স্বাস্থ্যভবনের সামনে এখনও চলছে জুুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন। যেখানে প্রত্যক্ষ হোক বা পরোক্ষভাবে, ক্রমাগত সাহায্য চালিয়ে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তারকারাও এগিয়ে এসেএইঅ তরুণদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আর এই তালিকায় আছেন আরজে অগ্নিও। তিনিও রাত জেগেছেন সল্টলেকে খোলা আকাশের নীচে, মাথা ঢেকেছেন ত্রিপলে।
রাত ১২টার দিকে অগ্নিই ফেসবুকে জানান, মহা মিছিলের কারণে প্রায় ২০০জনের খাবার কম পড়েছে। সাহায্য চান সোশ্যাল মিডিয়াতে। তিনি সেই পোস্টে লিখেছিলেন, অনেকটা রাত হয়েছে জানেন। তাও যদি সম্ভব হয়, তাহলে যেন বাড়িয়ে দেওয়া হয় সাহায্যের হাত। সেখানেই অনেকে লিখেছিলেন, তাঁরা জলদি কিছু করার চেষ্টা করছেন।
এরপর ঘণ্টাখানেক পর অগ্নি একটি ভিডিয়ো শেয়ার করে নিলেন। যেখান থেকে স্পষ্ট, সবার পেট ভরার মতো খাবার পৌঁছে গিয়েছে আন্দোলনস্থলে। সকলের হাতে খাবার তুলে দেওয়া হচ্ছে। অগ্নি লিখলেন, ‘আপনাদের জন্য রাতে কেউ খালি পেটে শুতে যাচ্ছে না। অশেষ কৃতজ্ঞতা।’ সঙ্গে আরও জানালেন, ‘যারা ডেলিভারি করতে এসেছিলেন বৃষ্টি মাথায় নিয়ে তাদেরও খাওয়ানো হয়েছে। জুনিয়র ডাক্তাররাই দায়িত্ব নিয়ে পুরোটা সামলেছেন।’
মানবতার এই নজির এর আগেও চোখে এসেছে স্বাস্থ্যভবনে। যেখানে পুলিশকে খাবার খাইয়েছেন, জলের বোতল দিচ্ছেন এই জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের পাহারা দিচ্ছে যারা, তাঁদের কি করে অভুক্ত রাখবেন। এমনকী, এক মহিলা পুলিশ অসুস্থ হয়ে পড়লে, এই ডাক্তাররাই প্রাণে বাঁচিয়েছেন। নিজেরা অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে গিয়েছেন হাসপাতালে।
অগ্নির এই পোস্টের কমেন্টে Rehana Parvin নামে এক মহিলা মন্তব্য করেন, ‘জোম্যাটোতে অর্ডার করায়, ওরা অর্ডার দিতে দেরি করছিল। আমি ডেলিভারির দাদাকে ফোন করি। যে ৫০ মিনিট হয়ে গেল, উনি অর্ডারটা ক্যানসেল করে দেবেন না তো!
আমায় তাতে উনি বললেন, 'ম্যাডাম ৫০ মিনিটসের ওয়েট টাইমে আমার অনেক ডেলিভারি হয়ে যেত। অনেক বেশি টাকাও পেতাম। তবে এটা ক্যানসেল করিনি স্বাস্থ্যভবন লেখা আছে দেখে। আপনি একদম চিন্তা করবেন না। আমি ঠিক খাবার পৌঁছে দেব'। লড়াইটা যে কতটা সত্যিরপথে, তা আবার স্পষ্ট হয়ে গেল। আমরা সবাই পাশে আছি তোমাদের, হাল ছেড়ো না।’
কিছু মানুষ অবশ্য অগ্নির এই পোস্টে ট্রোল করেন। লেখেন, ‘ওখানে মানুষ খাবার খেতে যাচ্ছে’। তাতে এক ব্যক্তি জবাব দিয়ে লেখেন, ‘কেও কেও হয়তো লিখছেন বা বলছেন সবাই রাতে ওখানে খেতে যায়! একবার ভাবতে হবে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কত ক্ষমতা সবাই খেতে পাচ্ছে ওখানে, সঙ্গে রাস্তায় বসে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। কুর্নিশ জানাই।’
আরেকজন লিখলেন, ‘একটা গণ আন্দোলন যে এত সুশৃঙ্খল হতে পারে, নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতে পারতাম না। বৃষ্টিতে ইলেকট্রিকের তার ছিঁড়ে পড়েছে, জুনিয়র ডাক্তাররা নিজেদের প্রাণ উপেক্ষা করে হাতে হাতে চেইন করে রেখেছে, যাতে অন্য কারোর ক্ষতি না হয়। এই আন্দোলন এক বিরাট শিক্ষা। জয় হবেই। তবে খাবার যেন নষ্ট না হয়, সেটাও একটু লক্ষ্য রাখবেন।’