একবার ট্রেনের এক কামরার মধ্যে প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেতা-পরিচালক রাজ কাপুরের বুকের উপর চেপে বসে তাঁকে আটকে রেখেছিলেন ওয়াহিদা রহমান! এ কথা আর কেউ নয় খোদ ওয়াহিদা জানিয়েছেন নাসরিন মুন্নি কবীরের লেখা 'কনভারসেশন
উইথ ওয়াহিদা রহমান' বইতে। সেই বইতে ওয়াহিদা ফাঁস করেছেন 'তিসরি কসম' (১৯৬৬) ছবির শ্যুটিং শেষে ট্রেনে চেপে বিনা থেকে মুম্বইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন তাঁরা। সেই সময়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে এক দল ছাত্র ভিড় করেছিল তাঁদের দেখবে বলে। তাঁদের সেই প্রস্তাব শোনামাত্রই দৃঢ়ভাবে 'না' বলেছিলেন রাজ কাপুর। রাজ্যের মুখে 'না' শোনার পর এরপর পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করে। ক্ষেপে ওঠে ছাত্রের দল। তাঁদের কামরার উদ্দেশ্যে শুরু হয় পাথর ছোড়া। এসব দেখে রেগে অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠেন রাজ। পরিস্থিতি সামলাতে রাজের উপর চেপে বসেন ওয়াহিদা যাতে ট্রেনের বাইরে বেরিয়ে বড় কোনও বিপদ না ঘটিয়ে ফেলেন তিনি!
দ্য টেলিগ্রাফ-এ প্রকাশিত ওই বইয়ের একটি অংশে এ প্রসঙ্গে ওয়াহিদা জানিয়েছেন, সেই সময়ে ওই ছাত্রের দল বারবার তাঁকে দেখবে বলে দাবি করে বসেন। তারা বলতে থাকে 'তিসরি কসম' এর শ্যুটিং দেখার জন্য শ্যুটিং স্পটে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ছবির প্রোডাকশন টিম তাঁদের মিথ্যা কথা বলে অন্য জায়গার কথা বলে। সেখানে গিয়ে বেকুব হয়েছেন। তাই এখানেই তারা ওয়াহিদাকে দেখতে চায়। কিন্তু রাজজি ওদের বলেন আমাকে দেখেছএই যথেষ্ট। সেই শুনে আরও খেপে যায় ওরা। বলতে থাকে, 'আমরা ওয়াহিদাজির ফ্যান। কেন উনি ওঁর ভক্তদের সামনে আসবেন না? ওঁকে দেখা দিতেই হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।' এসব শুনেটুনে কামরার দরজা জানলা সব বন্ধ করে দিলেন উনি। ফল হল ভয়ানক। হল্লা তো বাড়লই সঙ্গে পাথর ছোড়া শুরু হল আমাদের কামরার উদ্দেশ্যে।
এরপর ওয়াহিদা আরও জানিয়েছেন, 'ক্ষেপে গিয়ে প্ল্যাটফর্মে নেমে ওই ছাত্রদের একহাত নিতে উদ্যত হয়েছিলেন রাজ। সেটি হলে যে বিরাট বিপদের সৃষ্টি হতো তা বুঝেছিলাম। তাই রাজজিকে থামাতে আমি এবং আমার বোন ও আপ্ত-সহায়ক ওঁকে চেপে ধরে রেখেছিলাম সিটের সঙ্গে। আমি তো রীতিমতো ওঁর বুকের উপর চেপে বসেছিলাম। আর রাজ কাপুর তখন রেগে টম্যাটোর মতো লাল হয়ে গিয়েছেন। সমানে চিৎকার করে বলে চলেছেন যেন ওঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। গোটা ব্যাপারটাই হয়ত বড্ড নাটুকে মনে হতে পারে কিংবা বলা ভালো মজার।