আর জি কর কাণ্ডের জেরে বেশ খানিকটা কোণঠাসা তৃণমূল সরকার। টলিপাড়ার তথাকথিত শাসক দল ঘনিষ্ঠরাও এই ইস্য়ুতে বেঁকে বসেছেন। আরজি কর কাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদে সুর চড়িয়েছেন অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। প্রতিবাদ মিছিলে পা মিলিয়েছেন। বুধবার ফের রাজ্য সরকারকে কড়া বার্তা পরমব্রতর।
এদিন প্রেসিডেন্সি কলেজের ডাকা রাজ্য ও রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা সভায় পরম জানান, কাউকে যেন টেকেন ফর গ্র্যান্টেড না নেওয়া হয়। আম জনতার ক্ষমতার কথা মনে করিয়ে পরমব্রত বলেন, 'আমরা এদের (বিরোধী দলের তুলনায় ) থেকে এদেরকে (তৃণমূল) বেশি এগিয়ে রাখব। গত একমাস বা দেড় মাস ধরে যে আন্দোলন চলেছে, প্রতিবাদ গড়ে উঠেছে, তা চোখে আঙুল দিয়ে প্রশ্ন তোলে, সেই শাসক দল, যা এঁদেরই ভোটে এঁদেরই গড়া, এঁদের ভরসার ভিত্তিতে বারবার ক্ষমতায় এসেছে বলে টেকেন ফর গ্রান্টেড করবেন না কিন্তু। কাউকে টেকেন ফর গ্রান্টেড করা যায় না। অ্যাকাউন্টেবল হতে হবে। বারবার আপনাদের সাধারণ মানুষ অন্য দলের তুলনায় এগিয়ে রেখেছে বলে, বছরের পর বছর ধরে মানুষকে টেকেন ফর গ্রান্টেড ভেবে নেবেন না।’
পরমব্রতর একসময়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু রুদ্রনীল ঘোষ এখন বিরোধী শিবিরের তারকা মুখ। বিজেপি নেতা পরমব্রতর উপলব্ধির প্রশংসা করলেন। টিভি নাইন বাংলাকে রুদ্রনীল বলেন, ‘কেউ বিবেকের দংশনে মুখ খুলছেন, কেউ ইমেজ বাঁচাতে পথে নামছেন। পরম বরাবরই আমার খুব ভাল বন্ধু’। ইন্ডাস্ট্রিতে কোণঠাসা হওয়ার পরেও পরমব্রত তাঁকে সাহস জুগিয়েছিলেন, মনে করালেন রুদ্রনীল।
রাজনীতির রঙ লেগেছে গায়ে, সেই সময় হাতে গোনা যে কজন মানুষ আমায় সাহস করে কাজ দিয়েছেন, পরম তাঁদের মধ্যে একজন। রুদ্রনীল বলেন, 'পরমের কথাগুলো ভাল। তবে ওকে বন্ধু হয়ে বলতে চাই, মানুষের ভোটে রাজনৈতিক দলটা এগিয়ে আছে কি না ভেবে দেখুক। কারণ ছাপ্পা বলেও একটা বিষয় আছে। ও বুদ্ধিমান, খতিয়ে ভাবলে হয়তো বুঝতে পারবে এবং আমার বিশ্বাস আরও দৃঢ় বার্তা দিতে পারবে’।
আর জি কর কাণ্ড নিয়ে পথে নেমে প্রতিবাদ জানানোয় তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের কুরুচিকর মন্তব্যের শিকার হচ্ছেন প্রতিবাদীরা। সেই প্রসঙ্গে এবিপি আনন্দকে পরমব্রত জানান, ‘যখন কোনও রাজনৈতিক ছাতার তলায় না এসে একটা বড় জনগোষ্ঠী আন্দোলন করেন আর সেই আন্দোলন সফল হতে থাকে, তখন শাসক-বিরোধী সবাই চেষ্টা করে সেই আন্দোলনটাকে খাটো করতে। এটা আমরা বার বার দেখেছি।’
‘যদি এই আন্দোলনটা একটা বিশেষ রাজনৈতিক রং পেয়ে যেত। তাহলে তাঁরা সরাসরি এটার বিরোধীতা করতে পারতেন বা তাঁদের নিজেদের কোর্টে বলটা চলে আসত। কিন্তু সাধারণ মানুষেরা যেহেতু গত দেড় মাস ধরে এই আন্দোলনে কোনও রাজনৈতিক রং লাগতে দেননি’, জোর গলায় জানালেন অভিনেতা।