জুনিয়র আর্টিস্ট থেকে ‘পঞ্চায়েত’-এর মতো ওয়েব সিরিজের পছন্দের চরিত্র হয়ে ওঠার সফরটা সহজ ছিল না অভিনেতা আসিফ খানের কাছে। এর জন্য অনেক বাসন মাজতে হয়েছে! গল্প নয়, সত্যি। অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মুম্বইয়ে পা রাখা আসিফ এক হোটেলে ওয়েটারের কাজ করতেন। সেই সময় বলিউড দম্পতি সইফ আলি খান এবং কারিনা কাপুরের বিয়েতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি তাঁকে। সম্প্রতি এবিপি আনকাটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা তাঁর জার্নি ফিরে দেখলেন। আরও পড়ুন-‘মহিলাদের অনুভব করান…’, মোদী-মেলোনির ভাইরাল ভিডিয়ো দেখে কী লিখলেন BJP সাংসদ কঙ্গনা?
ওয়েটার থেকে ফিল্মস্টার
পডকাস্টে আসিফ জানান, স্ট্রাগলের দিনে এক পাঁচতারা হোটেলে ওয়েটারের কাজ করেছিলেন। তিনি আরও বলেন, ২০১২ সালে যে হোটেলে অভিনেতা সইফ ও করিনার বিয়ে হয়েছিল, সেই হোটেলের রান্নাঘরে তিনি বাসন মাজছিলেন। প্রসঙ্গত, তাজ হোটেলে ছিমছাম বিয়ে সেরেছেন পতৌদির নবাব।
সইফিনার সাথে দেখা করার জন্য তাঁর ম্যানেজারের কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন আসিফ। কিন্তু ম্যানেজার তাঁকে সেখানে ঢুকতে দেননি। তিনি বলেন, ‘ওঁদের এত কাছে থাকা সত্ত্বেও দেখা করতে পারিনি বলে সেদিন খুব কেঁদেছিলাম’। তবে ওই দিনই আসিফের মাথায় জেদ চেপে বসে যে করেই হোক বলিউডে নিজের পথ খুঁজে বার করতে হবে।
মাসখানেক পর এক কাস্টিং এজেন্সির ম্যানেজারের সঙ্গে সাক্ষাৎ-এর সুযোগ হয় তাঁর। সেখানে নিজের চেহারা নিয়ে ‘সৎ ফিডব্যাক’ পান আসিফ। তাঁর কথায়, 'ওই এজেন্সির ম্যানেজার আমাকে বলেছিলেন ... 'আমার ফিডব্যাক ব্যক্তিগতভাবে নেবেন না, আমি আপনাকে সৎ ফিডব্যাক দিচ্ছি। তোমার চেহারা আকর্ষণীয় নয়, বডি দুর্দান্ত এমনও নয়। কেউ তোমাকে কাস্ট করবে কেন?'
ওই ব্যক্তি তাঁকে প্রথমে অভিনয় শেখার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তখনই তিনি রাজস্থানে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং জয়পুরের একটি থিয়েটার দলে নাম নথিভুক্ত করান আসিফ। ছয় বছর থিয়েটার গ্রুপে কাজ করেছিলেন, এরপর ভাগ্যঅন্বেষণের জন্য আবারও মায়ানগরীতে পা রাখেন।
এর আগে হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আসিফ মুম্বাইয়ে তার শুরুর দিনগুলোর কথা বলেছিলেন। তিনি বলেন, ‘২০১০ সালে আমি আমার মাকে (ফিরদৌস) রাজি করাই এবং আমি অভিনেতা হওয়ার জন্য মুম্বাই চলে যাই। টিকে থাকার জন্য আমি একটি হোটেলে ওয়েটারের কাজ শুরু করি। কয়েক মাস পরে, যখন আমি রান্নাঘর বিভাগে কাজ করছিলাম, তখন আমাদের একটি পার্টি ছিল সাইফ আলি খান এবং কারিনা কাপুরের বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। অমিতাভ বচ্চনকে প্রথমবার দেখি। এর পরপরই আমি সেই চাকরি ছেড়ে দিই, একটি মলে কাজ শুরু করি এবং অডিশন দিতে শুরু করি। আমাকে বলা হয়েছিল অভিনয় শিখতে এবং থিয়েটার করতে’।
আসিফের ক্যারিয়ার সম্পর্কে বিনোদন
জুনিয়র শিল্পী হিসাবে শুরু করেছিলেন আসিফ। সলমন খানের 'রেডি' ও হৃতিক রোশনের 'অগ্নিপথ' ছবিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। অর্জুন কাপুরের সঙ্গে অক্ষয় কুমার অভিনীত 'টয়লেট এক প্রেম কথা' এবং 'ইন্ডিয়াস মোস্ট ওয়ান্টেড' ছবিতেও অভিনয় করেছেন তিনি।
অভিনেতা ২০১৮ সালে মির্জাপুর দিয়ে ওটিটিতে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন, যেখানে তিনি বাবরের অনুগত সহযোগী চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। পঞ্চায়েত ছাড়াও পাতাল লোক, জামতাড়া-সবকা নম্বর আয়েগা এবং মির্জাপুর ২-তেও দেখা গিয়েছে তাঁকে।