রবিবার সাত সকালে রিয়ার বাড়িতে হাজির হয়ে সুশান্ত সিং রাজপুত মামলার মূল অভিযুক্তর হাতে সমন ধরায় এনসিবি। পৌঁছেছিলেন এনসিবির জয়েন্ট ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়ে। এরপর বেলা সোয়া এগারোটা নাগাদ এনসিবির দফতরের উদ্দেশ্যে নিজের গাড়িতেই রওনা দেন রিয়া চক্রবর্তী। মুম্বই পুলিশের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যেই বেলা ১২টার কিছু পরে রিয়া হাজির হন ব্যালাড এসটেটে এনসিবির দফতরের সামনে। গাড়ি থেকে নামতেই ২৮ বছর বয়সী এই নায়িকাকে ঘিরে ধরল সংবাদমাধ্যম। ‘মাদকচক্রের সঙ্গে আপনার যোগ কী?’, ‘আপনি কি সুশান্তকে ড্রাগ দিতেন?' এই সব প্রশ্নবাণের মধ্যেই রিয়াকে এনসিবি দফতরের ভিতরে ঢোকাতে হিমসিম খেল মুম্বই পুলিশ।
সেই ছবি সামনে আসতেই টুইটারে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন অভিনেত্রী রিচা চাড্ডা। করোনার আবহে কীভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবার নিয়ম লঙ্ঘন করা হচ্ছে তা দেখে হতবাক অভিনেত্রী। তিনি লেখেন, ‘সোশ্যাল ডিসট্যানসিং চুলোয় যাক’।
গোহর খানও এই ভিডিয়ো শেয়ার করে লেখেন, ‘আমি জীবনে দেখিনি কোনও দাগী অপরাধীর সঙ্গেও এইরকম ব্যবহার করা হচ্ছে তাদের দোষ প্রমাণ হয়ে যাওয়ার পরেও! দয়া করে দোষ প্রমাণ হতে দিন!! মিডিয়া যেভাবে ওর সঙ্গে ব্যবহার করছে তা অত্যন্ত নক্কারজনক’। তিনি যোগ করেন, ‘কারা ওই ক্যামেরামেনগুলো, একদম অশিক্ষিত! এবার কী কোনও মেয়ের মান-সম্মান বলে কিছু থাকবে না’।
এনসিবির তরফে জানানো হয়েছে সুশান্ত মৃত্যু মামলার মূল অভিযুক্তকে নিজেদের তদন্ত প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য জেরা করতে চায় তাঁরা। সুশান্ত মামলার সঙ্গে জড়িত মাদককাণ্ডের তদন্তে নেমে প্রয়াত অভিনেতার মৃত্যু মামলার দুই অভিযুক্তকে আগেই গ্রেফতার করেছে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। শুক্রবার রাতেই গ্রেফতার হন রিয়ার ভাই শৌভিক চক্রবর্তী এবং সুশান্তের হাউজ ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডা। শনিবার রাতে গ্রেফতার করা হয় মামলার অন্যতম সন্দেহভাজন সুশান্তের পরিচারক দীপেশ সাওয়ান্তকে। যে ১৪ জুনের দিন হাজির ছিল সুশান্তের অ্যাপার্টমেন্টে।
কেন্দ্রীয় সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে শৌভিক, মিরান্ডা, দীপেশ সকলের সঙ্গে রিয়াকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে চায় তাঁরা। এই মামলায় অভিযুক্তদের ইলেকট্রনিক ডাটা এভিডেন্স খতিয়ে দেখছে এনসিবি। যেখানে উঠে এসেছে নিষিদ্ধ মাদক ব্যবহার এবং তা পাচারের কাজেও যুক্ত ছিল অভিযুক্তরা।
যদিও সিবিআই, এনসিবির তদন্তের মুখোমুখি হওয়ার আগে একাধিক টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে রিয়া দাবি করেছেন, ‘আমি জীবনে কোনওদিনই ড্রাগ নিইনি। রক্ত পরীক্ষার জন্য আমি তৈরি’।
রিয়াকে এই দলিল আজ প্রমাণ করতে হবে এনসিবির আধিকারিকদের সামনে, তা না হলে রিয়া চক্রবর্তীর গ্রেফতার হওয়া আজ কার্যত নিশ্চিত। এমনকি রিয়া রিয়ার আইনজীবী সতীশ মানেসিন্ধে এদিন বিবৃতিতে জানান, ''রিয়া গ্রেফতার জন্য প্রস্তুত কারণ এখানে ডাইনির খোঁজ চলছে। যদি কাউকে ভালোবাসা অপরাধ হয় তাহলে নিজের ভালোবাসার জন্য ফল ভোগ করতে তৈরি রিয়া। যেহেতু ও নির্দোষ তাই এখনও পর্যন্ত কোনও আদালতে আগাম জামিনের জন্য আবেদন জানাননি রিয়া, বিহার পুলিশ, সিবিআই, ইডি এবং এনসিবিতে ওর বিরুদ্ধে দায়ের মিথ্যা মামলায়'।