কদিন আগেই নবান্নে টলিউডের অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তীকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন মতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে মহিলাদের উপর হওয়া যৌন হেনস্থা, কুপ্রস্তাব, শ্লীলতাহানি-র মতো বিষয় নিয়ে কথা বলেন অভিনেত্রী আর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সেদিন নবান্ন থেকে ফিরে, একটি পোস্ট করে ঋতাভরী জানিয়েছিলেন, বাংলা ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে চলা এই অন্ধকারকে আলোর সামনে আনতে একটি কমিটি গঠন করা হবে। এখন সূত্রের খবর, টলিউডে 'আত্মশ্রী' তৈরি করতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কমিটির মাথায় থাকবেন অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি। মহিলা শিল্পীদের উপর হওয়া যৌন হেনস্থা ও লিঙ্গ বৈষম্যের অভিযোগ খতিয়ে দেখবে এই কমিটি।
আরজি কর নির্যাতিতার বিচার চেয়ে যখন সারা দেশ উত্তাল, তখনই সরব হয়েছেন টলিউডের শিল্পীরাও। একের পর এক হেনস্থা ও নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে মুখ খুলছেন তাঁরা। এমনকী, টলিউডের পরিচালক অরিন্দম শীলকে তো সাসপেন্ডও করে দিয়েছে, ডিরেক্টরস গিল্ড। একাধিক প্রযোজকের নামও উঠে আসছে এই নিয়ে।
কদিন আগেই ‘মিষ্টি মোড়কের যৌনপল্লী’ বলে টলিউডকে অভিহিত করে সোশ্যাল মিডিয়ায় খোলা চিঠি লিখেছিলেন ঋতাভরী। তাতেই সাড়া মিলেছিল। এক সংবাদমাধ্যমকে অভিনেত্রী বলেছিলেন, ‘ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে আমরা যুদ্ধ করছি (আরজি করের জন্য), যাঁরা শিকারী তাদের বিরুদ্ধে। বাইরে থেকে দেখলাম, এখানে মোমবাতি মিছিলে হাঁটছে, তার মধ্যে এমন অনেক মুখ রয়েছে যাদের আমি ব্যক্তিগতভাবে জানি, যে তারা টলিউডে মেয়েদের কোন চোখে দেখে, কীভাবে ব্যবহার করে! আর তখনই কাকতালীয়ভাবে হেমা কমিটির রিপোর্টটা আসে।’ এরপরই সেই পোস্ট বলে জানিয়েছিলেন বহুরূপী-নায়িকা।
এই প্রসঙ্গে আরও বলেছিলেন, ‘তখন সহ-অভিনেত্রীদের উদ্দেশে ওই পোস্ট করেছিলাম যে, চলো এদের মুখোশ খুলে দিই। সেসময় অনেকের কাছ থেকেই সাড়া পেয়েছি। এখন বড় বিষয় নিশ্চয়ই আর জি কর কাণ্ড, তার সঙ্গে নারী সুরক্ষার দিকটাও প্রচণ্ড জরুরি। হেমা কমিটির রিপোর্ট যখন বেরিয়েছে এই সময়ে, তখনই আমার মনে হয়, আমাদের এটা নিয়ে এগোতে হবে। নাউ আর নেভার। তাই আমি সিএমকে ট্যাগ করেছিলাম।’
নবান্নে হওয়া বৈঠকের পর ঋতাভরী সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছিলেন, ‘গতকাল মুখ্যমন্ত্রী হেমা কমিটির ন্যায় বাংলাতে একটি কমিটি করার ডাকে সাড়া দেন। আমার অনুরোধ এই কমিটিতে কোনও সিনেমা ব্যক্তিত্ব বা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থাকবে না, শোনা হয়। নিরপেক্ষ ৫ সদস্যের একটি কমিটি গড়া হয়েছে, এক প্রাক্তন বিচারপতিকে মুখ্য দায়িত্বে নিয়ে। এই মহিলারা সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে, ডাক্তার থেকে আইনজীবী, যারা বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে শ্লীলতাহানির বিষয়টা খতিয়ে দেখবেন। এবং একটি রিপোর্ট জমা দেবেন। দোষীদের মুখোশ খোলার প্রথম পদক্ষেপ এটি।’