অভিনয়ের ময়দানে ছক্কা হাঁকিয়েছেন, টিভির পর্দার দিদি নম্বর ১ তিনি কিন্তু রাজনীতিতে একেবারে আনকোরা রচনা ভোটের ময়দানে পা দিয়ে শুরুতে বেফাঁস মন্তব্য করেছেন একাধিক। কখনও হুগলিতে কলকারখানার ‘ধোঁয়া’ নিয়ে মন্তব্য করে ট্রোলের মুখে পড়েছেন রচনা, তো কখনও আবার গোরুর রচনা বলে!
রচনা বনাম লকেট যুদ্ধ
‘রাজনীতিক’ রচনাকে তৈরি করতে রীতিমতো কলকাতা থেকে বিশেষ প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে দলের হাই কমিশন। সোমবার ভোটযুদ্ধে মুখোমুখি রচনা এবং লকেট। টলিউড সূত্রে দীর্ঘদিনের সহকর্মী তাঁরা। একসঙ্গে কাজও করেছেন রুপোলি পর্দায়। তবে রাজনীতির আঙিনায় গেরুয়া শিবিরের পোড়খাওয়া সৈনিক লকেট চট্টোপাধ্যায়ের চেয়ে অভিজ্ঞতায় পিছিয়ে রচনা। ৪ঠা জুন ভোটের ফল বেরোলেই জানা যাবে দিদি নম্বর ১-এ আস্থা রাখল হুগলির জনতা নাকি লকেট কেল্লাফতে করলেন।
রচনার মন্তব্য় ঘিরে মিমের বন্যা
হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে প্রচারে শুরু করার পর থেকে সমাজমাধ্যমে রচনাকে ঘিরে মিমের বন্যা। তবে গত কয়েকদিনে মিম ঝড় অনেকটাই থেমেছে। তাতে অনেকটাই স্বস্তিতে ঘাসফুল শিবির। বাধ্য ছাত্রীর মতো সব পরামর্শ মেনে নিয়েছেন রচনা। প্রচারের একদম শুরুতেই হুগলি লোকসভা এলাকার বিভিন্ন কারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়ায় আকাশ কালো হয়ে যেতে দেখছেন, এমন কথা বলে হাসির খোরাক হন রচনা।
লোকসভা ভোটের নতুন রচনা: ধোঁয়া আর টক দই
রচনাকে হুগলির বন্ধ কারখানা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি যখন এলাম তখন তো দেখলাম অনেক কারখানা হয়েছে। চিমনি থেকে শুধু ধোঁয়াই ধোঁয়া। অন্ধকার রাস্তাঘাট। শুধু ধোঁয়াই বেরোচ্ছে। এত কারখানা হয়েছে। তা হলে কী করে বলছেন যে, কারখানা হয়নি। কারখানা তো হচ্ছে।’ এরপর রচনার ‘ধোঁয়াই ধোঁয়া’ মন্তব্য নিয়ে মিমের ছয়লাপ।
এরপর হুগলি জেলার দই-এর ঢালাও প্রশংসা করতে গিয়ে গরুর রচনা বলে বসেন নায়িকা। সিঙ্গুরের টক দইয়ে মুগ্ধ রচনা বলে বসেন, ‘সিঙ্গুরের সবুজ ঘাস, গাছ-পালা খেয়ে গরু হৃষ্টপুষ্ট হচ্ছে। তারপর তার যে দুধটা বেরোচ্ছে যে দইটা এত ভালো। চারিদিকের পরিবেশটাই বাঞ্ছারামদা (স্থানীয় তৃণমূল নেতা) ভালো করে রেখেছে যে ঘাসপাতা খেয়ে গরু হৃদপুষ্ট’। ব্যাস, দেখে কে! ভাইরাল রচনার গরুর রচনা।
রচনার ছবি বুকে সেঁটে ভোট-প্রচারে স্বামী
ওড়িয়া ছবির নায়ক সিদ্ধান্ত মোহান্তির সঙ্গে ঘর বেঁধছিলেন রচনা, টেকেনি দাম্পত্য। যদিও সেই নিয়ে স্পিকটি নট দিদি। বিজেপির টিকিটে ভোটে লড়ছেন প্রাক্তন। ওদিকে বিচ্ছেদের দীর্ঘ সময় পর প্রবাল বসুকে বিয়ে করেন রচনা। তাঁদের এক পুত্র প্রণীল বসু। তবে বরের সঙ্গে একছাদের তলায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে থাকেন না রচনা। কিন্তু খাতায়-কলমে দুজনের বিচ্ছেদ হয়নি। প্রচারের ফাঁকে ব্যক্তিগত কটাক্ষে জেরবার রচনা। শুনতে হয়েছে, ‘যে নিজের ঘর সামলাতে পারে না, সে একটা লোকসভা আসন কী করে সামলাবে’। তড়িঘড়ি রচনার প্রচারে এসে যোগ দেন স্বামী প্রবাল। জানান, সবসময় তিনি রচনার পাশে আছেন।
দিদি নম্বর ১ বিতর্ক
হুগলির রবীন্দ্রনগরের দেবীদাসতলার একটি স্টুডিওর সামনে গত বুধবার বিপুল ভিড় দেখা যায়। বিজেপির তরফে অভিযোগ করা হয় সেখানে নাকি দিদি নম্বর ওয়ানের অডিশন চলছে। অভিযোগ খারিজ করেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সেখানে অডিশন নয়, শ্যুটিং চলছে দিদি নম্বর ওয়ানের। সেই নিয়েও আপত্তি তোলেন লকেট। বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগ দিদি নম্বর ১ সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার নামে ভোট চাইছে তৃণমূল।
শেষদিন প্রচারে চেনা মেজাজে রচনা
সোমবার নির্বাচনের আগে শনিবার ছিল প্রচারের শেষদিন। এদিনও ধোঁয়া নিয়ে প্রশ্ন পিছু ছাড়ল না। ধোঁয়া কি দেখতে পেলেন? শোনামাত্রই হেসে ফেললেন তৃণমূল প্রার্থী। বললেন, ‘আজকে ধোঁয়ার জায়গায় নেই আমি। আজকে শুধু মানুষের হাসি মুখ দেখতে পেলাম। গত দেড়মাস ধরে মানুষের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করেছি। এবার উপরওয়ালা জানেন। যাই হোক না কেন প্রচুর মানুষের ভালোবাসা নিয়ে ফেরত যাব।’