পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ বাংলা সিনেমাকে 'ঘাটিয়া' আখ্যা দিয়ে মন্তব্য করেছিলেন গত বছর। আর তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে দানা বেঁধেছিল বিতর্ক। টলিপাড়ার বহু অভিনেতা, পরিচালক তাঁর এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে সরবও হয়েছিলেন। আর এবার এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন অভিনেতা-পরিচালক পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে পরমব্রত জানান, মূলধারার বাণিজ্যিক বাংলা সিনেমা থেকে সত্যি বাঙালি দর্শক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
এই প্রসঙ্গে স্ক্রিন লাইভ ইভেন্টে পরমব্রত বলেন, ‘আমরা মূলধারার বাণিজ্যিক বাংলা সিনেমার দিকে নজর দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। যদি কোনও ইন্ডাস্ট্রির মূলধারার সিনেমা কাজ না করে, সেই ইন্ডাস্ট্রিতে অন্য কোনও ধরনের সিনেমা বানানো খুব কঠিন। কারণ দর্শকের আকার এত বড় হওয়া উচিত যে আপনি কাজটা করে যাতে খেতে পারেন। আমাদের ধরনের সিনেমা অর্থাৎ অন্যধারার ছবি মূলধারার ছবির লাভের উপর নির্ভর করে। যদি ইন্ড্রাস্টিতে টাকা না আসতে থাকে তবে কোনও লাভও থাকবে না। সৃজিতদা (সৃজিত মুখোপাায়) , কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় এবং এঁদের মতো পরিচালকদের হাত ধরে বাংলা সিনেমা নতুন ধারার ছবি পেয়েছিল। অনেক দর্শকই এই ধারার ছবিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। আর তখন ইন্ডাস্ট্রির একটা বড় অংশ লাভের আশায় অপ্রত্যাশিত ভাবে বড় বড় কর্মারশিয়াল ছবি বানানো ছেড়ে এই ধারার ছবি বানাতে শুরু করে।’
আরও পড়ুন: বিয়েতেও আলিয়া সেজেছিলেন সব্যসাচীর পোশাকে, ‘আমাদের অনুপ্রেরণা…’, বাঙালি ডিজাইনারে মুগ্ধ রণবীর ঘরণী
তিনি আরও বলেন, ‘খুব অযত্নে দক্ষিণী ছবির রিমেক বানানো শুরু হয়। আর দর্শকরাও তাতে খুব একটা সাড়া দেন না। কারণ তাঁরা তখন দেখছেন যে একই দক্ষিণী ছবি হিন্দিতে ডাব করা অবস্থায় পাওয়া যাচ্ছে। এবং এগুলি বিভিন্ন চ্যানেলগুলিতে প্রচারিতও হত। ফলে তা সকলের কাছে সহজলভ্যও হয়ে ওঠে। তাই তাঁরা দক্ষিণী ছবির সস্তা বাংলা রিমেকগুলি থেকে মুখ ফেরান। বাংলা সিনেমার দর্শক কমতে থাকে। আর তার ফলস্বরূপ বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের একটা বড় অংশ বাংলা সিনেমা দেখে না।’
আরও পড়ুন: বাঙালি পরিচালক সুজয় ঘোষ নন, সিদ্ধার্থ আনন্দই পরিচালনা করছেন 'কিং'! এবার সিলমোহর দিলেন শাহরুখ
প্রসঙ্গত, গত বছর অনুরাগ জানিয়েছিলেন যে সাম্প্রতিক সময়ের বাংলা সিনেমার গুণগত মানের অবনতি হয়েছে। তাঁর মতে, হিন্দি ছবির পতন ততটা স্পষ্ট নয়, যতটা বাংলা সিনেমার মানের অবনতি। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হিন্দি ছবির মানের পতন মানে দোতলা থেকে পড়ে যাওয়া। বাংলা ছবি অনেক উঁচুতে থাকত। আর তাই পতন এতটা স্পষ্ট।’