সম্পর্ক শব্দটাই এখন বড্ড ক্ষণস্থায়ী। টিকিয়ে রাখার তাগিদটাই যেন উধাও, কিন্তু ২০ বছর ধরে পরস্পরকে আগলে রেখেছেন যিশু-নীলাঞ্জনা। সংসারে টুকটাক ঝামেলা তো লেগেই থাকে, কিন্তু সবসময় মানিয়ে নিয়েছেন দুজনে। সহকর্মী থেকে বন্ধুত্ব, তারপর প্রেম, বিয়ে… অনেকটা পথ পার করে ফেলেছেন দুজনে। অথচ যিশু-নীলাঞ্জনার সংসার নাকি ফাটল ধরেছে। যিশুর সঙ্গে অন্য নারীর নাম জড়িয়েছে।
যিশু-নীলাঞ্জনার দাম্পত্য ভাঙছে নাকি তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশের জন্যই। গোটা বিষয় নিয়ে চুপ যিশু-নীলাঞ্জনা, তবে এবার এই তারকা দম্পতিকে নিয়ে মুখ খুললেন কাছের বন্ধু রুদ্রনীল। আনন্দবাজারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিয়ে ভাঙার গুজব কানে আসার কথা জানান রুদ্রনীল। তিনি লিখেছেন, বিয়ে ভাঙার যন্ত্রণাতে নাকি নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন নীলাঞ্জনা। সেই খবর অবশ্য অসুস্থতা বলে চাপা দেওয়া হয়েছে, এইসব রটনা তিনি শুনেছেন। এই রটনার সত্যতা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও কিছু সত্যি তো সবার সামনে। নীলাঞ্জনা স্বামীর পদবি মুছেছেন, ইনস্টাগ্রাম থেকে যিশুর সঙ্গে ছবি ডিলিট করেছেন, একইসঙ্গে বরকে আনফলো করেছেন।
মন খারাপের লম্বা পোস্টে দুই মেয়ে (সারা,জারা) ও বোন চন্দনার নাম উল্লেখ করলেও যিশুর নাম নেননি। এই বিয়ে ভাঙার জন্য আঙুল উঠছে যিশুর আপ্তসহায়কের দিকে। যাঁর সঙ্গে নায়কের পরিচয় প্রায় এক দশকের। কিন্তু হঠাৎ করে কী এমন ঘটলো? যাই ঘটুক না কেন, বিচ্ছেদের খবর যিশু কিংবা নীলাঞ্জনার মুখে না শুনলে সত্যি বলে মানবেন না রুদ্রনীল।
যিশুর লড়াই খুব কাছ থেকে দেখেছেন। ছোট বয়স থেকে নীলাঞ্জনাকেও চেনেন রুদ্রনীল। ঘাম, রক্ত এক করে ইন্ডাস্ট্রিতে আজ প্রতিষ্ঠিত যিশু। ‘সেই ছেলে তৃতীয় কোনও ব্যক্তির জন্য বৌ, দুই মেয়েকে ছেড়ে চলে যাবে?’ মানতে না-রাজ রুদ্রনীল। তবে গুঞ্জন সত্যি হলে বন্ধুরা সমাধানের পথ খুঁজবেন, আশ্বাস দেন রুদ্রনীল। তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, মানুষ কাচ নয়। তাই ভাঙলে জোড়া লাগবে না, এমন হতে পারে না। দাম্পত্যে, সংসারে পদে পদে দ্বন্দ্ব।’
রুদ্রনীল নিজে এখনও ছাদনাতলায় যাননি। দাম্পত্যের চড়াই-উতরাইয়ের অভিজ্ঞতা না থাকলেও বন্ধু হিসাবে এই কঠিন সময়ে যিশু-নীলাঞ্জনার পাশে অভিনেতা।
সম্প্রতি কলকাতায় ফিরেছেন যিশু, একটি ছবির শ্যুটিংয়ের কাজে। সিসিএলের সাক্সেস পার্টিতেও দু-দিন আগে দেখা গিয়েছে নায়ককে। অথচ লেক গার্ডেন্সের বাড়িতে থাকছেন না অভিনেতা। অর্থাৎ আপতত যিশু-নীলাঞ্জনার ছাদ আলাদা। এক শহরে থাকলেও মনের দূরত্ব এতটাই বেড়েছে, যে এক ছাদের নীচে থাকা আর সম্ভব হচ্ছে না।
রুদ্রনীলের মতোই যিশু-নীলাঞ্জনার বিচ্ছেদ চর্চায় স্তম্ভিত অনেকেই। কারণ এই জুটির মতো হাসিখুশি আর একসঙ্গে জুড়ে থাকা দম্পতি খুব কমই চোখে পড়ে। একবার নীলাঞ্জনা বলেছিলেন, ‘যিশু কোনও দিন ওর মা-বাবাকে আলাদা হতে দেখেনি। আমিও না। আমাদের কাছে বিবাহিত জীবনের সংজ্ঞা এটাই। ভাল-মন্দ যা-ই আসুক, আমরা হাত ছাড়ব না।’ অথচ কঠিন সময়ে সেই হাতটাই আর নীলাঞ্জনার সঙ্গে নেই! ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নিন তাঁরা, প্রার্থনা অনুরাগীদের।