গত সপ্তাহে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়ো শেয়ার করে চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছিলেন অভিনেতা ঋষি কৌশিক। একের পর এক ইঙ্গিতবহ পোস্ট করে চলেছেন ঋষি কৌশিক। কখন ছবির ক্যাপশনের মাধ্যমে আবার কখন গল্প বলার ছলে, কিংবা ভিডিয়ো বানিয়ে সম্পর্ক ভাঙার আভাস দিয়েছেন অভিনেতা। তিনি স্ত্রী দেবযানী চক্রবর্তীর নাম না করে এনেছেন নানান অভিযোগ। যদিও এবিষয়ে দেবযানী বা ঋষি কৌশিক কেউই আলাদা করে মুখ খোলেননি। অবশেষে তাঁর বিরুদ্ধে নাম না করে ওঠা নানান অভিযোগ নিয়ে মুখ খুললেন ঋষি কৌশিকের স্ত্রী দেবযানী চক্রবর্তী।
কী বলছেন দেবযানী?
লম্বা বিবৃতিতে দেবযানী চক্রবর্তী বলেন, 'বিগত কয়েকদিন যাবৎ সমাজ মাধ্যমে করা আমার স্বামীর কিছু পোস্ট নিয়ে আমাকে বারবার কিছু অবাঞ্ছিত প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। পুরো বিষয়টি আমার কাছে অত্যন্ত কুরুচিকর, সম্মানহানিকর এবং বিব্রতকর।
এ বিষয়ে প্রথমেই আমি স্পষ্ট করে দিতে চাই যে আমার বিরুদ্ধে যা যা অভিযোগ করা হয়েছে তার প্রতিটি সম্পূর্ণ মিথ্যে, অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত, অন্যায্য এবং কাল্পনিক। এগুলি করার একমাত্র কারণ আমার সামাজিক সম্মানহানি করা, আমার ক্ষতি করা এবং পোস্টদাতার নিজের নীচ উদ্দেশ্য সাধন করা।
দেশের আইনের প্রতি আস্থা রাখা কোনো ভদ্র মানুষের যদি আদৌ এধরনের কোন অভিযোগ থাকে, তাহলে তিনি কোর্টে যাবেন সেই সমস্যা সমাধানে। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জনগণের মতামত নিতে যাবেন না।'
দেবযানী আরও বলেন, 'যা ঘটানো হচ্ছে তা গর্হিত অপরাধ এবং এটি আমার ওপর করা তার দীর্ঘদিনের ধারাবাহিক অত্যাচার আর নিষ্ঠুরতার আর একটি অধ্যায়। আমার ধৈর্য্য আর সহনশীলতার অন্যায় সুযোগ নিয়ে এটি করা হচ্ছে। আমার ওপর চাপ সৃষ্টি করে তার অন্যায় দাবিগুলি মানাবার এটা একটা মরীয়া প্রয়াস।
গোটা বিষয়টি নিয়ে আমি আইনী পরামর্শ নিচ্ছি। এ বিষয়ে বেশী বিস্তারে বলার অবস্থায় আমি নেই। শুধু এটুকু জানাই আমি আমার আইনী পরামর্শদাতাদের সঙ্গে সমস্ত বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি এবং খুব শীঘ্রই প্রয়োজনীয় সকল আইনি পদক্ষেপ নিতে চলেছি।'
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই অভিনেতা ঋষি কৌশিক একটা ভিডিয়ো শেয়ার করেন, যে ভিডিয়োটি ছিল মূলত এক স্বামীর হয়ে বানানো, যে স্ত্রীর থেকে ডিভোর্স চায়। মদ্যপান-ধূমপানে আসত্ত স্ত্রীর হাত জর্জরিত-অত্যাচারিত। ঋষি কৌশিকের এই পোস্ট আসে যিশু সেনগুপ্ত ও নীলাঞ্জনা সেনগুপ্তর ডিভোর্স চর্চার মাঝে। ফলে খুব স্বভাতই মানুষ দুইয়ে দুইয়ে চার করে, নিজের জীবনের গল্পই শোনাচ্ছেন। সেই অত্যাচারিত স্বামীটি তিনি, ও অত্যাচারী স্ত্রী তাঁর বউ দেবযানী। এমনকী ভিডিয়োতে ‘বিয়ের বয়স ১২’, ‘স্বামী-স্ত্রীর আলাদা আলাদা পেশা’-র মতো একাধিক কথা বলেছিলেন ঋষি। যা তাঁর বাস্তব জীবনের সঙ্গে মিল খায়। কারণ ঋষি-দেবযানী কদিন আগেই ১১ বছরের বিবাহবার্ষীকি পালন করেন। আর ঋষি অভিনেতা হলেও, দেবযানী আইটি-তে কর্মরত।
অভিনেতা এও জানিয়েছিলেন, দীর্ঘ ১২ বছর ছেলেটি সব সহ্য করে সংসার বাঁচানোর তাগিদে সবটা সহ্য করে এসেছে কিন্তু আর পারছে না। তার স্ত্রী বাইরে লোকের কাছে নিজেকে লক্ষ্মীমন্ত দেখায়। একই সঙ্গে ইদানিং নাকি সবাইকে বলে বেড়াচ্ছে যে ছেলেটি নাকি মানসিক রোগী। এই অবস্থায় ছেলেটির কী করা উচিত বলে জানতে চেয়েছেন ঋষি।
এখানেই শেষ নয়, গত শনিবার ফের নিজের একটি ছবি পোস্ট করেন, ক্যাপশনে যোগ করেন মাইকেল জ্যাকসনের একটি গান। গানের লাইনে উঠে এসেছে এক নারীর প্রতারণার গল্প।
ঋষি কৌশিক লেখেন, 'Lie for it. Spy for it. Kill for it. Die for it. So you call it trust, in the devil's game of greed and lust. She doesn't care. She'd do me for the money. She doesn't care she'd do me for the prestige. ক্য়াপশনটা মাইকেল জ্যাকসনের একটা গান। They শব্দটার জায়গায় She লিখলাম। এমনি। জাস্ট এমনি। গানের কথাগুলো খুব বাস্তব। অনেকের জীবনের সাথে মিলে যায়'। মাইকেলের গানের বাংলা তর্জমা করলে খানিকটা দাঁড়ায়, মিথ্যে বলো, অনুসন্ধান করো, মেরে ফেলো, মরে যাও। শয়তানের লোভ, লালসার খেলায় তাহলে এটাই কি বিশ্বাস? তার কিচ্ছু যায় আসে না। তার শুধু দরকার আমার টাকা, সে আমার জন্য এতটুকু ভাবে না, না ভাবে আমার সম্মানের কথা'।
এরপর নিজের একটা ছবি শেয়ার করে লেখেন ‘যদি খারাপ মানুষের শরীর ও মন থেকে দুর্গন্ধ ছড়াত, তাহলে বোধহয় বেশিরভাগ মানুষ তাদের আশেপাশে থাকা মানুষের জঘন্য দুর্গন্ধে থাকতেই পারত না।’ ঋষির এই পোস্ট গুলি থেকে অনেকেই বেশ বুঝতে পেরেছিলেন, তিনি নিজের জীবনের কথাই বলছেন। আর এভাবে নাম না করে ঋষি কৌশিকের একের পর এক পোস্টের পর মুখ খুললেন তাঁর স্ত্রী দেবযানী চক্রবর্তী।