গত ২৪শে মে হুগলি জেলার খানাকুলে একটি মাচা শো করতে গিয়েছিলেন রুকমা রায়। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানে গিয়ে চরম হেনস্থার শিকার হন অভিনেত্রী। ছোটপর্দার ‘কিরণমালা’কে মঞ্চ থেকে নেমে যেতে বলেন আয়োজক কমিটির এক সদস্য়। সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল। মঞ্চে উঠে গান গাইবার সময় ভক্তদের আবদার মেনেই তাদের সঙ্গে সেলফি তুলছিলেন রুকমা। সেই আবদার মেটাতে গিয়েই যাবতীয় বিতর্কের শুরু। আয়োজক কমিটির সদস্যের চরম দুর্ব্যবহারের মুখে পড়ে মঞ্চ থেকে নেমে যান রুকমা। আয়োজকদের অভিযোগ রুকমা নাকি নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে ২ ঘন্টা দেরিতে উপস্থিত হয়েছিলেন। আদতে কী ঘটেছিল সেই রাতে? গোটা ঘটনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলেছেন রুকমা।
এক সাক্ষাৎকারে রুকমা জানান, তাঁকে রাত ১১টার সময় পৌঁছানোর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি আধ ঘন্টা দেরিতে পৌঁছান। জায়গাটা অনেক দূর হওয়ায় পৌঁছাতে সময় লেগেছিল তাঁর। টিভি নাইন বাংলাকে অভিনেত্রী আরও বলেন, মূল অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে অনেক দূরে দাঁড় করানো হয় গাড়ি। বলা হয়, গাড়ি আর যাবে না। অনেক অলিগলি। অন্ধকারে ওতো রাতে পায়ে হেঁটে যাওয়াটা আমি নিরাপদ মনে করিনি। অনুরোধ করি অন্তত পক্ষে একটা টোটোর ব্যবস্থা করে দিতে।' ওই স্থান থেকে মঞ্চের আলো পর্যন্ত দেখা যাচ্ছিল না, কতদূর হাঁটতে হবে তা বুঝতে না পেরে দোনামোনা করছিলেন রুকমা। এরপর রুকমার সংযোজন, ‘যিনি আমাকে অপমান করেছেন,সেই ব্যক্তি এরপর তাঁর বাইকটি নিয়ে এসে আমাকে বাইকে উঠে অনুষ্ঠানের জায়গায় যেতে বলেন। আমি তাঁকে চিনি না ব্যক্তিগত ভাবে। তাই সেই প্রস্তাবে আমি রাজি হইনি।’ এরপর অনুষ্ঠান স্থলে গিয়ে রাত ১২টার পর গান শুরু করেন রুকমা। দর্শকরা তাঁর গান উপভোগও করছিল কিন্তু আয়োজকদের তরফে এমন অপমানজনক ব্যবহার পাবেন তা দুঃস্বপ্নেও আশা করেননি রুকমা।
অভিনেত্রী বলেন, ভক্তদের সঙ্গে সেলফি তোলবার পরেই সেই ব্যক্তি তাঁর উপর চড়াও হয়, তাঁকে রীতিমতো মঞ্চ থেকে নেমে যেতে হবে। অভিনেত্রী হাতের মাইক পর্যন্ত ধরে টান মারেন ওই আয়োজক। অপমান সহ্য করতে না পেরে স্টেজ ছাড়েন রুকমা। যদিও অভিনেত্রীর দাবি দর্শকদের কথা মাথায় রেখে সঙ্গে সঙ্গে তিনি অনুষ্ঠান ছেড়ে বেরিয়ে আসেননি। ব্যারস্টেজে পৌঁছে রুকমা শর্ত দেন, যে তাঁকে অপমান করেছে, তাঁকে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে হবে। ‘দেশের মাটি’র মাম্পি বলেন, 'এই দাবি করা নিশ্চয়ই অপরাধ নয়? উনি ক্ষমা চাননি। বরং বলতে থাকেন, ‘সরি কিছুতেই বলব না। গেলে চলে যাক। আমার সিঙ্গার আছে। তাঁকে দিয়ে গাইয়ে নেব’। প্রায় আধ ঘন্টা অপেক্ষা করার পর এলাকা ছাড়েন রুকমা। এই অপমানের স্মৃতি এখনও দগদগে তাঁর মনে। রুকমার হেনস্থার ভিডিয়ো নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রতিবাদের ঝড়।
মাম্পির পাশে দাঁড়িয়ে ‘রাজা’ রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন- ‘এই মানুষটা বছরে ১০০টা শো করে, কোনওদিন কেউ বলতে পারবে না এক মুহূর্তের জন্য অপেশাদার হয়েছে, ও খুব ভালোবেসে কাজ করে,যে কাজটাই করে নিজেকে সমর্পন করে,তাই ওর মত গায়িকাকে শো তে ডাকা মানে ভরপুর মনোরঞ্জন,ওর সাথে এটা হলে বাকিরা কি করবে?’