সোমবার বান্দ্রা পুলিশ থানায় ৬ ঘন্টা ধরে সুশান্তের দুই দিদি, প্রিয়াঙ্কা সিং এবং মীতু সিং ও চিকিত্সক তরুণ কুমারের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করলেন রিয়া চক্রবর্তী। তবে এই এফআইআরকে অবৈধ এবং সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অবমাননা বলে উল্লেখ করলেন সুশান্তের পরিবারের আইনজীবী বিকাশ সিং। তাঁর অভিযোগ কোনওভাবেই সুশান্ত মামলার মূল অভিযুক্তর অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করতে পারে না মুম্বই পুলিশ পুলিশ। তিনি বলেন, 'বান্দ্রা পুলিশ স্টেশন তো রিয়া চক্রবর্তীর দ্বিতীয় বাড়ি বলে মনে হচ্ছে, যে কোনও ঘটনায় রিয়া দৌড়ে পুলিশ থানায় চলে যায় এবং ঘন্টার পর ঘন্টা থানায় বসে থাকে এবং ওকে খুশি করতেই মুম্বই পুলিশ ওর তরফে লাগানো সব ধারা মেনে নিয়ে এফআইআর দায়ের করেছে'।
বিকাশ সিং সাফ জানিয়ে দেন রিয়ার এই এফআইআরের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবে সুশান্তের পরিবার। তবে বম্বে হাইকোর্ট না সুপ্রিম কোর্টে তাঁরা অভিযোগ দায়ের করবেন তা তিনি স্পষ্ট করেননি। এই এফআইআরকে খারিজ করা নাকি অবমাননার মামলা দায়ের হবে সেটিও পরিবারের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের এই সিনিয়র আইনজীবীর।
বিকাশ সিং বলেন, 'এই মামলায় রিয়ার পৃথক অভিযোগ দায়ের করবার কোনও প্রয়োজন ছিল না। সিবিআইকে দেওয়া বয়ানে রিয়া নিজের পক্ষ রাখতে পারত। সিবিআই নিজের চার্জশিটে বিচার করত। তাঁরা যদি রিয়ার দাবিকে যুক্তিযুক্ত বলে মনে করত তাহলে নিঃসন্দেহে আমার মক্কেলদের নাম থাকত অভিযুক্ত হিসাবে'।
তিনি স্পষ্টতই বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট নিজের রায়ে স্পষ্টই জানিয়েছিল যদি এই মামলার ইনকুয়েস্টে যদি মুম্বই পুলিশ কোনওরকম আদালত গ্রাহ্য অপরাধ খুঁজে পায় তাহলেই একমাত্র তাঁরা নিয়মানুসারে এফআইআর দায়ের করতে পারে এবং সেই এফআইআর সিবিআইয়ের হাতে হস্তান্তর করা হবে'। কিন্তু এটা মুম্বই পুলিশের ইনকুয়েস্টের ভিত্তিতে দায়ের এফআইআর নয় মনে করিয়ে দেন বিকাশ সিং।
বিকাশ সিং আরও জানান এই এফআইআর মুম্বই পুলিশের জুরিসডিকশনের বাইরে, কারণ এখানে একজন চিকিত্সকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। নিয়ম বলছে চিকিত্সকদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে গেলে একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে খতিয়ে দেখতে হয় সেই অভিযোগ আদতে সত্যি কিনা। যা এই মামলার ক্ষেত্রে মানা হয়নি।

মুম্বই পুলিশ রিয়াকে শুরু থেকেই সাহায্য করছে এই মামলায়, তাঁকে সেফগার্ড করবার চেষ্টা করছে, এই অভিযোগও এদিন তুললেন সুশান্তের পরিবারের আইনজীবী।
সোমবার রাতে বান্দ্রা থানায় সুশান্তের দুই দিদি প্রিয়াঙ্কা সিং, মীতু সিং, এবং চিকিত্সক তরুণ কুমারের বিরুদ্ধে সুশান্তকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া,প্রতারণা,জালিয়াতি এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনলেন রিয়া। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৬৪,৪৬৫,৪৬৬,৪৬৮,৪৭৪,৩০৬,১২০ (বি), ৩৪ ধারায় এবং এনডিপিএস আইন, ১৯৮৫ এর আওতায় ৮(সি), ২১,২২, এবং ২৯ এর আওতায় এফআইআর দায়ের করেছেন সুশান্তের লিভ ইন পার্টনার রিয়া চক্রবর্তী।
মুম্বই পুলিশ এই মামলা ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে।