রূপালি গঙ্গোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কাঁটাছেড়া যেন কমার নামই নিচ্ছে না। তাঁর সৎ মেয়ে, এশা ভার্মা একের পর এক অভিযোগের ঝুলি খুলে চলেছেন। ইতিমধ্যেই, আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছেন অনুপমা-নায়িকা। তাতে কি আর মুখ বন্ধ করা যায়!
১২ ফেব্রুয়ারি এশা ভর্মা তাঁর ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে বিরক্তি-প্রকাশ করেন। জানান যে, তাঁর কোর্ট হিয়ারিংয়ের তারিখ পড়েছে তাঁর জন্মদিনের দিনেই। ফলত, জন্মদিন উদযাপনটাই তাঁকে স্থগিত রাখতে হচ্ছে। এখানে অবশ্য কোথাও ছিল না রূপালীর নাম। শুধু লেখা ছিল, ‘evil step lady’। অর্থাৎ ‘শয়তান সৎ মহিলা’।
সেই ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে লেখা ছিল, ‘পরবর্তী আদালতের তারিখ হিসেবে আমার জন্মদিন বেছে নেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ শয়তান সৎ মহিলাকে। খুব দয়ালু। আমার উপর নজরদারি করার জন্য এবং বিগত ৪ মাস ধরে সোশ্যাল মিডিয়ার নীতি লঙ্ঘনের জন্য অনেক ধন্যবাদ।’
যদিও পরে এশা ভর্মা পালটি খান নিজের বক্তব্য থেকে। ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে একটি বক্তব্য প্রকাশ করে লেখেন যে, ‘আমি আমার বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে এবং আমার চিন্তাভাবনা ভাগ করে নেওয়ার জন্য আমার সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করি- এটি সবসময়ই আমার নিতান্ত ব্যক্তিগত ছিল। আমি ঘুমানোর আগে আমার অনুভূতিগুলো টাইপ করছিলাম এবং এটি আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর কাছে পাঠাতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ঘটনাক্রমে এটি আমার স্টোরিতে পোস্ট হয়ে যায়। আমি নতুন করে কিছু শুরু করার বা প্রকাশ্যে আনার চেষ্টা করছিলাম না- এটি কেবল আমার সেই মুহূর্তের আবেগের বহিঃপ্রকাশ ছিল।’
রূপালি-এশার আইনি মামলা:
রুপালির বিরুদ্ধে মানসিক অত্যাচার-সহ অজস্র অভিযোগ আনেন এশা। সৎ কন্যের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করে ৫০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, এশার কথাবার্তায় মানসিকভাবে আঘাত পেয়েছেন রূপালি, যার ফলে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়েছে তাঁর। শুধু তাই নয়, এশার অভিযোগের ফলে কাজের ক্ষেত্রেও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে অভিনেত্রীকে। তাঁর চরিত্র কালিমালিপ্ত হয়েছে।
১৯৯৭ সালে স্বপ্না এবং অশ্বিনের বিয়ে হয় এবং ২০০৮ সালে তাঁরা বিবাহ বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন। ২০১৩ সালে, ডিভোর্সের প্রায় ৫ বছর পর বাঙালি অভিনেত্রীকে বিয়ে করেন অশ্বিন। ২৬ বছর বয়সী এশা আমেরিকার নিউ জার্সিতে থাকেন। বাবা মায়ের বিচ্ছেদের জন্য এশা সম্পূর্ণ দায়ী করেন রূপালি গঙ্গোপাধ্যায়কে।
২০২০ সালের এশার করা একটি পোস্ট ভাইরাল হয়েছে সম্প্রতি। যেখানে এশা রূপালির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, তার বাবা পরকীয়ার জেরে ত্যাগ করেন তাঁদের। তাঁকে, তাঁর মাকে ছেড়ে চলে যান। এখানেই শেষ নয়, এশার আরও দাবি যে, রূপালী তাঁকে প্রাণে মারারও হুমকি দিয়েছিলেন।
সেই পোস্ট ভাইরাল হতেই এশা এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার বাবা-মায়ের বিয়ে ভেঙে দিয়েছিল এই মহিলা। মুম্বইয়ে আমার দাদা-দাদির বাড়িতে আমার মাকে শারীরিকভাবে আঘাত করেছিল। আমি এখানে শুধু রূপালিকে চিহ্নিত করছি না; আমি এটা বলার শক্তিও সঞ্চয় করেছি যে, এটা আমার বাবার দোষ। প্রথমে যখন এই খবরটি ভাইরাল হয়, তখন আমি সত্যিই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম; তিনি (রূপালী গঙ্গোপাধ্যায়) আমাকে পোস্টটি সরিয়ে নিতে বলেন।’
এখানেই শেষ নয়, এক সাক্ষাৎকারে এশার দাবি ছিল, 'আমাদের কিছু জানানো হয়নি। উনি যখন ভারতে যান, তখন খুব অদ্ভুত লাগে এবং আমার বাবা হঠাৎ বলেন যে, তিনি আর আমাদের সঙ্গে দেখা করতে চান না। এরপরই সামনে আসে রূপালিকে বিয়ের খবর ও ছেলে জন্মের খবর। তাঁরা সবাইকে বলে যে, প্রি ম্যাচিওর বাচ্চা হয়েছে। তবে একথা মিথ্যে। আমার কাছে জোরালো প্রমাণ আছে যে তিনি বিয়ের আগেই গর্ভবতী হয়েছিলেন। প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিয়ে করেন রূপালি ও অশ্বিন। সেই বছরেরই অগস্ট মাসে জন্ম হয় তাঁদের ছেলে রুদ্রাংশের।