করোনা কেড়ে নিল পদ্মশ্রী জয়ী শিখ ধর্মীয় সঙ্গীত শিল্পী নির্মল সিংয়ের প্রাণ। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ মৃত্যু হয় এই শিল্পীর। বুধবারই তাঁর করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশ্যে এসেছিল। পঞ্জাবের স্বর্ণমন্দিরের প্রাক্তন 'হাজুরি রাগি' ছিলেন তিনি।
অমৃতসরের সিভিল সার্জেন ডঃ প্রভাদীপ কৌর জোহাল জানিয়েছেন বুধবার রাতে তাঁর অবস্থার ক্রমশ অবনতি হলে নির্মল সিংয়ে ভেন্টিলেটরে দেওয়া হয়। ব্রঙ্কাইল অ্যাস্থমার রোগী ছিলেন এই ধর্মীয়গুরু। যাঁর ফলে করোনাভাইরাসের জেরে তাঁর অবস্থা দ্রুতগতিতে খারাপের দিকে এগোয়। নির্মল সিংয়ের মৃত্যুর সঙ্গেই পঞ্জাবে করোনার জেরে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৬।
গত ৩০ মার্চ শ্বাসকষ্ট এবং ঝিমুনির সমস্যা নিয়ে স্থানীয় শ্রী গুরু রাম দাস হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ছিলেন ভাই নির্মল সিং। এরপর তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় গুরু নানক হাসপাতালে। সেখানেই মৃত্যু হল তাঁর।
জানা গিয়েছে নভেম্বরে ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন তিনি। স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা ৩-রা মার্চ নির্মল সিংয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে তাঁর বাড়িতে দুজন অতিথি এসেছিল। তাঁদের দেহে করোনার কোনও লক্ষণ মেলেনি। যদিও ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হয়েছিল গোটা পরিবারকে। সময়কাল শেষ হওয়ার পরে পরীক্ষা করা হয়, তখনও করোনার কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এরপর ১৯ মার্চ ভাই নির্মল সিং চণ্ডীগড়ে একটি কীতর্নে যোগ দিয়েছিলেন, যেখানে প্রায় ১০০ জন মানুষের সমাবেশ ছিল। এই ঘটনা কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের। ইতিমধ্যেই অমৃতসরের স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা সচেতন করেছেন চণ্ডীগড়ের আধিকারিকদের।
যদিও পরিবারের সদস্যরা মনে করছে চণ্ডীগড়ের ওই জমায়েত থেকেই কোনওভাবে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন নির্মল সিং। ইতিমধ্যেই তাঁর দুই মেয়ে, স্ত্রী, গাড়ির চালক সহ পরিবারের অন্য ছ'জন সদস্যকে আইসোলেশনের রাখা হয়েছে। তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
শিখ গুরুদ্বারে নানান ধর্মীয় আলোচনাতে যোগ দিতেন তিনি। গুরু গ্রন্থ সাহিবের গুরু বানির ৩১টি রাগে পারদর্শী ছিলেন নির্মল সিং। ২০০৯ সালে ভারত সরকারের তরফে পদ্মশ্রী পুরস্কারে সম্মানিত করা হয় তাঁকে।