বাংলা নিউজ > বায়োস্কোপ > ঋতুপর্ণের ছবিতে রবীন্দ্রসঙ্গীতের ব্যবহার সত্যিই চমকে দেয়!

ঋতুপর্ণের ছবিতে রবীন্দ্রসঙ্গীতের ব্যবহার সত্যিই চমকে দেয়!

ঋতুপর্ণ ঘোষের ছবিতে রবির গানের ব্যবহার সত্যিই অভূতপূর্ব!

ঋতুপর্ণের চলচ্চিত্রভাবনার একটা বড় অংশ জুড়ে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ।ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত বেশিরভাগ ছবিতেই ব্যবহৃত হয়েছে রবীন্দ্রসঙ্গীত। কবিগুরুর স্পর্শ থেকে কোনওদিনই অধরা থাকেনি ঋতুপর্ণর সৃষ্টি।

সত্যজিত পরবর্তী বাংলা চলচ্চিত্রের মানচিত্রে সবচেয়ে প্রতিভাশালী পরিচালক হিসাবে চিহ্নিত করা হয় তাঁকে। তিনি ছিলেন সত্যজিতের যোগ্য উত্তরসূরি। নয়ের দশকে ঋতুপর্ণ ঘোষের হাত ধরেই উত্থান হয়েছিল বাংলা ছবির।

সত্যজিতের মতোই ঋতুপর্ণের চলচ্চিত্রভাবনার একটা বড় অংশ জুড়ে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। অনেক ক্ষেত্রেই আমরা কথা বলি ঋতুপর্ণের ঘোষের সেইসব ছবি নিয়ে যার চিত্রনাট্য গড়ে উঠেছিল রবীন্দ্রনাথের কোনও উপন্যাস ঘিরে। কিন্তু ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত বেশিরভাগ ছবিতেই ব্যবহৃত হয়েছে রবীন্দ্রসঙ্গীত। কবিগুরুর স্পর্শ থেকে কোনওদিনই অধরা থাকেনি ঋতুপর্ণর সৃষ্টি। 

জীবন মরণের সীমানা ছাড়ায়ে (শুভ মহরৎ )

রাখি গুলজার,শর্মিলা ঠাকুর,নন্দিতা দাস অভিনীত এই ছবির শেষের দিকে রবীন্দ্র গানের এই গান যে প্রভাব বিস্তার করেছিল সত্যি দুর্লভ। মনোময়ের কন্ঠে কোনওরকম বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গত ছাড়াই এই গান অংশ হয়ে উঠেছিল শুভ মহরতের। 

‘যে রাতে মোর দুয়ারগুলি’  (নৌকাডুবি)

২০১৩ সালে মুক্তি পেয়েছিল এই ছবি। নৌকাডুবির নামের কথা মাথায় রাখলে ছবিতে তরী আমার হঠাত্ ডুবে যায়ের ব্যবহার খুব বেশি চমকপ্রদ মনে হয় না।কিন্তু থিমের কথা ভেবে যে রাতে মোর... এই গানের ব্যবহার সত্যি অনবদ্য। ছবিতে ‘তোমারও অসীমে প্রাণ মন লয়ে’ গানটির ব্যবহারও একদম সিচুয়েশন অনুযায়ী করেছিলেন রবীন্দ্র অনুরাগী ঋতুপর্ণ ঘোষ। 

‘গহন কুসম মাঝে’ (আবহমান)

রবীন্দ্রনাথের ভানুসিংহের পদাবলির ‘গহন কুসম মাঝে’ গানটি আবহমান ছবিতে ব্যবহার করেছিলেন ঋতুপর্ণ। ছবির মাঝে তৈরি হচ্ছে আরের ছবি-সেইখানে ডান্স নম্বর হিসাবে বাজছে এই গান। 

একি ল্যাবণ্যে পূর্ন কর প্রাণ (মেমোরিস ইন মার্চ)

শুধু পরিচালক ঋতুপর্ণের ছবিতে রবির গান ব্যবহার হয়েছে তেমন নয়। অভিনেতা-কাহিনিকার ঋতুপর্ণর ছবিতেও ফিরে ফিরে এসেছেন রবীন্দ্রনাথ। সঞ্জয় নাগ পরিচালিত মেমোরিস ইন মার্চ ছবিতে অভিনয়ের পাশাপাশি ছবির কাহিনিকারও ছিলেন ঋতুপর্ণ। এই ছবির ক্লাইম্যাক্স দৃশ্যে একি লাবন্যে পূর্ন কর প্রাণের ব্যবহার সত্যিই স্তব্ধ করে দেয় দর্শকদের। 

প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে (আরেকটি প্রেমের গল্প)

 রবীন্দ্রনাথের পূজা পর্যায়ের আরও একটি গান খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে ঋতুপর্ণ ঘোষ অভিনীত আরেকটি প্রেমের গল্পে। ছবিটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন কৌশক গঙ্গোপাধ্যায়। এই ছবিতে একাধির রবীন্দ্রসঙ্গীত ব্যবহৃত হয়েছে। যিশু সেনগুপ্ত ও ঋতুপর্ণ ঘোষের প্রেম, বিচ্ছেদ-বেদনা সবই ফুটে উঠেছিল চিত্রাঙ্গদার ‘বধূ কোন আরও লাগল চোখে’র মধ্য দিয়ে। সেলুলয়েডের পর্দায় এই গানের এমন ব্যবহার সত্যিই দুর্লভ। 

 

কথায় বলে মানব জীবনের এমন কোনও অনুভূতি নেই যা নিজের গানের মধ্যে দিয়ে স্পর্শ করেননি রবীন্দ্রনাথ।বাঙালির চিরসখার প্রতি কতখানি অফুরন্ত শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা থাকলেই রূপোলি পর্দায় সেই গানের এত সুন্দর ব্যবহার করা যায় তা বলা মুশকিল। এই প্রশ্নের উত্তর বোধহয় শুধু ঋতুপর্ণ ঘোষের কাছেই ধরা ছিল।

 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা ধরা করেই তাই বলা যায়- ‘চিরদিন আছ দূরে,অজানার মতো নিভৃত অচেনা পুরে।..না বলা তোমার বেদনা যত..বিরহপ্রদীপে শিখার মতো,নয়ন তোমার উঠেছে জ্বলিয়া, নীরবে কী সম্ভাষণা’!!



 



 

বন্ধ করুন