রণবীর সিং যে ফুটবলের দারুণ ভক্ত সেকথা তাঁর ফ্যান মাত্রই জানেন। ছোট থেকেই আর্সেনাল ক্লাবের দারুণ ভক্ত তিনি।স্বভাবতই, ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ 'বাজিরাও'-এর খুব প্রিয়। জানিয়ে রাখা ভালো, এই মুহূর্তে চুটিয়ে ইংল্যান্ড ঘুরে বেড়াচ্ছেন রণবীর। না,কোনও ছবির শ্যুটিংয়ের জন্য নয় কিন্তু। এই ভরা ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ-এর মরশুমে সেখানে চুটিয়ে ফুটবল খেলা উপভোগ করছেন তিনি। এবার সেখান থেকেই ফুটবলের প্রতি তাঁর ভালোবাসার কথা, প্রিয় ফুটবলার তথা 'আর্সেনাল' ক্লাবে কিংবদন্তি থিয়োরি অঁরি নিয়েও নানান কথা, স্মৃতি রণবীর শেয়ার করলেন হিন্দুস্তান টাইমস-এর সঙ্গে।
আর্সেনাল ভক্ত হয়েও কিন্তু প্রথম তাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব টটেনহাম হটস্পার-এর স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছিলেন এই বলি-তারকা। 'শত্রু শিবির' থেকেই হিন্দুস্তান টাইমস-এর সঙ্গে গল্প আড্ডা দিলেন 'বেফিকরে' তারকা। এরপর কথায় কথায় তিনি জানালেন তাঁর সবথেকে প্রিয় ফুটবলার থিয়োরি অঁরি-র কথা। ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপজয়ী এই ফুটবলার ১৯৯৯-২০০৭ সাল পর্যন্ত টানা খেলেছেন আর্সেনাল ক্লাবের হয়ে। রণবীর জানান কীভাবে অঁরির সঙ্গে তাঁর মোলাকাত এক লহমায় বদলে দিয়েছিল নিজের ফ্যানদের প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি।
বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ফুটবলার বলা হয় অঁরি-কে। ২০১৬ সালে একটি সংস্থার বিজ্ঞাপনী প্রচারে মুম্বইয়ে হাজির হয়েছিলেন অঁরি। রণবীর ছিলেন সেই সংস্থার প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। তবে তাতে কিছু যায় আসেনি এই বলি-তারকার। নিজের যোগাযোগ খাটিয়ে সাক্ষাৎ করেছিলেন নিজের ছোটবেলার 'সুপারহিরো'-র সঙ্গে। এরপর অঁরি-র সামনে হাজির হয়ে দারুণ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন রণবীর। হাউহাউ করে কেঁদে ফেলেন। রণবীরের কথায়, 'চোখের জল বাঁধ মানছিল না। বিশ্বাস করুন, ভিতর থেকে অদ্ভুত আনন্দ হচ্ছিল। এক লহমায় ছোটবেলায় অঁরিকে দেখার সেই যে উত্তেজনা, সেইসব হুড়মুড় করে ফিরে এসেছিল স্মৃতিতে।'
এরপর অঁরি যেভাবের তাঁকে সামলেছিলেন, সেই ব্যবহার পেয়ে ও দেখে নিজের ফ্যানদের প্রতি এতদিনের তাঁর নিজ্বস দৃষ্টিভঙ্গি এক ঝটকায় বদলে গিয়েছিল রণবীর-এর। তারকা-অভিনেতার কথায়, 'আমার সঙ্গে ভীষণ নর্মব্যবহার করেছিলেন অঁরি। ভীষণ ধৈর্য্য নিয়ে আমাকে সামলেছিলেন। বুঝেছিলাম, এরম আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব হয়েও দারুণ দয়া -ময় জমে রয়েছে অঁরির মনে। মুগ্ধ হয়েছিলাম। আমার বন্ধুদের সঙ্গেও ওঁর দারুণ ব্যবহার আজও ভুলিনি। এরপর থেকে নিজের ফ্যানদের সঙ্গেও আরও দয়ালু ও ধৈর্য্যশীল হয়েছিলাম। ওই ঘটনার আগে আমাকে দেখে কেউ কান্নাকাটি করলে কিংবা হাতে পিঠে আমার নাম ট্যাটু করতে দেখলে আনন্দ পেতাম নিশ্চয়ই, কিন্তু মনেও হত এটা বাড়াবাড়ি। অথচ অঁরিকে দেখে একজন ছোট্ট ছেলের মতো যেভাবে হাঁউমাঁউ করে কেঁদে উঠেছিলাম তখন বুঝেছিলাম কেন আমার ফ্যানরা আমাকে দেখলে ওরকম করে। নিমিষে তাঁদের জন্য আমার দৃষ্টিভঙ্গিটাই বদলে গিয়েছিল। নিজের স্বপ্নের নায়কের থেকে ওরকম উষ্ণ ব্যবহার পেয়ে গেলে গিয়েছিলাম। সেটি থেকে শিক্ষা নিয়েছিলাম। এরপর থেকে চেয়েছি ওই ভালোটুকুর সামান্য অংশ যেন আমিও ছড়াতে পারি।'