২০২২-এর সেপ্টেম্বর মাস। সেসময়ই প্রথমবার বিনোদিনী রূপে সকলকে চমকে দিয়েছিলেন রুক্মিণী মৈত্র। এরপরই জানা গিয়েছিল পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে আসছে ‘বিনোদিনী: একটি নটীর উপাখ্যান’। আর সেখানেই বিনোদিনী হয়ে ধরা দেবেন রুক্মিণী মৈত্র। ২০২৩-এর মার্চে শেষ হয়েছিল ছবির শ্য়ুটিং। অবশেষে মুক্তি পেতে চলেছে সেই ছবি। তার আগে দেখা মিলল ‘বিনোদিনী: একটি নটীর উপাখ্যান’-এর ঝলক। দীপাবলির শুভক্ষণে সামনে এল টিজার, আর তাতেই নটীর বেশে, অভিনেত্রী হিসাবে আরও একবার নজর কাড়লেন রুক্মিণী মৈত্র।
‘বিনোদিনী: একটি নটীর উপাখ্যান’-এর টিজার
'থিয়েটার থিয়েটার থিয়েটার…'। হ্য়াঁ, এই থিয়েটারই ছিল তাঁর প্রাণভোমরা, তাঁর জীবন। অসমান্য অভিনয় প্রতিভার অধিকারী হয়েও আজন্ম বঞ্চনা আর অববেলার শিকার হয়েছেন তিনি। বারবণিতার পরিবেশ থেকে উঠে এসে অনেক ছোট বয়েসে বাংলা মঞ্চে অভিনেত্রী হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। ১২ বছরের স্বল্প অভিনয় জীবনের মধ্যেই তিনি মঞ্চাভিনয়ে বিপুল সাফল্য অর্জন করেন। সেই বিনোদিনী দাসীর জীবন, অভিনয় জীবনই উঠে এল ছবির টিজারে। যেখানে গিরিশ ঘোষের ভূমিকায় দেখা মিলল কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের। যিনি কিনা ছিলেন অভিনয় জীবনে বিনোদিনীর শিক্ষাগুরু।
টিজারে রাঙাবাবুর চরিত্রে দেখা মিলল রাহুল বোসের। ব্যবসায়ী গুর্মুখ রায়ের চরিত্রে রয়েছেন মীর ও কুমার বাহাদুরের চরিত্রে রয়েছেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা ওম সাহানি। টিজারে বারবার ধরা পড়ল বিনোদিনী দাসীর বলিষ্ঠ ও দৃঢ়চেতা চরিত্র। তাঁকে বলতে শোনা গেল, ‘এই থিয়েটারকে আমি পুজো করি।’ আবার তিনি বললেন, ‘বিনোদিনী দাসী কিন্তু বিকাও নয়। আমার অভিনয় বিকাও হতে পারে। তা দেখতে হলে টাকা দিয়ে টিকিট কাটুন। আমার অভিনয় কিনুন, দেখতে আসুন। তবে ভুল করেও বিনোদিনী দাসীকে কিনতে আসবেন না।’ গোটা টিজার জুড়ে নটী বিনোদিনী একাটা শক্তিশালী চরিত্রের ঝলকই উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন-‘আমি এখন সিঙ্গল…’, ব্রেকআপের কথা অর্জুন সকলের সামনে বলে দিতেই মুখ খুললেন মালাইকা
আরও পড়ুন-অর্পিতাকে ‘গওহরজান’ সাজিয়েছেন তিনিই, মেকআপ নিয়ে বড় কথা ফাঁস করলেন অনিরুদ্ধ চাকলাদার
জানা যায়, একসময় গ্রেট ন্য়াশনাল থিয়েটারের মালিক প্রতাপচাঁদ জহুরির আচরণে বিরক্ত হয়ে নতুন দল খুলতে উদ্যোগী হয়েছিলেন গিরিশচন্দ্র ঘোষ। সেসময় বিনোদিনীকে রক্ষিতা হিসাবে পাওয়ার শর্তে টাকা জোগাতে রাজি হয়েছিলেন গুর্মুখ রায় মুসাদি নামে এক মাড়োয়ারী যুবক। বিনোদিনী থিয়েটারের স্বার্থে সেই শর্তেও রাজি হয়ে যান। ১৯৮৩ সালে বিডন স্ট্রিটে তৈরি হয়েছিল সেই থিয়েটার ভবন। বিনোদিনীর ইচ্ছে ছিল সেই থিয়েটারের নাম হবে বি থিয়েটার। তবে কিছু মানুষের বিশ্বাসঘাতকতা ও প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন বিনোদিনী। সেই প্রতারকদের মধ্যে ছিলেন বিনোদিনী অভিনয় গুরু গিরিশচন্দ্র ঘোষও ছিলেন। স্টার থিয়েটার নাম রাখা হল সেই থিয়েটার হলের। পরে ব্যবসায়ী গুর্মুখ রায়ও বিনোদিনীকে ছেড়ে চলে যান। সেই সব গল্পই যে ছবিতে উঠে আসতে তার কিছু আভাস টিজারেও মিলেছে।
এই ছবির সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন সৌরেন্দ্র ও সৌম্যজিৎ।