রাজু শ্রীবাস্তব গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর প্রয়াত হন। জিমে শরীর চর্চা করতে অসুস্থ হয়ে পড়েন এই জনপ্রিয় কমেডিয়ান। এরপর বেশ কিছুদিন তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তারপর ২১ সেপ্টেম্বর তিনি না ফেরার দেশে চলে যান। তাঁর মৃত্যুর পর নতুন করে অতিরিক্ত শরীরচর্চা, জিম, ইত্যাদিকে দায়ী করা হতে থাকে। এবার সেই বিষয়ে সরব হলেন রাজু শ্রীবাস্তবের মেয়ে অন্তরা। ইটাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নানা অজানা কথা জানালেন অন্তরা।
অন্তরা বলেন যখন তিনি জানতে পারেন যে তাঁর বাবা আর নেই তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন তাঁর কাকা, কাজু বুঝি চলে গেছেন। কিন্তু আসলে যে তাঁর বাবাই নেই সেটা তিনি আশা করেননি।
বাবার বিষয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, 'বাবা আমাদের অনেক জায়গায় নিয়ে যেতেন ছোটবেলায়, রেস্তরাঁ, সিনেমা হল। তিনি চেষ্টা করতেন প্রতি সপ্তাহে যাতে আমরা অন্তত একটা করে ছবি দেখতে পারি। আমার মনে আছে তখন আমার সবে ৯ বছর বয়স তখন তিনি আমায় একা ব্যাংকে যেতে বলেছিলেন।'
রাজু নাকি ডায়রি লিখতেন রোজ। সেখানে গোটা দিন তাঁর কী কী করণীয় আছে সেগুলো সব লিখে রাখতেন বলেই জানান তাঁর মেয়ে। এবং একই সঙ্গে ডায়রিতে যা যা লিখতেন সেগুলো সম্পন্ন করার চেষ্টাও করতেন।
অন্তরা জানান, 'বাবা তাঁর লড়াইয়ের কথা আমার আর ভাইয়ের সঙ্গে ভাগ করে নিতেন। তিনি তাঁর সব আদর্শ, মূল্যবোধ আমাদের দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি শিখিয়েছেন সফল হতে গেলে কোন কোন গুণ রাখতেই হয়।' একই সঙ্গে তিনি বলেন, 'বাবা সবসময় বলতেন একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমাদের বাড়ি ফিরে আসতে। তিনি বাস্তবটা বুঝতে বলতেন। গোটা দুনিয়ায় কী হচ্ছে না হচ্ছে সেটার খবর রাখতে বলতেন।'
কিন্তু বাবার মৃত্যু নিয়ে তাঁর কী বক্তব্য, সত্যি কি জিমের কারণেই তাঁর বাবার মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি মনে করেন? অন্তরার কথায়, 'ওঁর সঙ্গে যা হয়েছে পুরোটাই দুর্ভাগ্য। একটা দুর্ঘটনা। তাঁর স্বাস্থ্য এমনিও বিশেষ ভালো ছিল না। খামোকা জিমকে দোষ দিয়ে লাভ নেই।'
বাবার সঙ্গে শেষ তাঁর কবে কথা হয়? এই প্রশ্নের উত্তর তিনি ইটাইমসকে বলেন, 'জীবন আগে থেকে বুঝতেই দেয় না কোনটা শেষবার। বাবা দশদিনের জন্য বাইরে গিয়েছিল। আমার জন্মদিনের পরের দিনই লাফটার চ্যালেঞ্জের শ্যুট ছিল তাঁর। আমার জন্মদিনের দিনই আমরা সবাই খুব মজা করেছিলাম। জোকস বলেছিলাম।' কখন তিনি জানতে পারেন যে বাবা আর নেই? এই বিষয়ে তিনি বলেন, 'আমি, ভাই আর মা মুম্বইতে ছিলাম। কিছু কাজ নিয়ে বেড়িয়েছিলাম আমি। ১২টা থেকে আমার একটা মিটিং ছিল। তখনই মা ফোন করে জানায় খবরটা।'
তাঁর হার্টের অসুখ ধরা পড়ার পর কি তিনি শরীরচর্চা করা কমাননি? এই বিষয়ে তিনি বলেন, 'হ্যাঁ, দিন, সময় দুই-ই কমিয়েছিলেন। ইনফ্যাক্ট আমি যখন খবর পাই তখন ভেবেছিলাম আমার কাকু মারা গিয়েছেন। ওঁর নাম কাজু। খবরটা শুনে কী করব না করব বুঝে উঠতে পারিনি। তখন কাকুও হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
বর্তমানে অন্তরা নিজে কী করছেন? এই বিষয়ে তিনি জানান যে তিনি বেশ কিছু বলিউডি ছবিতে অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টরের কাজ করেছেন, যেমন ভদকা ডায়রিজ, পাল্টান, ইত্যাদি।