দীর্ঘদিন রোগের সঙ্গে লড়াই করে হার মানলেন সমরেশ মজুমদার (Samaresh Majumder)। তাঁর অনন্য সৃষ্টিদের বাঙালির কাছে, বাঙালির জন্য রেখে পাড়ি দিলেন অনন্তলোকে। তাঁর মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee) থেকে সৃজিত মুখোপাধ্যায় (Srijit Mukherji), শ্রীলেখা মিত্র (Sreelekha Mitra)। দুঃখপ্রকাশ করে পোস্ট করলেন ইমন চক্রবর্তী (Iman Chakraborty), সঙ্গীতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সমরেশ মজুমদারের লেখা ‘দৌড়’ বইটির প্রচ্ছদ এবং ভিতরের পাতার একটি ছবি পোস্ট করে প্রয়াত লেখকের উদ্দেশ্যে শোকজ্ঞাপন করেন লেখিকা সঙ্গীতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লেখেন, 'দৌড় শেষ'। একই ভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমরেশ মজুমদারকে নিয়ে পোস্ট করলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। লিখলেন, 'সাহিত্য জগতে নক্ষত্রপতন। ছেলেরবেলার স্মৃতির ছন্দপতন ঘটল। আপনার কথাই আজ আপনার জন্য ধার নিলাম। ছাইটা হল স্মৃতি, আগুনটা হল বর্তমান। আপনি থাকবেন আপনার সকল কালজয়ী সৃষ্টিতে এবং আমাদের সকলের স্মৃতিতে।'
শ্রীলেখা মিত্র লেখেন, 'সমরেশ কাকু আমার বালিকাবেলার প্রেম তোমার কালবেলা।' পরিচালক প্রেমেন্দু বিকাশ চাকী তাঁর একটি ছবি শেয়ার করে লেখেন, 'ভালো থাকবেন স্যার।' সৃজিতের পোস্টেও উঠে এল সমরেশের তৈরি করে যাওয়া চরিত্রদের কথা। তিনি তাঁর পোস্টে লেখেন, 'প্রেম বলতে এখনও অনিমেষ মাধবীলতা বুঝি। বিপ্লব বলতেও। ভালো থাকবেন।'
শোকজ্ঞাপন করেছেন অভিনেতা জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, ইমন চক্রবর্তী। যতই আজকাল পিডিএফের যুগ আসুক আজও বাঙালির ঘরে ঘরে দুই মলাটের মাঝে কালবেলা থেকে কালপুরুষ, উত্তরাধিকার, গর্ভধারিনী রয়ে গেছে। আজও বইমেলায় গেলে শোনা যায় 'সমরেশ মজুমদারের অমুক বইটা হবে দাদা?' অনিমেষ মাধবীলতা থেকে জয়িতা, সমরেশ বারংবার তাঁর চরিত্রদের মধ্যে দিয়ে বাঙালিকে চেনা ছক ভাঙতে শিখিয়েছেন, বিপ্লবের বীজ মন্ত্র অজান্তেই বপন করেছেন। শিখিয়েছেন ভালোবাসা আর বিপ্লব সমার্থক। তাই তো তাঁর সৃষ্ট চরিত্ররা বাংলার, বাঙালির এতটা আপন।
৮ মে বিকেল ৫টা ৪৫ নাগাদ অ্যাপোলো হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। দীর্ঘদিন লড়াই করছিলেন রোগের সঙ্গে। এই পাহাড় প্রেমী মানুষটার পাহাড়েই জন্ম হয়েছিল ১৯৪৪ সালের ১০ মার্চ। তাঁর ঝুলিতে আছে আনন্দ পুরস্কার, সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, ইত্যাদি। তাঁর তৈরি অন্যান্য বইয়ের মধ্যে অবশ্যই উল্লেখযোগ্য তেরো পার্বণ, সাতকাহন, ইত্যাদি। তিনি তৈরি করেছিলেন অর্জুনের মতো গোয়েন্দা চরিত্রকে।