অরিন্দম শীলের নামে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন টলি অভিনেত্রী। পরিচালকদের সংগঠন থেকে বরখাস্ত হয়েছেন পরিচালক। এরপর অভিনেতা জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামেও কাজ পাইয়ে দেওয়ার আছিলায় সহবাসের অভিযোগ করেছেন এক মডেল, সব মিলিয়ে আর জি কর কাণ্ডের মাঝে চাপে টলিউড।
এর মাঝেই আনন্দবাজার সূত্রের খবর, অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তীর সঙ্গে মঙ্গলবার বিকালে নবান্নে আলোচনায় বসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিছুদিন আগেই সমাজমাধ্যমে ঋতাভরী জানিয়েছিলেন তিনি নিজে যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছেন ইন্ডাস্ট্রিতে। পোস্টে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উল্লেখ করে টলিউডে যৌন হেনস্থা রুখতে হেমা কমিটির আদলে কোনও কমিটি তৈরির আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই ডাকেই সম্ভবত সাড়া দিয়ে দিয়েছেন ‘দিদি’।
নবান্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, জাস্টিস হেমা কমিটির আদলে এই রাজ্যের বিনোদন জগতের মেয়েদের সুরক্ষার কথা ভেবে একটি কমিটি তৈরি করতে চান মমতা। সেই কারণেই কী ডাক পেয়েছেন ঋতাভরী? এই ব্যাপারে নায়িকার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও জবাব মেলেনি। টলিপাড়ায় মেয়েদের বর্তমান পরিস্থিতি, নারী-সুরক্ষার বিষয় নিয়েই হয়ত মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন ‘ফাটাফাটি’ অভিনেত্রী। দুই প্রথম সারির প্রযোজকের বিরুদ্ধে নাকি দিদির কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন ঋতাভরী।
হেমা কমিটির রিপোর্ট গত ১৯শে অগস্ট সামনে আসার পর থেকে তোলপাড় মালায়ালাম ইন্ডাস্ট্রি। রঞ্জিত-সহ একাধিক প্রথম সারির পরিচালকের নামে উঠেছে যৌন হেনস্থা, শ্লীলতাহানির অভিযোগ। শিল্পী সংগঠনের সভাপতি পদ ছাড়তে বাধ্য হন সুপারস্টার মোহনলাল। গত ২৬শে অগস্ট ঋতাভরী সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘হেমা কমিশনের রিপোর্ট মালয়ালম চলচ্চিত্র জগতের যৌন হেনস্তার ঘটনাগুলোর পর্দা ফাঁস করে দিয়েছে। এই ঘটনা আমাকে ভাবতে বাধ্য করেছে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে এমন কোনও পদক্ষেপ কেন নেওয়া হয় না? কাধিক অভিযোগ প্রকাশ্যে আসছে। আমার সঙ্গে আমার চেনা পরিচিতর সঙ্গেও এমনটা হয়েছে। নোংরা মন ও ব্যবহার নিয়ে নায়ক/প্রযোজক/পরিচালক দিনের পর দিন কাজ করে চলেছে। কোনও সমস্যাও হচ্ছে না। আবার আর জি করের নির্যাতিতার বিচার চেয়ে তাঁদের মোমবাতি হাতেও দেখা যাচ্ছে।’
এখানেই থামেননি ঋতাভরী। তিনি আরও বলেন, ‘এই সমস্ত নোংরা মানসিকতার মানুষদের মুখোশ টেনে খুলুন। আমি আমার সহ-অভিনেত্রীদের কাছে আবেদন করছি, এই শয়তানদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। জানি আপনারা হয়তো ভালো চরিত্র হারানোর বা ইন্ডাস্ট্রিতে কোনওদিন কাজ না পাওয়ার ভয় পাচ্ছেন। কিন্তু আর কতদিন আমাদের চুপ থাকা উচিত? যে সমস্ত তরুণ অভিনেত্রীরা চোখে স্বপ্ন নিয়ে এই কাজে আসেন তাঁদের প্রতি কি আমাদের কোনও দায়িত্ব নেই। এই জায়গাটাকে কি তাঁরা সুগার কোটেড ব্রথেল ভাববে! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (দিদি) আমরা এই ধরনের (হেমা কমিটির মতো) তদন্ত চাই, অভিযোগ আর পরিবর্তনের জন্য।’