বিজায়ার সুর চারিদিকে, এর মাঝেই মন খারাপ দ্বিগুণ হল। শনিবার অসুস্থ হয়ে পড়লেন অনশনকারী আরও এক জুনিয়র ডাক্তার। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের আলোক ভার্মার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অনিকেতের পর অসুস্থ অলোক, এই নিয়ে অনশনের জেরে মোট দু-জন চিকিৎসক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে।
জানা গিয়েছে, অনিকেতের মতো আলোকের ইউরিনে কিটন বডির মাত্রা বেড়ে গিয়েছে, এর জেরে তাঁর লিভার এবং কিডনিতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রাও বেড়ে গেছে। তাঁর হার্ট-রেটও অনিয়মিত, জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সহকর্মী-বন্ধু আলোকের অসুস্থতার কথা জানিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ উগরে দেন কিঞ্জল নন্দ।
অভিনেতা তথা জুনিয়র আন্দোলনের অন্যতম মুখ কিঞ্জল। এদিন ফেসবুকের দেওয়ালে কিঞ্জল লেখেন, ‘আরো একজন ICUতে, প্রশাসন শুনতে পাচ্ছেন… অলোক ভার্মা?’ কিঞ্জলের পোস্টে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নেটিজেনরা। অভিনেত্রী অপরাজিতা ঘোষ লেখেন, ‘এরা শুনতে পায় না বোধহয়, বা শুনতে চয় না। আমরাই চিন্তায় থাকছি সারাক্ষণ। ওঁর কেয়ার করে না’।
একটানা ১৪৭ ঘণ্টা অনশনের জেরে অসুস্থ অলোক। জীবন সংশয় যেখানে, সেখান থেকে সরে এসে অন্য পথ দেখবার পরমার্শন দেন অনেকেই। একজন লেখেন, ‘তোমরা এই লড়াইয়ের পথ দেখিয়েছো। এখন এই মরন যুদ্ধে নেমে তোমাদের এক কণা ক্ষতি মানেই এই লড়াইয়ের ওপর বিশাল প্রভাব পড়বে। তোমরা অন্য কৌশল ভাবো ভাই। এ কৌশলে ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই হচ্ছে না।’
জুনিয়র ডাক্তারদের ১০ দফা দাবির সমর্থনে গত শনিবার থেকে কলকাতার ধর্মতলায় শুরু হয়েছে আমরণ অনশন কর্মসূচি। প্রথমে ৬ জন অনশন শুরু করলেও পরে সেখানে যোগদান করেন আরজি কর মেডিক্যালের ছাত্র অনিকেত মাহাতো। গত বৃহস্পতিবার তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।
ওদিকে জুনিয়র ডাক্তারদের এই অনশন নিয়ে ক্রমশ রাজ্য সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। তার মধ্যেই এবার ফেডারেশন অফ মেডিক্যাল অ্য়াসোসিয়েশন চিঠি পাঠাল প্রধানমন্ত্রীকে। এর আগে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে চিঠি পাঠিয়েছিল ফেমা। এবার প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি পাঠাল ফেমা। ৬৯টি চিকিৎসক সংগঠনের ফেডারেশন হল ফেমা। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকেও চিঠি দিয়েছেন তারা। তাদের তরফে বলা হয়েছে, গণতান্ত্রিক পথে অনেক আলোচনা হয়েছে। এই যে অচলাবস্থা চলছে এবার দ্রুততার সঙ্গে তার সমাধান করা হোক।