মঙ্গলবার নবান্নে মমতার সঙ্গে বৈঠক করেন ঋতাভরী চক্রবর্তী। তারপর থেকেই বাড়ছিল জল্পনা। মোটামুটি ধরে নেওয়াই যাচ্ছিল হেমা কমিটির ন্যায়ে বাংলায় একটি কমিটি তৈরি নিয়েই কথা হয়েছে দুজনের। তবে অফিলসিয়াল কোনও খবর ছিল না। বুধবার নিজেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হওয়া কথা সামনে আনলেন ঋতাভরী।
ঋতাভরী তাঁর সোশ্যাল পোস্টে লিখেছেন, ‘গতকাল মুখ্যমন্ত্রী হেমা কমিটির ন্যায় বাংলাতে একটি কমিটি করার ডাকে সাড়া দেন। আমার অনুরোধ এই কমিটিতে কোনও সিনেমা ব্যক্তিত্ব বা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থাকবে না, শোনা হয়। নিরপেক্ষ ৫ সদস্যের একটি কমিটি গড়া হয়েছে, এক প্রাক্তন বিচারপতিকে মুখ্য দায়িত্বে নিয়ে। এই মহিলারা সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে, ডাক্তার থেকে আইনজীবী, যারা বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে শ্লীলতাহানির বিষয়টা খতিয়ে দেখবেন। এবং একটি রিপোর্ট জমা দেবেন। দোষীদের মুখোশ খোলার প্রথম পদক্ষেপ এটি।’
ঋতাভরীকে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পার্নো মিত্র, সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়রা। সুজয়প্রসাদ লিখেছেন, ‘ঋতাভরী দুর্দান্ত! যদি কখনো আমার সাহায্য লাগে জানিও’।
এর আগে মালায়ালাম ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে হেমা কমিটির রিপোর্ট সামনে আসার পরই ঋতাভরী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিয়েছিলেন খোলা চিঠি। তাতে লিখেছিলেন, ‘আমার সঙ্গে, আমার চেনা পরিচিতর সঙ্গেও এমনটা হয়েছে। নোংরা মন ও ব্যবহার নিয়ে নায়ক/প্রযোজক/পরিচালকরা দিনের পর দিন কাজ করে চলেছে। কোনও সমস্যাও হচ্ছে না। আবার আরজি করের নির্যাতিতার বিচার চেয়ে তাঁদের মোমবাতি হাতেও দেখা যাচ্ছে।’
সঙ্গে তিনি আরও লিখেছিলেন, ‘এই সমস্ত নোংরা মানসিকতার মানুষদের মুখোশ টেনে খুলুন। আমি আমার সহ-অভিনেত্রীদের কাছে আবেদন করছি, এই শয়তানদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। জানি আপনারা হয়তো ভালো চরিত্র হারানোর বা ইন্ডাস্ট্রিতে কোনওদিন কাজ না পাওয়ার ভয় পাচ্ছেন। কিন্তু আর কতদিন আমাদের চুপ থাকা উচিত? যে সমস্ত তরুণ অভিনেত্রীরা চোখে স্বপ্ন নিয়ে এই কাজে আসেন তাঁদের প্রতি কি আমাদের কোনও দায়িত্ব নেই। এই জায়গাটাকে কি তাঁরা সুগার কোটেড ব্রথেল ভাববে! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (দিদি) আমরা এই ধরনের (হেমা কমিটির মতো) তদন্ত চাই, অভিযোগ আর পরিবর্তনের জন্য।’
আরজি কর নিয়ে প্রথম থেকেই প্রতিবাদে অভিনেত্রীর মা শতরূপা সান্যাল। সরকারের বিপক্ষেও তাঁকে পোস্ট করতে দেখা গিয়েছে। তাই তাঁর মেয়ে নবান্নে যাওয়ার পর, নানা রকম আলোচনা দেখা গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়াতে। তবে সবটা স্পষ্ট ঋতাভরীর পোস্ট থেকেই। বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি শুধরনোর তাগিদেই মঙ্গলবার দিদির দ্বারস্থ হন তিনি। কারণ কমিটি তৈরির উদ্যোগ এসেছিল প্রথম তাঁর তরফ থেকেই।