RG কর নিয়ে উত্তাল গোটা বাংলা। এই অস্থির পরিস্থিতিতেই মুক্তি পাচ্ছে পুজোর কিছু বাংলা ছবি। যার মধ্যে রয়েছে অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তীর পুজোর ছবি 'বহুরূপী'। আরজি কর কাণ্ডের পাশাপাশি টলিপাড়ায় যৌন হেনস্থার ঘটনা নিয়েও সরব হয়েছিলেন ঋতাভরী চক্রবর্তী। সম্প্রতি নিজের পুজো রিলিজ ‘বহুরূপী’ নিয়েও মুখ খুলেছেন ঋতাভরী।
এবার পুজো রিলিজ সিনেমায় সত্যিই কি মানুষের মন আছে? এবিষয়ে সংবাদ-প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ঋতাভরী চক্রবর্তী বলেন, উত্তরটা কঠিন। মানুষের মন খারাপের কথা মেনে নিয়ে অভিনেত্রী বলেন, ঘটনার পর একমাস হয়ে গেলেও কোনও উত্তর নেই। মানুষ চাইছে অপরাধী ধরা পড়ুক। আর তাই হয়ত মানুষ অন্য কোথাও মন দিতে পারছেন না। ঋতাভরীর কথায়, আরজি কর নিয়ে প্রথমে মানুষের মধ্যে ভীতি-রাগ দেখেছেন, আর এখন দেখছেন হতাশা।
ঋতাভরীর কথায়, এই মুহূর্তে মানুষ উদযাপনের মেজাজে নেই। তবে 'বহুরূপী' মুক্তির বিষয়টা তো পূর্ব নির্ধারিত, তাই এক্ষেত্রে কিছুই করার নেই। প্রসঙ্গত, ঋতাভরী কিছুদিন আগেও ছিলেন পাপুয়া নিউগিনিতে। তবে 'বহুরূপী' প্রচারের কারণেই তিনি কলকাতায় ফেরেন। এরই মাঝে তাঁর ডাক পরেছিল নবান্নে। টলিপাড়ায় যৌন হেনস্থার একাধিক অভিযোগের মাঝে হেমা কমিটির ধাঁচে এখানেও কমিটি গঠনের কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন অভিনেত্রী।
এবিষয়ে ঋতাভরী জানান,আরজি কর নিয়ে তাঁর মা, দিদি, ও পরিবারের অন্যান্যরা সকলেই ভীষণ ক্ষুব্ধ। তাঁরা সকলেই প্রতিদিনই প্রায় মিছিলে গিয়েছেন বলে জানান ঋতাভরী। তবে তাঁর কথায়, ‘ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে আমরা যুদ্ধ করছি, যাঁরা শিকারী তাদের বিরুদ্ধে। বাইরে থেকে দেখলাম, এখানে মোমবাতি মিছিলে হাঁটছে, তার মধ্যে এমন অনেক মুখ রয়েছে যাদের আমি ব্যক্তিগতভাবে জানি, যে তারা টলিউডে মেয়েদের কোন চোখে দেখে, কীভাবে ব্যবহার করে! আর তখনই কাকতালীয়ভাবে হেমা কমিটির রিপোর্টটা আসে।’
ঋতাভরীর কথায়, ‘আমার সঙ্গে ঠিক তখন মালয়ালম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির পুরো ইউনিট কাজ করছিল। ওরা কাছ থেকে সবটা দেখেছে। আমি আমার সহ অভিনেতার থেকে বিষয়টা বুঝি। আমি দ্য হেমা কমিটি রিপোর্ট নিয়ে মুগ্ধ। বড় বড় অভিনেতাদের রিজাইন করতে বাধ্য করা হয়েছে, তাঁরা কিন্তু বেশ সরকার-ঘনিষ্ঠ। এটা তো বড় পদক্ষেপ। এই ঘটনাটা আর শহরের এই আন্দোলন নিয়ে আমাকে আরও আত্মবিশ্বাস-সাহস জোগায়। যেটা আমি শেষ আট-দশ বছরে পাইনি। এরা যদি এক হয়ে প্রতিবাদ করতে পারে, আমরা কেন পারব না! আমরা তো বাঙালি। তখন সহ-অভিনেত্রীদের উদ্দেশে ওই পোস্ট করেছিলাম যে, চলো এদের মুখোশ খুলে দিই। সেসময় অনেকের কাছ থেকেই সাড়া পেয়েছি। এখন বড় বিষয় নিশ্চয়ই আর জি কর কাণ্ড, তার সঙ্গে নারী সুরক্ষার দিকটাও প্রচণ্ড জরুরি। হেমা কমিটির রিপোর্ট যখন বেরিয়েছে এই সময়ে, তখনই আমার মনে হয়, আমাদের এটা নিয়ে এগোতে হবে। নাউ আর নেভার। তাই আমি সিএমকে ট্যাগ করেছিলাম।’
মু্খ্যমন্ত্রীকে টলিপাড়ার নাকি প্রভাবশালী প্রযোজকের নামও জানিয়েছেন ঋতাভরী। এবিষয়ে তিনি বলেন, 'ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে আমি দুজনের নামও বলেছি। সে বিষয়ে তদন্ত করা হবে বলে মুখ্য়মন্ত্রী জানিয়েছেন। উনি আমাকে আরও বেশ কিছু প্রশ্ন করেন। তখন বলি, শোনা কথায় কাউকে দোষারোপ করব না। কমিটিটা এই জন্যও, যেন কোনও নির্দোষকে দোষী বানিয়ে বদনাম না করা হয়। তদন্ত শুরু হলে, মেয়েরা যে অভিযুক্তদের নাম নেবে, সেখান থেকেই বেরিয়ে আসবে কারা কতটা দোষী। শুধু বদনাম শুনেছি বলেই, কারও নাম করতে চাই না।'