নিজেদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ভীষণ চাপা রানি মুখোপাধ্যায় ও আদিত্য চোপড়া। নিজেদের দাম্পত্য জীবন হোক কিংবা প্রেম- প্রকাশ্যে আজ পর্যন্ত কোনওকিছু নিয়েই মুখ খোলেননি বলিউডের অন্যতম খ্যাতনামা প্রযোজক আদিত্য চোপড়া বা অভিনেত্রী রানি মুখোপাধ্যায়। রবিবার ৪৩-এ পা দিলেন রানি। সোশ্যাল মিডিয়ায় একসঙ্গে রানি-আদিত্যর ছবিও বিরল। এক কথায় আদিত্য চোপড়াকে বরাবরই ‘অদৃশ্য বলিউড ব্যক্তিত্ব’ হিসাবে ধরা হয়।
বলিউডে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন ‘রাজা কি আয়েগি বারাত’ দিয়ে, তখন এই বঙ্গ সুন্দরীর বয়স মাত্র ১৬। অভিনেত্রীর কেরিয়ারের মোড় ঘুরিয়েছিল করণ জোহরের প্রথম ছবি ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’। একথা অনেকেরই অজানা এই ছবির জন্য বন্ধু করণকে রানির নাম সাজেস্ট করেছিলেন আদিত্য চোপড়া।
নিজেদের সম্পর্কের সমীরকণ নিয়ে কোনওদিন মুখ খোলেননি রানি-আদিত্য, প্রায় সাত বছর ধরে রানির সঙ্গে সুখে সংসার করেছেন যশ চোপড়া প্রযোজনা সংস্থার কর্ণধার। এর আগে পায়েল খান্নার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন তিনি, রানির বিরুদ্ধে আদিত্যর ঘরভাঙারও অভিযোগ উঠছে। তবে সব অভিযোগ দূরে ঠেলে পূর্ণতা পেয়েছে এই প্রেম কাহিনি।
খসখসে গলার স্বর, স্বপ্ল উচ্চতা নিয়ে টিনার মতো গ্ল্যামারাস চরিত্রে অভিনয় করবেন রানি, এটা বিশ্বাস করতে পারেননি করণও। তবে আদিত্য চোপড়া বিশ্বাস দেখিয়েছিলেন, বন্ধুর কথা শুনেই রানিকে কুছ কুছ হোতা হ্যায়তে কাস্ট করেন করণ। মূলত ‘রাজা কি আয়েগি বারাত’ দেখেই রানির প্রেমে পড়েছিলেন আদিত্য, যদিও নিজের অনুভূতিটা তখন বুঝে উঠতে পারেননি। যদিও বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। ১৯৯৫ সালে মুম্বইয়ের এক রেঁস্তোরায় রানিকে প্রথম দেখেন আদিত্য, যদিও কোনও কথাবার্তা হয়নি দুজনের।
২০০১ সালে পায়েল খান্নাকে বিয়ে করেন আদিত্য, ২০০৯ সালে এই সম্পর্ক ভেঙে যায়। এরপর থেকেই রানি-আদিত্যর প্রেমের গুঞ্জন ডানা মেলতে শুরু করে। অনেকেই দাবি করে, রানি প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার জেরেই পায়েলকে ডিভোর্স দেন আদিত্য। রানি এক সাক্ষাত্কারে জানিয়েছেন, ‘আমি আদিত্যকে ডেট করা শুরু করি তখনও ও ডিভোর্সি, এবং আমি যশ রাজের কোনও ছবিতেও কাজ করছিলাম না। প্রযোজকের সঙ্গে প্রেম আমার ধাতে নেই’।
যশ চোপড়া ফিল্মসের বহু ছবিতে অভিনয় করেছেন রানি, ‘হাম তুম’, ‘বীর জারা’, ‘বান্টি অউর বাবলি’ থেকে ‘মর্দানি', ‘মর্দানি ২’, তবে প্রযোজক আদিত্যর সঙ্গে কাজ করলেও কোনওদিনই রানির কোনও ছবি পরিচালনা করেননি আদিত্য, বিয়ের আগও নয়- পরেও নয়।
২০১৪ সালের এপ্রিলে ইতালিতে সাত পাকে বাঁধা পড়েন রানি-আদিত্য। কেবলমাত্র দুজনের পরিবার এবং হাতেগোনা বন্ধুরাই এই বিয়ের কথা জানত। জানা যায়, এই বিয়ের অতিথি তালিকা ছিল মাত্র ১২ জন। আজ পর্যন্ত রানি-আদিত্যর বিয়ের কোনও ছবি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি। এতটাই প্রাইভেট পার্সন আদিত্য চোপড়া।
নিজেদের দাম্পত্য সম্পর্ক নিয়ে বলতে গিয়ে এক সাক্ষাত্কারে রানি জানান, ‘আমরা হলাম শিব-পার্বতীর মতো। শিবের মতোই শান্ত আদিত্য, এবং এক নারীর প্রতি তাঁর নিষ্ঠা, আমার বাইরে অন্য কাউকে সে ভালোবাসে না। আমিও পার্বতীর মতো ওর বাইরে কাউকে দেখতে পাই না। আমার বাবা-মা বেজায় খুশি ওর মতো জামাই পেয়ে’।
২০১৫ সালে জন্ম হয় আদিত্য-রানির একমাত্র সন্তান আদিরার। বাবার মতোই আদিরার ছবিও বিরল।