কদিন আগেই ফেসবুকে একটি ইঙ্গিতবাহী পোস্টে ‘একা থাকা সম্মানের’ লিখে ডিভোর্সের জল্পনার আগুনে ঘি দিয়েছিলেন। তার কয়েকদিন পর তো সরাসরি ভিডিয়ো করে, অভিযোগের ঝুলি খুলে বসেন। যদিও সবটাই গল্পের ছলে। যদিও সেই গল্পটা যে তাঁর ও তাঁর স্ত্রীয়ের বুঝতে কারও সমস্যা হয়নি। তবে এখানেই থেমে থাকলেন না তিনি। শুক্রবার রাতে বোমা ফাটালেন আরও একবার।
‘যদি খারাপ মানুষের শরীর ও মন থেকে দুর্গন্ধ ছড়াত, তাহলে বোধহয় বেশিরভাগ মানুষ তাদের আশেপাশে থাকা মানুষের জঘন্য দুর্গন্ধে থাকতেই পারত না।’ এই ক্যাপশনের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও শেয়ার করেন তিনি। লাল পাটির দেশ, পিছনে টিলা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্যিই অভূতপূর্ব। তবে এই ছবিতে ঋষির দিকে কজনের মন গেল, তা হয়তো হাতে গুণে বলা যাবে। বরং চর্চায় শুধুই তাঁর ক্যাপশনে লেখা কথাগুলো।
কদিন আগে এক ফেসবুক ভিডিয়োর মাধ্যমে স্ত্রী (নিজের না অন্যের তা বলেননি যদিও)-র সম্পর্কে তাঁর অভিযোগ ছিল, ‘আচ্ছা পৃথিবীর যত দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণা কি শুধু মেয়েদেরই হয়, ছেলেদের হতে পারে না? একটা গল্প বলি। একটা ছেলে আর মেয়ের আলাপ হয়। ছেলেটি প্রথম থেকেই বুঝতে পারে এই মেয়েটা তার সাধাসিধে জীবনযাপনে খাপ খাওয়াতে পারবে না। মেয়েটির চালচলন উগ্রচণ্ডী, বেপরোয়া। ছেলেটি বারবার ব্রেকআপ করার চেষ্টা করে, মেয়েটি রাজি হয় না, নিজেকে বদলানোর ব্যর্থ প্রতিশ্রুতি দিতে থাকে। এবার এটার পিছনে অন্য স্বার্থ ছিল, যা ছেলেটি বুঝতে পারেনি।’
‘বিয়ের পর দেখা যায়, মেয়েটি তো বদলালোই না, বরং আরও নিজেকে উগ্র করতে থাকল। শুধু তাই নয়, ছেলেটির কর্মক্ষেত্র আর মেয়েটির কর্মক্ষেত্র (ঋষি কৌশিক অভিনেতা, তাঁর বউ দেবযানী ইঞ্জিনিয়র) তো আলাদা, এবার মেয়েটি ছেলের কর্মক্ষেত্রে টুকটাক কাজ করতে থাকল। ছেলেটিও সাপোর্ট করল। একটা মেয়ে একা হাতে দু দিক সামলালে তো ভালো কথা। বিয়ের পর থেকে অশান্তি বাড়তে থাকে। কথায় কথায় মেয়েটি গলা তুলে কথা বলে। ছেলেটি তাও সহ্য করল। কোনও মধ্যবিত্ত বাড়ির ছেলেমেয়েরাই বিয়ে করার পর, সহজে ডিভোর্সের পথে হাঁটতে চায় না। তাই ছেলেটিও ক্রমাগত চেষ্টা করে যায়।’
‘বছরে দু-তিন দিন শাড়ি পরে নাটক করা, তারপর অফিসের শেষে সিগারেট খাওয়া, পুরুষ বন্ধুদের সঙ্গে মদ খেয়ে পার্টি করা, এগুলোই কি উন্নত মানসিকতার পরিচয়? ছেলেটির খবর কিন্তু কখনও নেয়নি, খবরদারি করে গেছে। কার সঙ্গে মিশছে, কার সঙ্গে কোথায় যাচ্ছে, সব জানা চাই। এদিকে ছেলেটি মেয়েটির জীবনে কখনও এমন করেনি। এভাবেই ১২টা (ঋষি-দেবযানীর বিয়ের বয়সও কিন্তু ১২) বছর কেটে যায়। সে যখন আর পারছে না, সে মেয়েটিকে বোঝায়। এভাবে আর সম্ভব না। দরকারে ছেলেটিকে নিজের জীবন শেষ করে দিতে হবে। এই কথা শোনার পরেও, মেয়েটি বলে তুমি তোমার মতো থাকবে, আমি আমার মতো। মেয়েটি সংসার ছেড়ে যেতে চায় না কারণ তাঁকে আর্থিক দায়িত্ব নিতে হবে। পরের ঘরে থেকে, পরের ঘাড়ে কাঁঠাল ভেঙে খাওয়ার সঙ্গে নিজের লাক্সারি লাইফস্টাইল মেনটেইন করার মতো আনন্দ আর কীসে!’
‘মেয়েটি নিজেকে এমন সুগার কোট করে রেখেছে যে, তার মতো লক্ষ্মীমন্ত বউ আর হয় না। সত্যি আর হয় না, ওরকম দু মুখো সাপ। আর এদিকে ছেলেটির নামে অন্যের কাছে বলে রেখেছে, ছেলেটি মানসিক ভারসাম্য হীন হয়ে পড়েছে, ছেলেটিকে নাকি সেই কাজ এনে দেয়। এই নিয়ে কথা বলতে গেলেই, সাইবার ক্রাইম সহ নানা জিনিসের ভয় দেখায়।’
দেবযানী আর ঋষি কৌশিক নিজেরাই দেখাশোনা করে বিয়ে করেছিলেন। পেশায় ইঞ্জিনিয়র দেবযানীর বাড়ি থেকে প্রথমে একদম রাজি ছিল না, অভিনেতা ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে। তবে মেয়ের ভালোবাসার কাছে তাঁরা আর ঝামেলা করেননি। বিয়ের পর যে ভালোই জামাই আদর জুটত কপালে তা ঋষি নিজেও স্বীকার করেছেন। দেশ-বিদেশে ঘুরেছেন দুজনে। তাঁদের হাসিমুখের ছবি, নানা ধরনের খাবারের স্বাদ নেওয়ার ছবিও দিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়াতে। এখন প্রশ্ন, ভালো থাকার যে ছবি তাঁরা তুলে ধরেছেন গোটা দুনিয়ার কাছে, সেসব কি তাহলে পুরোটাই মিথ্যে?