পাঠান নিয়ে বিতর্ক যেন থামার নামই নিচ্ছে না, বিশেষ করে যখন থেকে সিনেমার ‘বেশরম রং’ গানটি সামনে এসেছে। সেখানে দীপিকা পাড়ুকোনের গেরুয়া বিকিনি, শাহরুখের সবুজ জামা, গানের নাম ‘বেশরমং রং’, ছবির নাম ‘পাঠান’-- সবই এখন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। হিন্দু ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে এই সিনেমা বয়কট করার ডাক দিচ্ছে নেটপাড়ার একাংশ।
বৃহস্পতিবার জানা গিয়েছে সিবিএফসি-র তরফে পাঠান সিনেমায় ও গানে বেশ কিছু বদল আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবং সিনেমা মুক্তি পাওয়ার আগে এই সংশোধিত সংস্করণ জমা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এবার এই নিয়েই মুখ খুললেন সিবিএফসি-র প্রাক্তন চেয়ারপার্সন পহেলাজ নিহালানি। যেখানে তিনি শাহরুখ-দীপিকার সিনেমাকে ‘বিতর্কের শিকার’ বললেন এবং জানালেন সিবিএফসি কেন্দ্রের চাপেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
পহেলাজ নিহালানিকে স্মৃতি হাতড়ে বলতে শোনা যায়, মুক্তির আগে সঞ্জয় লীলা বানসালির পদ্মাবত (২০১৮) এবং সালমান খানের বজরঙ্গি ভাইজান (২০১৫)-ও বয়কট ডাকের মুখোমুখি হয়েছিল। পাহেলাজ ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সিবিএফসি চেয়ারম্যান ছিলেন। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে চলচ্চিত্র 'রিলিজের' আগে সিবিএফসি মন্ত্রকের কাছ থেকে সিবিএফসি-র চিঠি পাওয়ার কথাও বললেন।
শাহরুখের পাঠান-প্রসঙ্গে পহেলাজকে বলতে শোনা গেল, ‘এমন কোনও নির্দেশিকা নেই যা বলে যে একটি রঙকে কাটা দরকার। অশ্লীলতা থাকলে আপনি পরিবর্তনের পরামর্শ দিতে পারেন। কিন্তু যদি তারা রঙের কারণে কাটার জন্য বলে, তাহলে তা হবে ভুল প্রক্রিয়া। মন্ত্রণালয় থেকে চাপ আসতে পারে... পাঠান বিতর্কের শিকার। সিবিএফসিকে অবশ্যই গেরুয়া রঙের এই অংশটি মুছে ফেলার জন্য মন্ত্রকের কাছ থেকে চাপ দেওয়া হয়েছিল। অন্যথায়, তারা ট্রেলারের সময়তেই পোশাকের ওই শট মুছে দেওয়ার কথা বলতেন।’ আরও পড়ুন: নগ্ন রণবীর থেকে সুস্মিতা-ললিতের প্রেম, ২০২২-এ চমক লাগিয়েছিল বলিউড যা যা কারণে
আরও বলেন, ‘কী কাট এবং পরিবর্তন প্রয়োজন তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার কমিটির। তাদের সংশোধিত সংস্করণ দেখতে হবে। প্রসূন যোশি হয়তো একটি বিবৃতি দিয়েছেন কিন্তু পরীক্ষক কমিটির সঙ্গে পাঠান দেখার অধিকার তার নেই। গেরুয়া রঙের কারণে চলচ্চিত্রটি মনোযোগ সহকারে দেখার জন্য তিনি অবশ্যই মন্ত্রণালয় থেকে চাপ পেয়েছিলেন। যদি তারা রঙের কারণে কাটার পরামর্শ দেয় তবে এটি একটি ভুল প্রক্রিয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ২৫ জানুয়ারি মুক্তি পেতে চলা পাঠান প্রসঙ্গে প্রসূন জোশি বলেছিলেন, ‘পাঠান নিয়ে ওঠা সমস্ত প্রশ্ন পাশে রেখে, সিনেমাটা দিনকয়েক আগে সিবিএফসি-র কাছে এসেছিল সার্টিফিকেশনের জন্য়। এবং গাইডলাইন অনুসারে খতিয়ে দেখা হয়েছে। কমিটির তরফে নির্মাতাদের কাছে নির্দেশ গিয়েছে সিনেমা ও গানে কিছু বদল করার। এবং প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়ার আগে সেই সংশোধিত সংস্করণ জমা করার। …যদিও প্রক্রিয়াটি যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে এবং বাস্তবায়িত হচ্ছে, আমি তাও মনে করিয়ে দিতে চাই যে আমাদের সংস্কৃতি এবং বিশ্বাস গৌরবময়। এবং আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যে এটি তুচ্ছ বিষয় দ্বারা নষ্ট না হয় বা বাস্তব থেকে ফোকাসকে দূরে নিয়ে না যায়। এবং যেমন আমি আগেও বলেছি, নির্মাতা এবং দর্শকদের মধ্যে আস্থা রক্ষা করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আর নির্মাতাদের এই বিষয়ের উপর কাজ করা উচিত।’