তাঁকে নিয়ে যতই সমালোচনা হোক, ট্রোলিং হোক তাঁর জনপ্রিয়তা প্রশ্নাতীত। অভিনয় কেরিয়ারের সুবাদে তিনি যতটা জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তারচেয়েও বেশি দর্শক তাঁকে ভালোবেসেছে দিদি নম্বর ১-এর সঞ্চালক হিসাবে। কথা হচ্ছে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শোবিজ জগত পেরিয়ে এখন তিনি জনপ্রতিনিধিও। রচনার শো ‘দিদি নম্বর ১’ নতুন মাইলস্টোন ছুঁয়ে ফেলল। আরও পড়ুন-অক্টোবরে বিয়ে,মার্চে আসবে সন্তান! কাঞ্চনের সঙ্গে তুলনা ভুলে ‘ভবিষ্য়ত’ নিয়ে ব্য়স্ত রূপসা
দিদি নম্বর ১ সিজন ৯-এ হাজার পর্বের উদযাপন। আর সেই বিশেষ দিনে রচনার মঞ্চে দেখা মিলবে মিস জোজোর। দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব দুজনের। দিদি নম্বর ১-এর স্টেজে বাংলার দিদিদের সুখ-দুঃখের গল্প শোনেন রচনা। হিম্মত দেন প্রতিমুহূর্তে। এদিন নিজের জীবনযুদ্ধের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ভাসালেন রচনা। জোজো তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ঝুমঝুম ব্যানার্জি থেকে রচনা ব্যানাজি হওয়ার সফরনামা।
রচনা বলেন, ‘আমার বাবা-মা’ আমাকে খুব ছোট্ট একটা ফ্ল্যাটে মানুষ করেছিল। সব থেকে বড় স্বপ্ন ছিল বাবা-মাকে একটা ভালো ঘর করে দেব। যখন ফ্ল্যাটটা কিনলাম, বাবা-মা'র মুখে যে হাসিটা দেখেছিলাম, মনে হয়েছিল এই কষ্টটা সার্থক'। এই কথা বলতে বলতেই গলা ধরে আসে রচনার, চোখের জল বাধ মানেনি। কেঁদেই ফেলেন রচনা।
বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান তিনি। রচনার আসল নাম ঝুমঝুম বন্দ্যোপাধ্যায়। সাউথ সিটি কলেজে পড়বার সময় সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় যোগদান। মিস ইন্ডিয়ার মঞ্চে নজর কেড়েছিলেন রচনা। পরে বাংলা ছবির পর্দায় আসেন। পরিচালক সুখেন দাস সেলুলয়েডের জন্য তাঁর নাম বদলে রেখেছিলেন 'রচনা'। ১৯৯৩ সালে ‘দান প্রতিদান’ ছবিতে অভিনয় করে কেরিয়ার শুরু করেন রচনা। বাংলা ছবির পাশাপাশি ওড়িয়া ছবির জগতেও নব্বইয়ের দশকে সাড়া ফেলে দেন অভিনেত্রী। হিন্দি, তেলুগু, তামিল এবং কন্নড় ছবিতেও অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। অমিতাভ বচ্চনের বিপরীতে সূর্যবংশম ছবিতে অভিনয় করেছেন রচনা।
তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও হামেশা থেকেছে লাইমলাইটে। ওড়িয়া সুপারস্টার সিদ্ধান্তের সঙ্গে বিয়ে টেকেনি। এরপর প্রবাল বসুকে বিয়ে করেন রচনা। তাঁদের একমাত্র সন্তান প্রনীল। এই বছরই ক্লাস টুয়েলভের বোর্ড এক্সাম দেবে ছেলে। ছেলের জন্যই মূলত অভিনয় থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন রচনা। স্বামী প্রবালের সঙ্গে দীর্ঘদিন একছাদের তলায় না থাকলেও কাগজে কলমে আলাদা হননি তাঁরা। রচনার সুখ-দুঃখের অংশীদার প্রবাল।
চলতি বছরের গোড়াতেই রাজনীতির ময়দানে আসেন রচনা। হুগলি লোকসভা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত করেন লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। অভিনয় হোক বা সঞ্চালনা কিংবা রাজনীতি, রচনা হারতে শেখেনি!