২০১৭ সালে মুক্তি পেয়েছিল সমান্তরাল। সেই সময়ে দাঁড়িয়ে একেবারে অন্যরকম একটা গল্পকে তুলে ধরেছিল এই ছবিটি। আদ্যোপান্ত ভালোবাসা গল্প ছিল, সমাজের চেনা বা বেঁধে দেওয়া ভালোবাসার সংজ্ঞার বাইরে গিয়ে ভালোবাসার কথা বলেছিল ছবিটি। রূপান্তরকাম নিয়ে পড়িয়েছিল পাঠ। এই সাইকোলজিক্যাল ড্রামায় মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন ঋদ্ধি সেন, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, সুরঙ্গনা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। আর সেই ছবির ৭ বছর পূর্ণ হতে একটি আবেগঘন পোস্ট লিখলেন ঋদ্ধি।
আরও পড়ুন: 'আমার বাড়িতে গান খালি শিল্পী নয়, এটা জীবনযাপনের মাধ্যম', ইন্ডাস্ট্রিতে ৫০ বছর! নস্টালজিয়ায় ভাসছেন হরিহরণ
সমান্তরাল নিয়ে কী লিখলেন ঋদ্ধি?
এদিন ঋদ্ধি সেন সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক ছবি পোস্ট করেন। সেখানে কোথাও সমান্তরাল ছবির সেটে তোলা তাঁকে, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়কে দেখা যাচ্ছে। কোথাও দেখা যাচ্ছে ছবির বিভিন্ন ক্লিপ। এই সমস্ত ছবিগুলো পোস্ট করে ঋদ্ধি লেখেন, 'সাত বছর আগে খানিকটা আচমকা চলে আসা উত্তরে হাওয়ার আগমনে অপ্রস্তুত এক শহরের জনজীবনের মতোই উপস্থিত হয়েছিল আমাদের সিনেমা সমান্তরাল, কোনও রকমের আড়ম্বর,চটকদার প্রচার কৌশল বা ইদানিং সব থেকে অকারণে ব্যবহৃত শব্দ আলাদার আশ্রয় ছাড়াই। হঠাৎ পড়া শীতের সন্ধ্যের মতোই বড় পর্দার বাসায় আচমকা এসে পড়া অতিথির মতো এসে পড়ে ছবিটা, তবে এই অপ্রত্যাশিত এসে পড়া দীর্ঘায়িত হয়,বড় পর্দা থেকে বাসার ঠিকানা বদলে চলে যায় দর্শকদের মনে, কারণ?'
তিনি এদিন আরও লেখেন, 'ছবির চিত্রনাট্যে আছে বেশ কিছু ত্রুটি, গল্পের ভাবনা আর ভাবনার মূলের দর্শনেও রয়েছে অসঙ্গতি, অস্পষ্টতা, নির্মান প্রক্রিয়ায় রয়েছে খামতি এবং সর্বোপরি নিজের চরিত্রের প্রতি নিজের ভাবনা এবং দৃষ্টিকোণকে অভিনয় দিয়ে অনুবাদ করার দ্বায়িত্বে আমার নিজের অভিনেতা হিসেবে রয়েছে বিস্তর ভুল, তবু এত কিছু সত্ত্বেও এই ছবিটা সমান্তরাল ভাবে আমাদের এবং দর্শকদের স্মৃতিতে এক বিশেষ জায়গা অর্জন করে নিয়েছে কারণ ছবির ভাবনা,নির্মাণ প্রক্রিয়া এবং গল্প বলার উদ্যেশ্য ছিল সৎ। গতানুগতিক ভাবনা এবং পদ্ধতিতে নির্মিত সিনেমাকে আমরা এখন কথায় কথায় বলি এক্সপেরিমেন্টাল, অথচ সেগুলো এক্সপেরিমেন্টাল তো দূরস্থ , গতানুগতিক পদ্ধতিকেও সঠিক ভাবে অনুকরণ করতে ব্যর্থ। সমান্তরালের পরিচালক পার্থ চক্রবর্তী , প্রযোজক তারকনাথ সাহা, সৌভিক সাহা, PSS entertainment এবং লেখক পদ্মনাভ দাশগুপ্তকে ধন্যবাদ, কোনও রকম ভনিতা ছাড়া একটা গল্প বলার জন্য। আজ সাত বছর পরে ফিরে তাকানোর সময় এবং প্রয়োজন দুইই কমেছে, তবে কিছু শীতের সন্ধ্যা মনে করিয়ে দেয় কিছু প্রিয় স্মৃতি, থমকে দাঁড় করায় কিছুক্ষন এক দ্রুতগামি বাজারের মাঝে।'
আরও পড়ুন: আবারও পিছিয়ে গেল ডন ৩ -এর শ্যুটিং! জানুয়ারির বদলে কবে থেকে শুরু হবে রণবীরের ছবির কাজ?
আরও পড়ুন: 'রামপ্রসাদ' এবার পরিচালক! সব্যসাচীর পরিচালিত 'নিষ্পত্তি' দেখানো হবে কলকাতার চলচ্চিত্র উৎসবে
কে কী বলছেন?
এক ব্যক্তি লেখেন, 'সাত বছর আগের সেই শীতের সন্ধেটার কথা এখনও স্পষ্টভাবে অনুভূত হয়! নন্দন ২ -তে দেখতে গিয়েছিলাম, এক ভাইয়ের সঙ্গে। কোনও রকম expectation ছাড়াই। শুধু প্রিয় কিছু মানুষের উপস্থিতি, একসাথে চাক্ষুষ করব বলে! কী অনুভূতি নিয়ে হল থেকে বেরিয়েছিলাম, আজও ভাবলে গায়ে কাঁটা দেয়! প্রচন্ড শীত করছিল, বাংলা আকাদেমির সামনে গিয়ে বসেছিলাম।' আরেকজন লেখেন, 'হলে সিনেমাটা দেখতে গিয়ে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেছিলাম।' তৃতীয় ব্যক্তি লেখেন, 'বড় প্রিয় সমান্তরাল প্রিয় জিনিসরা মনের মণিকোঠায় থাকে, ওদের কাটাছেঁড়া চলে না।'