যা কিছু অনৈতিক, যা কিছু নিয়মের বাইরে তার সঙ্গে কি যোগ রয়েছে পাকিস্তানের? সে বিচার করুক বরং ঐতিহাসিক এবং রাজনীতিবিদরা। বরং সদ্য উঠে আসা এক 'অমানবিক' ঘটনা কিন্তু সেদিকেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে। মিস সুজান নামে এক পাকিস্তানি সোশ্যাল মিডিয়া তারকার বিরুদ্ধে নেটমাধ্যমে আছড়ে পড়েছে জনরোষ। পশুসংরক্ষণের ব্যাপারে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও তোপ দেগেছে ওই সোশ্যাল মিডিয়ার তারকার বিরুদ্ধে। তাঁর দোষ? একটি যুবক সিংহকে রীতিমত নেশায় আছন্ন করে নিজের জন্মদিনের পার্টিতে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছিলেন তিনি। সোজা কোথায়, সিংহটিকে ব্যবহার করা হচ্ছিল 'পার্টি প্রপস' হিসেবে অর্থাৎ অনুষ্ঠানে শোভা ও মর্যাদা বাড়ানোর হাতিয়ার হিসেবে। ঘটনার একাধিক ভিডিও সামনে আসতেই তুমুল শোরগোল শুরু হয়েছে নেটদুনিয়ায়।
একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে পার্টিতে বেদম জোরে গান চলছে, সঙ্গে রয়েছে চোখ ধাঁধানো এল। হাজারো মানুষের আনাগোনা ও চিৎকারের মাঝে নির্জীব অবস্থায় এক কোণায় পড়ে রয়েছে সিংহটি। কখনও বা সোফার ওপর এলিয়ে শুয়ে রয়েছে। আরও একটি ভিডিওতে দেখা হচ্ছে 'বার্থডে গার্ল' সুজান হাসি মুখে সিংহটির পিঠে হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। আর তাঁর আশেপাশে আমন্ত্রিত অভ্যাগতদের অনেকেই এই দৃশ্য তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছেন।
ইনস্টাগ্রামের দেওয়ালে গোটা ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে 'প্রোজেক্ট সেভ অ্যানিম্যাল' নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে। ভিডিওর সঙ্গে এই সংস্থার তরফে তীব্র ভাষায় নিন্দা জানিয়েছেন এই ঘটনার। একহাত নিয়েছেন সুজানকেও। পশুরাও যে জীবন্ত প্রাণী মানুষের মতো তা কী করে ভুলে যায় অনেকে তা নিয়ে কঠিন প্রশ্নবাণে বাঁধা হয়েছে সুজানকে। এ প্রসঙ্গে 'ভাইস নিউজ'-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পশু উদ্ধারকারী সৈয়দ হাসান বলেছেন যে ভিডিওটি থেকে স্পষ্ট সিংহটির সব নখ কেটে ফেলানো হয়েছে। পাকিস্তানে বাঘ-সিংহকে বেঁধে এরকম মজা পাওয়া কিংবা তাঁদের কষ্ট দিয়ে 'স্টেটাস' উঁচু করার মরিয়া প্রচেষ্টা অনেকের মধ্যেই তিনি দেখেছেন বলে দাবি করেছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পাকিস্তানে বাঘ-সিংহ পোষার লাইসেন্স পাওয়া যায় খুব অল্প মূল্যের বিনিময়েই। পাকিস্তানের বহু নাগরিকই মনে করেন এই ধরণের পশু পোষাটা তাঁদের 'স্ট্যাটাস'-কে একলাফে নিয়ে যাবে অনেকটাই উঁচুতে। 'প্রোজেক্ট সেভ অ্যানিম্যাল'-এর প্রধান সৈয়দ ইতিমধ্যেই একটি পিটিশন দায়ের করেছেন সুজানের বিরুদ্ধে। সঙ্গে জনসাধারণের উদ্দেশে অনুরোধ জানিয়েছেন যত বেশি করে সম্ভব পশুদের ওপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ উঠুক। নিন্দার ঝড়ের তেজ বাড়ুক।