ক্লাস নাইনে পা দেন অভিনয়ের জগতে। ‘নদের নিমাই’ ধারাবাহিকে 'লক্ষ্মীপ্রিয়া' হিসাবে দর্শক চিনেছিল তাঁকে। লিড চরিত্র হাতে আসে 'দুই পৃথিবী' ধারাবাহিকে। যদিও কাঙ্খিত সাফল্য আসে স্টার জলসার ‘কে আপন কে পর’ সিরিয়ালের মাধ্যমে। জবা চরিত্রের সুবাদে রাতারাতি খ্যাতির শিখরে পৌঁছান পল্লবী। নায়িকার ব্যক্তিগত জীবনের গল্প হার মানাবে কোনও সিনেমার চিত্রনাট্যকে। আরও পড়ুন-‘জি কাকুর মাথা খারাপ’! ঘোষণা হল মালা বদলের সম্প্রচারের সময়, কার বড় ক্ষতি হল
বর্তমানে বেঙ্গল টপার সিরিয়াল ‘নিম ফুলের মধু’ ধারাবাহিকের হিরোইন পল্লবী শর্মা। বাংলার ঘরে ঘরে আট থেকে আশির প্রিয় ‘তারকাটা’ পর্ণা। অথচ পল্লবীর মনের খবর রাখে না কেউ! নায়িকার জীবনের স্ট্রাগলের গল্প সত্যিই কাঁদিয়ে দেয়। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জীবনের সবচেয়ে বড় আফসোসের কথা জানালেন পল্লবী। তাঁর কথায়, ‘আক্ষেপ হল খুব ছোটবেলায় বাবা-মা’কে হারিয়েছি। আজকের এই সাফল্যটা যদি ওঁনারা দেখে পারতেন, নিশ্চয় খুশি হতেন'।
ক্লাস টু-তে পড়বার সময় মাতৃহারা হন পল্লবী। মা-কে ছাড়া বাঁচার লড়াইটা কেমন ছিল? আনন্দবাজারকে অভিনেত্রী বলেন, ‘এটা বিশাল বড় জার্নি। মাকে ক্লাস টু-তে পড়তে হারাই। তারপর থেকে পিসির বাড়িতে বড় হওয়া। বাবা মারা যান ক্লাস টেনে পড়ার সময়। ক্লাস নাইন থেকে ছোটখাটো কাজ করতে শুরু করে দিয়েছিলাম। কোনওদিন ফিরে তাকাতে হয়নি। জীবনে কোনওকিছু প্ল্যান করে ঘটে না।’
আপতত কাজই তাঁর জীবনের একমাত্র ফোকাস। একা থাকেন ফ্ল্যাটে, একা থাকতে থাকতে একাকীত্বকে ভালোবেসে ফেলেছেন। তবে প্রেমের দরজা খোলা রেখেছেন জীবনে। পল্লবী জানান, ‘আমি যাকে বিয়ে করব তাঁর উপর পুরোটা নির্ভরশীল হতে চাই’। রোজ রোজ প্রেমে পড়েন না পল্লবী, বরং স্টেডি রিলেশনশিপে আস্থা রয়েছে তাঁর। কাজের ব্যস্ততা জীবন থেকে ছোট ছোট আনন্দগুলো কেড়ে নিয়েছে। ছুটির দিনে আত্মীয়-পরিজনদের নিয়ে সময় কাটাতে ভালোবাসেন নায়িকা। রান্নার হাত দুর্দান্ত পর্ণার, সময় পেলেই রেঁধে ফেলেন পছন্দের পদ।
বাবার মৃত্যুর খবর পেয়েই ক্লাস টেনের বোর্ডের পরীক্ষা দিতে দৌড়ে ছিলেন। বাবা চাইতেন মেয়ে পড়াশোনা করুক, সেই স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যেই যন্ত্রণা বুকে চেপে আইসিএসসি পরীক্ষা দেন পল্লবী। পরীক্ষা দিয়ে ফিরে বাবার পরলৌকিক কাজ করতে শ্মশান যান, এসে ফের পরের পরীক্ষার প্রস্তুতি। মা-বাবা চলে যাওয়ার পর পিসি ছিলেন তাঁর একমাত্র অভিভাবক। এখন তিনিও মারা গেছেন, পর্ণার মতো পল্লবীও পরিবারকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতেই ভালোবাসেন। তাঁর কাছে পরিবারের দাম অনেকখানি।