‘অসাম্যটুকুকে মুছে সাম্যটুকু গড়তে চেয়েছি শুধু’- শবরীর মুখের এই সংলাপ আজও ভুলতে পারেনি দর্শক। ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মোটি’ ছবিতে মহিলা পুরোহিত ঋতাভরী ওরফে শরবী জোর গলায় বার্তা দিয়েছিল সমাজে নারীদের সমান অধিকারের। নিজেদের জীবনেও সেই সাম্যের বার্তা মিলিয়ে দিয়েছেন ঋতাভরী। বছর শেষে সাত পাকে বাঁধা পড়েছেন অভিনেত্রীর দিদি চিত্রাঙ্গদা শতরূপা। আর সেই বিয়েতে পৌরহিত্য করেছেন মহিলা পুরোহিত। বিয়ে হয়েছে বৈদিক মতে, হয়নি কন্য়াদান।
ছেলেবেলার বন্ধু সম্বিত চট্টোপাধ্যায়ের হাতে সীমন্তিনী হওয়ার পর চিত্রাঙ্গদাও ‘স্যম্যের প্রতীক’ স্বরূপ সম্বিতের কপালে সিঁদুর ছোঁয়ান। সেই মুহূর্তটি ছিল ঋতাভরীর কাছে ‘২০২২ সালে সবথেকে প্রিয় মুহূর্ত’। আসলে ঋতাভরীর জীবন যেন তাঁর সিনেমার বাস্তব প্রতিফলন। এই বিশেষ মুহূর্ত সবার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ায় কটাক্ষের মুখে পড়তে হয় ঋতাভরীকে। স্বামীর কপালে সিঁদুর ঠেকানোকে কেউ ‘আদিখ্যেতা’ বলে উল্লেখ করেন। অনেকেই বিষয়টি নিয়ে খিল্লি করে লেখেন, ‘বিয়ের দিন ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিচ্ছে বোধহয়’। এক নেটিজেন ঋতাভরীর পোস্টের কমেন্ট বক্সে লেখেন- ‘এইজন্যে নিব্বা নিব্বির নায়িকাদের আমার বিরক্তিকর লাগে।’ অনেকে তো আরও আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে লিখেছেন, ‘সিঁদুর যখন পড়ছে তখন দাদা নিশ্চয় প্রেগন্যান্টও হতে পারবে’।
হ্যাঁ, প্রাকৃতিক নিয়মে সন্তান প্রসবের বিষয়টি নিয়েও ট্রোলড হতে হল ঋতাভরীকে। গোটা বিষয় নিয়ে সপাটে জবাব দিতেও ছাড়লেন না নায়িকা। ফেসবুকের দেওয়ালে ঋতাভরী লেখেন- ‘আমি একটা গোটা ছবি করেছি এই বিষয়ে তাই এই আনন্দ উৎসবের মাঝে আর কোনও নেগেটিভিটিকে পাত্তা দিইনি। কিন্তু আশ্চর্য হলাম দেখে, মানুষ এখনও প্রাকৃতিক নিয়ম এবং মানুষের বানানো নিয়ম গুলিয়ে ফেলে। প্রেগন্যান্সি প্রাকৃতিক নিয়ম আর সিঁদুর, ভাত কাপড়ের দায়িত্ব ইত্যাদি মানুষের বানানো। যেটুকু ভালো সেটুকু রেখে সাম্যের পথে এগোনোটাই কাম্য। তোমরা ভালো থেকো। কোনওটাই কারোর উপর চাপিয়ে দেওয়া না, যার যেটাতে সুখ, আনন্দ, সেটা বেছে নিও। আমরা খুব সুখে এবং ভালো আছি তোমাদের ভালোবাসায় এবং আশীর্বাদে।’
আরও পড়ুন- লুচি-বেগুন ভাজা থেকে চিকেন-চিংড়ি, চিত্রাঙ্গদার বিয়ের মেনু শুনলে জিভে জল আসবেই
তবে সকলে যে ঋতাভরীর সমালোচনা করেছেন তেমনটা নয়। বৈদিক মতে বিয়ে এইভাবেই হয়- সেকথাও জানিয়েছেন নেটিজেনদের একাংশ। নায়িকা ও তাঁর পরিবারের এই উদ্যোগকেও সাধুবাদ জানিয়েছেন তাঁরা।