সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু মামলার মূল অভিযুক্ত রিয়া চক্রবর্তীকে জেলে কাটাতে হয়েছে টানা ২৭ দিন। সুশান্ত মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত মাদককাণ্ডে এনসিবির হাতে গত ৮ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার হয়েছিলেন রিয়া। বম্বে হাইকোর্টের রায়ে গত ৭ অক্টোবর শর্তসাপেক্ষে জামিন পান রিয়া। এবার হুমকির সুরে অভিযুক্তর আইনজীবীর দাবি যাঁরা তাঁর মক্কেলের মানহানি করেছে কিংবা মিথ্যা বয়ান দিয়ে সুশান্তের মৃত্যু মামলায় রিয়া জড়িত আছে এমন প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে চলেছেন রিয়া।
আইনজীবী সতীশ মানেসিন্ধে রবিবার একটি প্রেস বিবৃতি জারি করেন। সেখানে বলা হয়েছে- 'যেমনটা আমি বলেছিলাম, রিয়া জামিনে বাইরে এসে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব যারা ওঁর মানহানি করেছে এবং রিয়ার জীবন ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে দু-মিনিটের খ্যাতির জন্য ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বয়ান দিয়ে। আমরা সিবিআইকে একটি তালিকা দেব, যেখানে টিভিতে বা ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে ভুয়ো এবং মিথ্যা বয়ান দেওয়া হয়েছে সুশান্তের মামলা সম্পর্কিত, যেখানে রিয়ার নাম জড়িয়ে আছে। আমরা সিবিআইয়ের কাছে আবেদন জানাব তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার তদন্তকে ভুল পথে চালিত করার প্রচেষ্টার জন্য।
রিয়ার আইনজীবীর মূলত ইশারা ছিল রিয়ার প্রতিবেশি ডিম্বল থাওয়ানির দিকে যিনি বেশ কিছু চ্যানেলে দাবি করেন কেউ ওঁনাকে বলেছেন সুশান্ত নাকি ১৩ই জুনের সন্ধ্যাবেলা রিয়াকে বাড়ি ছেড়ে দিয়ে যান। মানেসিন্ধে জানান, সিবিআই রবিবার ওই প্রতিবেশির বয়ান রেকর্ড করেছে।
সুশান্তের মৃত্যু মামলার সঙ্গে জড়িত আর্থিক তছরুপের মামলায় ইডির জেরার মুখে পড়েছেন রিয়। সুশান্তের বাবা কেকে সিংয়ের তরফে রিয়া চক্রবর্তী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে সুশান্তকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া সহ আর্থিক প্রতারনার অভিযোগও আনা হয়। কেকে সিং বিহার পুলিশের কাছে দায়ের এফআইআরে অভিযোগ করেন সুশান্তের অ্যাকাউন্ট থেকে ১৫ কোটি টাকা ‘গায়েব’ হয়েছে। সেই টাকা কোনও অজানা অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয়েছে যা তাঁদের জানা নেই। তবে ইডি সূত্রে খবর সুশান্তের অ্যাকাউন্টের ফরেনসিক অডিট রিপোর্টে বড় কোনও গড়বড় ধরা পড়েনি। গত এক বছরে রিয়ার জন্য প্রায় ৫৫ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন সুশান্ত, সেগুলি মূলত শপিং,স্পা, ট্রাভেল সংক্রান্ত খরচ।
যদিও সুশান্তের পরিবারের অভিযোগ রিয়া সুশান্তের চালনা করতেন, এমনকি পরিবারের কাছ থেকেও দূরে রাখতেন। সুশান্তের ক্রেডিট কার্ড, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সব তথ্য ছিল রিয়া চক্রবর্তীর কাছে। সেই বিষয়টি উঠে এসেছে রিয়া ও স্যাময়ুেল মিরান্ডার ফাঁস হওয়া হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটেও।
সুশান্তের মৃত্যু মামলায় খুনের তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছে এইএমসের বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকদের প্যানেল, এমনই খবর উঠে এসেছে মিডিয়ায়। তবে গোটা বিষয় নিয়ে কোনওরকম আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।