপার গান: ১৯৯৯। আপনারা উইকিপিডিয়া খুঁজলে এই গানগুলো কার লেখা, কার সুর করা, কার গাওয়া, সমস্ত ক্রেডিট পেয়ে যাবেন। শিল্পীদের বলছি, এই সমস্ত গানগুলো নিয়ে কাজ পাবলিশ করার আগে দয়া করে দেখে নেবেন' অভিষেক আরও ব্যাখ্যা করে লেখেন, 'ওঁর সাথে আলাপ হওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়নি। তবে পরবর্তীকালে আমার সাথে এমন বহু মানুষের সাথে আলাপ হয়েছে যাঁরা ওঁর কাজের সাথে, সম্পাদিত অ্যালবামর সাথে ভীষণভাবে যুক্ত ছিলেন। তাঁদের থেকে অবাক হয়ে বহু গল্প শুনেছি। ওঁর নাকতলার বাড়ির বসার ঘরটায় গিয়ে বারবার খেই হারিয়ে ফেলেছি। মনে আছে একবার গাবুদাকে বলেছিলাম তুমি এরকম একটা ঘরে থাকো, তোমার অস্বস্তি হয়না গাবুদা? এটা যে বাংলা মৌলিক গানের, ব্যান্ড মুভমেন্টের মিউজিয়াম!'
কে কী বলছেন?
এক ব্যক্তি লেখেন, 'অনেক কিছু জানতে পারলাম। কালকেই সুরজিত চট্টোপাধ্যায়ের একটা ভিডিও দেখছিলাম, সেখানেও অনেক কিছু জানলাম।' দ্বিতীয় ব্যক্তি লেখেন 'উফফ। এটা কিন্তু তুমি ভীষনরকম অজানা তথ্য দিলে। যা আমাদের মতন মানুষদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।' তৃতীয় ব্যক্তি লেখেন, 'তোমার থেকে অনেক বার এই ইনফরমেশন গুলো পেয়েছি।'