HT Bangla Exclusive: একেন বাবুর সঙ্গে এবার একই ফ্রেমে রাজুদা। শুক্রবার হইচইয়ের সোশ্যাল পেজে একটি প্রোমো পোস্ট করা হয়। আসন্ন ওয়েব সিরিজ ‘পুরো পুরী একেন’-এ দেখা যাবে রাজুদা ও একেন বাবুকে। পোস্টটি নিজের ওয়ালে শেয়ার করেন অনির্বাণ। কিন্তু পোস্টের ক্যাপশন যেন সাম্প্রতিক বিতর্ককে কেন্দ্র করে লেখা। ‘আমাকে আগে post করতে হবে/ আমাকে না জেনে হলেও post করতে হবে/ আমাকে first হতে হবে/ আমি বেশী জানি/ আমি সব জানি/আমি সবকিছু নিয়ে প্রবন্ধ লিখি /গেলো গেলো/ ছি ছি / ইত্যাদি, প্রভৃতি, এবং ...’ — এই সেই ক্যাপশন। কিন্তু কার উদ্দেশ্যে এমন লিখলেন অনির্বাণ? কেন অসন্তুষ্ট অভিনেতা? স্পষ্ট না বললেও তাঁর ইঙ্গিত সম্ভবত সাংবাদিকদের দিকেই। যার মধ্যে HT বাংলাও থাকতে পারে। কেন এই অনুমান? বিস্তারিত বলা যাক। তার পরের অংশে এই ইঙ্গিতের উদ্দেশ্য নিয়েও রয়েছে কিছু কথা।
‘রাজুদার রিল যা বলছে…’
রবিবার সকাল সকাল রাজুদার অফিসিয়াল পেজে একটি রিল পোস্ট হল। রাজুদা বলছেন, ‘একটা ইনভাইট আছে ওয়েব সিরিজে…হইচইয়ে দেখা যাবে শিগগিরই।’ এর পরেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর হতে থাকে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাতেও রাজুদার মন্তব্যের ভিত্তিতে খবর হয়। ‘রাজুদাকে এবার ওয়েব সিরিজে দেখা যাবে’ — এই ছিল শিরোনামের মর্মার্থ। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে খবরে কোনও ভুল ছিল না। ওই দিন দুপুরে HT বাংলা প্রথম এক্সক্লুসিভ খবর দেয় — রাজুদাকে অনির্বাণ চক্রবর্তীর সঙ্গে একই ফ্রেমে দেখা যাবে। কিছু ‘সৌজন্য’ মেনেই নাম প্রকাশ করা হয় না সিরিজটির।
বিতর্কের সূত্রপাত যেখানে
রিলের ভিত্তিতে খবর প্রকাশিত হতেই দর্শকদের মধ্যে দুরকম মত দেখা যায়। এক পক্ষ রাজুদাকে ওয়েব সিরিজে নেওয়া হচ্ছে বলে খুশি। বস্তুত তাদের অনেকে রাজুদার ফ্যানও। আরেক পক্ষ অখুশি। তাদের বক্তব্য ‘রাজুদাকে দিয়ে পাবলিসিটির দরকার ছিল না।’, ‘শেষমেশ রাজুদা এত অবস্থা খারাপ?’ বিতর্কের সঙ্গে বিদ্রুপ ছিল। বিদ্রুপের সুর ছিল বিভিন্ন খবর ও সাংবাদিকদের পোস্টেও। এই পোস্ট, রিপোর্ট দেখেই কি অনির্বাণ বিরক্ত হন? এই অনুমানের সাপেক্ষে কিছু যুক্তি দেওয়া যাক।
HT বাংলার এক্স্ক্লুসিভ রিপোর্ট - HT Bangla Exclusive: রাজুদা আর ফেলুদার বন্ধু এবার এক ফ্রেমে! পকেট পরোটা খেয়ে কী বললেন অনির্বাণ
‘আপনাদের Headline and Bait!’
হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার এক্সক্লুসিভ রিপোর্টে বিদ্রুপ এড়িয়ে গোটা বিষয়টি ইতিবাচকভাবে তুলে ধরা হয়। খবর প্রকাশের আগে HT বাংলা অভিনেতার অভিজ্ঞতাও জানতে চেয়েছিল। কিন্তু হইচইয়ের শর্ত দেখিয়ে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। প্রকাশের পর খবরটি পড়ে অনির্বাণ চক্রবর্তী মেসেজে প্রতিক্রিয়া জানান, ‘উনি ওয়েব সিরিজ এ অভিনয় করেন নি। লেখার প্রথম অংশে ভুল লেখা আছে।…আপনাদের Headline and Bait!…আপনাদের উদ্দ্যেশ্য সফল। এটা নিয়ে খোঁচা দিয়ে কথা বলতে শুরু করে দিয়েছেন লোকজন!’ (বানান অপরিবর্তিত, যেহেতু ব্যক্তিগত প্রতিক্রিয়া, তাই সব কথা এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হল না)। প্রসঙ্গত, এখানে HT বাংলার সাংবাদিককে লক্ষ করে ‘আপনাদের’ শব্দ ব্যবহারের দুটো অর্থ হতে পারে। এক, গোটা HT বাংলাকে উদ্দেশ্য করে বলা; দুই, বিনোদন জগতের সাংবাদিকের উদ্দেশ্য করে বলা। দুটোই সাংবাদিকতা পেশায় থাকা যে কারওর জন্য অবমাননাকর।
HT বাংলার উদ্দেশ্য
HT বাংলার কোনও ‘উদ্দেশ্য’ ছিল না এক্সক্লুসিভ খবর করা ছাড়া। খবর বলেই তথ্যের প্রতি দায়বদ্ধতা আমাদের সবার প্রথমে। অনির্বাণের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে খবরটি ফের সম্পাদনা করা হয়। যা বেনজির পদক্ষেপ বললেও ভুল বলা হবে না। সাধারণ মানুষের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দিতেই এই সম্পাদনা। কিন্তু এর পরেও অনির্বাণ যে অসন্তুষ্ট, তা তাঁর গতকালের পোস্টে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
কেন দু'জনের মুখে দু'রকম তথ্য?
যেহেতু HT বাংলা প্রথম খবর দেয়, তাই ‘আমাকে আগে post করতে হবে/ আমাকে না জেনে হলেও post করতে হবে/ আমাকে first হতে হবে/’-এর কিছুটা ইঙ্গিত HT বাংলার দিকেও ছিল বলে ধরে নেওয়া যায়। আর এখানেই আসে মোক্ষম প্রশ্ন, শুটিং নিয়ে এই ধন্দ তৈরি হল কেন? রাজুদা বলছেন ওয়েব সিরিজ, অনির্বাণ বলছেন প্রোমো। খোঁজ করতে নেমেই HT বাংলার হাতে আসে একটি বিশেষ তথ্য। তা হল — এই সিরিজ শুট করার আগে কোনও চুক্তিপত্রে সই করানো হয়নি রাজুদাকে। ফলে রাজুদা মুখে শুনে যা জেনেছেন, ভিডিয়োতে তা-ই বলেছেন। একই কথা HT বাংলার এক্সক্লুসিভ রিপোর্টেও জানিয়েছেন।
হইচইয়ের পাবলিসিটি স্টান্ট?
HT বাংলাকে রাজুদা বলেছিলেন, ‘তাকে দিয়ে ওয়েব সিরিজের একটা দৃশ্য ও একটা প্রোমো শুট করানো হয়েছে।’ এখানেই আপত্তি তোলেন অনির্বাণ চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, রাজুদা শুধু প্রোমোতে আছেন। কিন্তু সেটা বোঝার উপায়? হইচইয়ের তরফে চুক্তিপত্র দেওয়া হলে কি এত বিতর্ক হত? ওয়েব সিরিজ না প্রোমোর শুট, চুক্তিপত্রে লেখা থাকলে রাজুদার হয়তো বুঝতে অসুবিধা হত না। অসুবিধা হত না সাংবাদিকদেরও। ‘ভুল’ খবর পেতেন না দর্শকরাও। এবার প্রশ্ন, হইচইয়ের তরফে কেন চুক্তিপত্র দেওয়া হল না? সূত্র মারফত খবর, এসব ‘ছোটখাটো’ কাজে চুক্তিপত্র দেওয়া হয় না। যখন বিতর্ক চরমে, তখনও হইচই কোনওরকম বিবৃতি দেয়নি। তাহলে কি বিতর্ক, বিভ্রান্তি জিইয়ে রেখে পাবলিসিটি করাই উদ্দেশ্য ছিল? আরেকটা তথ্য পাঠকদের জন্য — বিবৃতি না দিলেও রাজুদার কাছে ‘সাসপেন্স জিইয়ে রেখে’ আরও রিল বানানোর পরামর্শ এসেছে, হইচইয়ের তরফে!
একেন বাবুর ‘জাত’ বাঁচানোর চেষ্টা?
HT বাংলার সাংবাদিককে অনির্বাণ বলেছিলেন, ‘এটা নিয়ে খোঁচা দিয়ে কথা বলতে শুরু করে দিয়েছেন লোকজন।’ অনির্বাণের এই মন্তব্য কি শুধুই ‘ভুল’ খবরের প্রেক্ষিতে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে বলে? নাকি রাজুদার উপস্থিতি কিছু দর্শকের অপছন্দ বলে তিনি বারবার প্রমাণ করতে চাইলেন, রাজুদা সেভাবে কিছুই করেননি? শুধু একটা প্রোমো করেছেন। বিভ্রান্তি যদি কারণ হয়, HT বাংলার প্রতিবেদনের সমর্থনে উপরে তথ্যপ্রমাণসহ সব উল্লেখ করা হল। আর দর্শকের অপছন্দ যদি কারণ হয়, তবে প্রশ্ন থাকবে, রাজুদাকে কি বেমানান মনে হয় একেন বাবুরও? যদি ‘পুরো পুরী একেন’-র ওরকম ছোট একটি দৃশ্যে রাজুদা সত্যিই থাকতেন, তাহলে কি ক্ষতি হয়ে যেত সিরিজটির? নাকি বিদ্রুপ এড়াতে গিয়ে নিজেও কিছুটা প্রচ্ছন্ন বিদ্রুপ উপহার দিলেন পরোটা বিক্রেতা রাজুদাকে, পাবলিসিটির বিনিময়ে? এটা কিন্তু প্রশ্ন (শিরোনামও)। অনির্বাণ যদি পড়েন, আশা করি বুঝতে পারবেন, এতে সাংবাদিকের তরফে কোনও ‘দাবি’ করা হচ্ছে না।