অভিনেতা হিসাবে যথেষ্ঠ জনপ্রিয়তা পেয়েছেন, আবার রাজনীতিবিদ হিসাবেও প্রতিষ্ঠিত নাম রবি কিষাণ। তবে জীবনের শুরুতেই এমন সাফল্য আসেনি। আবার সোনার চামচ মুখে নিয়েও জন্মাননি রবি কিষাণ। তাই জীবনের শুরুর দিকে বেশ কষ্ট করেই বড় হয়েছেন তিনি। সম্প্রতি রবি কিষাণ তাঁর জীবনের শুরুর দিকে কঠিন দিনগুলি নিয়ে মুখ খুলেছেন। বেড়ে ওঠার সময় তিনি কীভাবে দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করেছেন সেকথাগুলি নিয়ে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে খোলামেলা কথা বলেছেন রবি।
গভীর পরিবার থেকে আসা, রবি কিষাণ জানিয়েছেন, একদিন তাঁর পরিবার মাটির কুঁড়েঘরে বাস করত। পরিবারের ১২ জন সদস্য এক প্লেট খিচুড়ি ভাগ করে খেত। তিনি জানিয়েছেন, যে দারিদ্র্য তার লালন-পালনে এত গভীরভাবে জুড়ে ছিল যে একদিন সাফল্য পাওয়ার পরও বিলাসবহুল রেস্তোঁরায় তিনি অবাধেই চলে যেতে পেরেছেন এমনটা নয়। তাঁর অকপট স্বীকারোক্তি, ‘আমার মধ্যবিত্ত মানসিকতা এখনও আমাকে পিছিয়ে রাখে’।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে শুভঙ্কর মিশ্রের সঙ্গে কথা বলার সময় রবি ব্যাখ্যা করেছেন কীভাবে তিনি এই কঠিন দারিদ্র থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘আমি একদিন মাটির কুঁড়েঘরে থাকতাম। আমাদের প্রত্যেকের ঘাড়েই দায়িত্ব এসে পড়েছিল, যখন আমাদের চাষের জমি বন্ধক রাখা হয়েছিল। আমি প্রচণ্ড দারিদ্র্য দেখেছ। এমনও দিন গিয়েছে যেদিন পরিবারের ১২ জন সদস্য এক প্লেট জলের মতো পাতলা খিচুড়ি ভাগাভাগি করে খেয়েছেন।’
আরও পড়ুন-'বাবা-মায়ের মতো এক্কেবারেই নয়, রাহাকে দেখতে পিসিমা করিনার মতো'! বলছে নেটপাড়া
আরও পড়ুন-'৫নং স্বপ্নময় লেন'-এর 'মিষ্টি' এবার আরবাজ খানের ছবিতে, কোথায় দেখা যাবে পায়েলকে?
এখানেই শেষ নয়, মুম্বইয়ে এসেও শুরুর দিকে লড়াই করতে হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘মুম্বইয়ে এসে শুরুর দিকে বড়া পাও এবং চা খেয়েও কাটিয়েছি। কোনও সম্মানজনক বেতন ছাড়াই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ১৫ বছর কাটিয়ে দিয়েছি। শুরুর দিকে আমি চরম অপমানের সম্মুখীন হয়েছি। যদিও এটা অনেক লোকই বেশকয়েকবার এই অসম্মানের সম্মুখীন হন। তবে আমি হাজার হাজার বার এটার মুখোমুখি হয়েছি। এই সমস্ত কিছুই আমার ব্যক্তিত্বকে তৈরি করেছেন। আজ আমি যেটা এই সবকিছুর জন্য।' রবি কিষাণ বলেন, তিনি বিভিন্ন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে মোট 750 টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন। আবার বর্তমানে তিনি একজন বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছেন।
রবি আরও বলেন, জীবনের এই পর্যায়ে এসেও তিনি মিতব্যয়ি। তাঁর কথায়, ‘আমি আজও যখন সাত তারা হোটেলে যাই, তখনও আমি দামি খাবার অর্ডার করতে পারি না, টাকাটা যদি অন্য কেউ দিয়ে দেন তাহলেও না। আমি এখনও খিচুড়ি খাই। আমি আমার এখনও জামাকাপড় লন্ড্রিতে পাঠাই না, বাড়ি ফিরে সেগুলি নিজেই ধুয়ে ফেলি। দারিদ্র্যের সেই অনুভূতি এখনও আমার মধ্যে রয়ে গেছে। মধ্যবিত্ত রবি কিষাণটা আমাকে এখনও ছেড়ে যায়নি।’
রবি কিষাণ বলেন, তিনি নিজের জন্য ব্যয় না করলেও পরিবারের জন্য কোনও কৃপণতা করেন না। তাঁর কথায়, ‘আমি ওদের চাহিদা পূরণ করতে পেরে খুশি, তবে নিজের জন্য ব্যয় করতে পারি না। সাধারণত আমার পরিবারই আমাকে জামাকাপড়, ফোন বা অন্যান্য বিলাসবহুল জিনিস কিনে দেয়।’