প্রয়াত জনপ্রিয় অভিনেতা ঋষি কাপুর ব্যক্তি হিসেবে ছিলেন রীতিমতো ঠোঁটকাটা। সত্যি কথা বলতে কিংবা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজের মতামত প্রকাশ করতে এতটুকুও পিছপা হতেন না। সে ক্যামেরার সামনে হোক কিংবা দু'মলাটের ভিতরে। একবার তাঁর বাবা তথা কিংবদন্তি বলি ব্যক্তিত্ব রাজ কাপুরের একাধিক বিবাহ বহিৰ্ভূত প্রেম নিয়েও প্রকাশ্যে বলতে এতটুকুও দ্বিধাবোধ করেননি তিনি। জানিয়েছিলেন বলি-নায়িকা নার্গিস এবং বৈজয়ন্তীমালার সঙ্গে তাঁর বাবার গভীর সম্পর্কের সম্পর্কের কথা। তাঁর আত্মজীবনী 'খুল্লাম খুল্লা'-তে তিনি সোজাসুজি লিখেছিলেন এর জেরে কীভাবে তিনি এবং তাঁর মা কৃষ্ণা কাপুর তাঁদের বাড়ি ছেড়ে থাকার জন্য একটি হোটেলে এসে উঠেছিলেন।
পরবর্তী সময় অবশ্য ন হোটেল ছেড়ে একটি অ্যাপার্টমেন্টে উঠেছিলেন তাঁরা এবং সেখানে ততদিন পর্যন্ত থেকেছিলেন যতদিন না রাজ কাপুরের সঙ্গে বৈজয়ন্তীমালার সম্পর্ক শেষ হয়েছিল। তবে বৈজয়ন্তীমালা জানিয়েছিলেন তাঁর এবং রাজের প্রেমের সম্পর্কটি নাকি আগাগোড়া সাজানো ছিল, মূলত তাঁদের অভিনীত ছবি হিট করার জন্য। সেই কথারও উল্লেখ করে সেটিকে সরাসরি মিথ্যে বলে ঋষি জানিয়েছিলেন, সত্যকে স্বীকার করে নেওয়ার সাহস না থাকলে তাকে মিথ্যে বলে চালিয়ে দেওয়ার কোনও অধিকার ওঁর নেই। এখানেই থামেননি তিনি। ঋষি আরও লিখেছিলেন, আজ যদি তাঁর বাবা অর্থাৎ রাজ্ কাপুর জীবিত থাকতেন তাহলে বৈজয়ন্তীমালার সাহস হত না এই মিথ্যে বলার। প্রসঙ্গত, বৈজয়ন্তীমালার সঙ্গে জুটি বেঁধে দুটি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন রাজ কাপুর। 'নজরানা' এবং 'সঙ্গম'।
এই প্রসঙ্গে পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কোনও লুকোছাপা না করেই ঋষি বলেছিলেন, 'বৈজয়ন্তীমালার সঙ্গে বাবার সম্পর্ক গড়ে ওঠায় মায়ের হাত ধরে মুম্বইয়ের মেরিন ড্রাইভ অঞ্চলের নটরাজ হোটেলে গিয়ে উঠেছিলাম। এরপর সেখান থেকে চিত্রকূট অঞ্চলের একটি অ্যাপার্টমেন্টে উঠেছিলাম মাস দুয়েকের জন্য। সেই অ্যাপার্টমেন্টটি মা এবং আমাদের জন্য কিনে রেখেছিলেন বাবা। আমাদের বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন বাবা কিন্তু মা'কে মানাতে পারেননি। যেদিন বৈজয়ন্তীমালার সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টেনেছিলেন বাবা, একমাত্র তারপরেই আমরা বাড়ি ফিরেছিলাম।'
উল্লেখ্য, ১৯৪৬ সালে সাত পাকে বাঁধা পড়েছিলেন রাজ এবং কৃষ্ণা কাপুর। তাঁদের তিন ছেলে এবং দুই মেয়ে। তাঁরা যথাক্রমে রণধীর, ঋষি, রাজীব এবং রিমা জৈন ও ঋতু নন্দা।