সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর মামলায় রিয়া চক্রবর্তী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ এনেছেন সুশান্তের বাবা কেকে সিং। সেই এফআইআরের ভিত্তিতেই স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এই মামলার রিয়া ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরূপের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। গতকালই রিয়া চক্রবর্তীকে ই-মেল ও হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সমন পাঠিয়েছে ইডি। শুক্রবার সকাল ১১টায় ইডির দফতরে হাজিরা দিতে হবে রিয়াকে। সুশান্ত সিং রাজপুতের গার্লফ্রেন্ড রিয়ার বিরুদ্ধে ১৫ কোটি টাকা তছরূপের অভিযোগ এনেছে সুশান্তের পরিবার।
এদিন ইডির জেরায় বেশকিছু কঠিন প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে সুশান্ত সিং রাজপুতের গার্লফ্রেন্ডকে। টাইমস নাওয়ের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে ২০১৮-২০১৯ অর্থবর্ষে রিয়া চক্রবর্তীর আয় ছিল মাত্র ১৪ কোটি টাকা। তেমনই বলছে তাঁর ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন (ITR) ফাইল। সেই রেকর্ড ঘেঁটে দেখা গেছে গত কয়েক বছরে রিয়ার আয় ১০ লক্ষ থেকে বেড়ে ১২ লক্ষ এবং তারপর ১৪ লক্ষ টাকা হয়েছে।
এত কম টাকা আয় করা সত্ত্বেও সম্প্রতি নাকি রিয়া মুম্বইয়ে দুটি কোটি কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি কেনেন। একটি সম্পত্তি রিয়ার নিজের নামে, অন্যটি রিয়ার পরিবারের এক সদস্যের নামে। সেই টাকা কোথা থেকে এল? জানতে চাইবে ইডি।
ইডি মধ্যেই সেই সম্পত্তির কাগজপত্র চেয়ে পাঠিয়েছে ইডি, যা আজকের মধ্যেই হাতে পাবেন তদন্তকারীরা।
সুশান্ত সিং রাজপুত প্রতিষ্ঠিত দুটি সংস্থার ডিরেক্টারের পদেও রয়েছেন রিয়া ও তাঁর ভাই শৌভিক চক্রবর্তী এবং বাবা ইন্দ্রজিত। গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছর জানুয়ারির মধ্যে এই দুটি কোম্পানি শুরু করেন সুশান্ত। এই সংস্থাগুলির আর্থিক লেনদেন খতিয়ে দেখছে ইডি। পাশাপাশি এই প্রশ্ন উঠে আসছে, যদি সেই সময় সুশান্তের মানসিক অবসাদ সংক্রান্ত চিকিত্সা চলছিল, যেমনটা রিয়া দাবি করছেন-তাহলে সেই সময় কীভাবে দুটি কোম্পানি শুরু করলেন সুশান্ত এবং তাঁর ডিরেক্টর পদে রইলেন রিয়া ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। ইডির প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে এই কোম্পানি গুলির কোনও কর্মী নেই। তাহলে
ইতিমধ্যেই সুশান্তের চার্টার অ্যাকাউন্টান্ট, সন্দীপ শ্রীধরের বয়ান রেকর্ড করেছে ইডি। যদিও সূত্রের খবর সেই বয়ানে সন্তুষ্ট নন তদন্তকারীরা। বৃহস্পতিবার রিযার চার্টার অ্যাকাউন্টান্টকেও জেরা করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা।
এই মামলায় গতকাল ইডির প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রিয়া চক্রবর্তী ঘনিষ্ঠ স্যামুয়েল মিরান্ডাকে। যিনি সুশান্তের হাউজ ম্যানেজার ছিলেন এবং উল্লেখ্য ১৪ জুন সুশান্তের মৃত্যুর সময়ই কার্টার রোডের ওই অ্যাপার্টমেন্টেই ছিলেন মিরান্ডা। সুশান্তের ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্টে স্যামুয়েলের নাম উঠে আসায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি।
ই-মেল ও হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে রিয়া চক্রবর্তীর কাছে সমন পাঠিয়েছে ইডি। এখনও কোনওরকম জবাব আসেনি, বলছে ইন্ডিয়া টুডেতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন।