এটা নেতাজির ছবি নাকি প্রসেনজিত চট্টোপাধ্যায়ের? রাষ্ট্রপতিভবনে উন্মোচিত নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ছবি নিয়ে এমনই বিতর্ক গোটা দেশকে নাড়িয়ে দেয় সোমবার। দিনভর টুইটারে আলোচনা-সমালোচনার পর জট খোলে।কেন্দ্র বিবৃতি দিয়ে জানায়- নেতাজির প্রকৃত ছবি অবলম্বনে আঁকা পোট্রেটই উন্মোচন করা হয়েছে রাইসিনা হিলসে। এঁকেছেন পরেশ মাইতি। এর সঙ্গে ‘গুমনামী’ বা বাঙালি অভিনেতা প্রসেনজিত চট্টোপাধ্যায়ের কোনও সম্পর্ক নেই।
প্রসেনজিত যাঁর তুলির টানে রুপোলি পর্দায় আনায়সে হয়ে ওঠেছিল হয়ে উঠেছিলেন নেতাজি বা গুমনামী বাবা, তিনি কী বলছেন? প্রস্থেটিক মেপ-আপ আর্টিস্ট সোহনাথ কুণ্ডু মুখ খুলেছেন এই গোটা বিতর্ক নিয়ে।
টুইট বিতর্ক নিয়ে ধোঁয়াশা কাটাতে গিয়ে সৃজিত-প্রসেনজিত্ দুজনেই সোমনাথ কুণ্ডুর নাম উল্লেখ করেছেন। সৃজিতের সাফ কথা, ‘যদি এই ছবির সঙ্গে প্রসেনজিতের কোনও মিল খুঁজে পেয়ে থাকেন, তাহলে তার সমস্ত কৃতিত্ব প্রাপ্য সোমনাথ কুণ্ডুর’। তবে এই বিতর্ক নিয়ে খুশি নন সোমনাথ নিজে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল টলিউডের এই খ্যাতনামা শিল্পীর সঙ্গে। তিনি এই বিতর্ক নিয়ে জানান, ‘ওটা নেতাজিরই ছবি, কিন্তু মানুষ ভুল করেছে। একদিকে ভালো লাগছে যে মানুষ আমাদের কাজকে এতটা ভালোবেসেছে। কিন্তু খারাপও লাগছে, কারণ নেতাজিকে নেতাজিরূপেই আমাদের পাওয়া উচিত’।
সত্যিই কি ‘গুমনামী’-র প্রসেনজিতের সঙ্গে নেতাজির অতটাই মিল রয়েছে? মুখের আদলের মিল না থাকলেও চোখের মিল রয়েছে, এমনটাই দাবি করেছেন রূপটান শিল্পী সোমনাথ কুণ্ডু। আনন্দবাজার ডিডিট্যালকে শিল্পী জানান, ‘বুম্বা’দার চোখ অসম্ভব ধারালো। একটা গভীরতা আছে। নেতাজির ছবির সঙ্গে যদি ওঁর ছবি পাশাপাশি ফেলা হয়, তবে চোখেই অনেকটা মিল পাওয়া যাবে। আমার তো কাজ করতে গিয়ে তা-ই মনে হয়েছে’।
বুম্বাদাকে নেতাজি হিসাবে সাজিয়ে তোলাটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল? স্মৃতির পাতা উলটে সোমনাথ কুণ্ডু বলেন, ‘নো-ডাউট বড়ো চ্যালেঞ্জ। বেশিরভাগ মানুষের ভালো লেগেছে। অনেকে সমালোচনাও করেছিল, সেই সংখ্যাটা কম। তবে কোনও কাজ তো সব মানুষের ভালো লাগতে পারে না। তবে এই কাজটা করবার সুযোগ আমাকে যাঁরা দিয়েছেন, আমার পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় ও বুম্বাদার কাছে আমি কৃতজ্ঞ’।
গুমনামী’-তে কাজ করার জন্য অনেক গবেষণা করতে হয়েছে সোমনাথকে। নেতাজির নানান বয়সের ছবি দেখা, ঘন্টার পর ঘন্টা সেই নিয়ে নানান এক্সপেরিমেন্ট করা। নেতাজির লুকে প্রসেনজিত্কে তৈরি করতে প্রতিদিন প্রায় ২ থেকে আড়াই ঘন্টা সময় লাগত।
সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের জুলফিকর, এক যে ছিল রাজা, ভিঞ্চি দা-র মতো ছবিতে মেক-আপের দায়িত্ব ভার সামলেছেন সোমনাথ কুণ্ডু। তাঁর মতো প্রোস্থেটিক মেক-আপ টলিগঞ্জে কেউ করে দেখাতে পারবে না-একবাক্যে মেনে নেন পরিচালকরা।