পঞ্চায়েত সিরিজের ক্রান্তি দেবী ওরফে সুনীতা রাজওয়াকে কে না চেনেন। তাঁর অসাধারণ অভিনয় দিয়ে তিনি জয় করেছেন সকলের মন। কিন্তু সম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন যে, তিনি তাঁর বাবার পেশার কথা বলতে গিয়ে একটা সময় নাকি লজ্জা পেতেন। তবে এখন চিত্রটা সম্পূর্ণ আলাদা। কিন্তু কেন লজ্জা পেতেন সুনীতা?
সম্প্রতি 'ডিজিটাল কমেন্টারি'-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সুনীতা এ কথা বলেন। তিনি জানান, তাঁর বাবা পেশায় একজন ট্রাক চালক ছিলেন। কিন্তু তিনি যে স্কুলে পড়তেন সেখানকার বহু ছাত্র-ছাত্রীর বাবা হয় ব্যবসায়ী ছিলেন, না হলে পেশায় আইনজীবী বা ডাক্তার ছিলেন। বৃত্তশালী পরিবার থেকে আসা ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে তথাকথিত ভালো স্কুলে পড়ার সুযোগ তিনি পেয়েছিলেন। আর তাঁকে সেই জায়গাটা দিতে গিয়েই বাবাকে ট্রাক চালাতে হতো। কিন্তু বাবা ট্রাক চালান, এই কথা সকলের সামনে বলতে ছোটবেলায় লজ্জা পেতেন অভিনেত্রী।
আরও পড়ুন: সোনালির দেখা না পেয়ে আত্মঘাতী অনুরাগী! ঘটনা শুনে অবাক অভিনেত্রী
তাই প্রতি বছর নতুন ক্লাসের শুরুতে যখন নিজের পরিচয় ও বাড়ির সমন্ধে বলতে বলা হতো, তখন সুনীতা তাঁর বাবার আসল পেশার কথা না জানিয়ে বানিয়ে বানিয়ে অন্য কিছু একটা বলে দিতেন। কারণ তাঁর মনে হতো যদি তিনি বাবা আসল পেশার কথা সবাইকে জানিয়ে দেন, তাহলে হয়তো বন্ধুরা তাঁর সঙ্গে মিশবেন না। একসঙ্গে বসে টিফিন করবেন না। সব কিছু থেকে বাদ যেতে হবে তাঁকে।
আরও পড়ুন: 'সকলে নিজের ভাগ্য নিয়ে আসে...' ‘ফাদার্স ডে'-তে ছেলে সহজকে নিয়ে যা বললেন রাহুল
তবে যখন তিনি বড় হয়ে ওঠেন তখন ধীরে ধীরে বুঝতে শেখেন, পাল্টে যায় তাঁর মনোভাব। তিনি বুঝতে পারেন বাবার এই পেশা লোকানো বা লজ্জা পাওয়ার বিষয় নয় এটা, বরং অনেকটা গর্বের। পাশাপাশি তিনি এও জানান, তাঁর বাবার পেশা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করতে এবং তার মূল্য উপলব্ধি করতে তাঁকে অনেক সাহস সঞ্চয় করতে হয়েছিল। এর জন্য অনেকটা সময়ও লেগেছিল। পাশাপাশি সুনীতা এও জানান, বাবা ট্রাক ড্রাইভার হওয়ার আগে এক দোকানে সহকারী হিসাবে কাজ করতেন, এবং তাঁর সারাটা জীবনের সমস্ত সঞ্চয় পরিবারের জন্যই উৎসর্গ করেন।
কাজের সূত্রে, তাঁকে 'পঞ্চায়েত সিজন ৩' এবং 'গুল্লাক সিজন ৪'-এ দেখা গিয়েছিল। পঞ্চায়েত সিরিজে 'ক্রান্তি দেবী'র চরিত্রে অভিনেত্রী সবার নজর কেড়েছিলেন। অন্যদিকে, 'গুল্লাক'-এ তাঁকে প্রতিবেশী বিট্টুর মায়ের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল।