প্রকাশিত হল বাংলার রকস্টার রূপম ইসলামের প্রথম উপন্যাস ' অনামিকা বলে ডাকতে পারি কি তোমায়?'। জানিয়ে রাখা ভালো, এই উপন্যাসের সমনামী রূপমের একটি বিখ্যাত গানও আছে। উপন্যাসটি প্রকাশনার দায়িত্ব নিয়েছে দীপ প্রকাশন।সম্প্রতি, প্রেস ক্লাবে একটি সাংবাদিক বৈঠকে বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত সাংবাদিক ও লেখক গৌতম ভট্টাচার্য। ছিলেন রূপম ইসলাম এবং দীপ প্রকাশনের তরফে দীপ্তাংশু মণ্ডল।
মূলত দু'টি উপন্যাস নিয়ে বোনা হয়েছে ‘অনামিকা বলে ডাকতে পারি কি তোমায়’ বইটি। প্রথম উপন্যাসের নাম ‘চাঁদনিতে উন্মাদ একজন’। দ্বিতীয় উপন্যাস ‘অনামিকা বলে ডাকতে পারি কি তোমায়’, যে নামে এই বইটির নামকরণ করা হয়েছে। উপন্যাসের মূল চরিত্র ব্রহ্ম ঠাকুর একজন মনোবিদ। এই বইয়ের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে লেখক বলেন, ' মূল চরিত্রের নাম ব্রহ্ম ঠাকুর। একজন মনোবিদ। আবার বেশ রহস্যময়ও বটে। এই চরিত্রকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে গল্প। এই ব্রহ্ম ঠাকুর কখনও অসাধারণ আবার কখনও সাধারণ মানুষ। আবেগপ্রবণ, ভালবাসায় চোখের জল ফেলেন। তবে যেভাবেই হোক জীবনের ছুড়ে দেওয়া চ্যালেঞ্জগুলো জিতে নেন এই মানুষটি।'
নিজের বই নিয়ে রূপম আরও বলেন, 'এর আগে আমার সঙ্গীত বিষয়ক চারটে বই প্রকাশিত হয়েছে। একজন সঙ্গীত শিল্পী সঙ্গীত বিষয়ে বই লিখবে সেটাই তো স্বাভাবিক। তবে আমি মনে করি আমার মধ্যে একটা লেখক সত্ত্বা আছে। আমি একটা সুযোগের জন্য অপেক্ষা করছিলাম আমার এই সত্ত্বাকে অন্য একটা খাতে বইয়ে দেওয়ার জন্য। গত বছর একটি বহুল প্রচারিত পূজাবার্ষিকীতে আমার উপন্যাস লেখার সুযোগ আসে। সুযোগটা নিয়ে লিখে ফেলেছিলাম 'চাঁদনিতে উন্মাদ একজন'। কিন্তু সেই উপন্যাসটা খুব একটা বড় হয়নি, তাই এই বইটার জন্যই দ্বিতীয় উপন্যাসটা লিখলাম। তবে এই বইটি কিন্তু একেবারেই সঙ্গীতকে ঘিরে নয়। এই বইয়ের কেন্দ্রে রয়েছে একজন পলাতক মনোবিদ। তাঁর একটা অন্ধকার অতীত আছে। আমি চাই লোকে বইটা পড়ুক। আমায় পরামর্শ দিক যাতে আমি আরও ভাল লিখতে পারি।'
রূপম আরও জানান তাঁর প্রিয় লেখক সত্যজিৎ রায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এবং হুমায়ূন আহমেদ। মূলত, তাঁর প্রিয় লেখকদের ওপর ভর করেই তিনি উপন্যাস লেখার রসদ খুঁজে পান। নিজের বক্তব্য শেষে তাঁর সংযোজন, 'গৌতম ভট্টাচার্যের লেখারও কিন্তু দারুণ ভক্ত আমি। ছোট থেকে যাঁদের লেখা পড়ে বড় হয়েছি, উনি তাঁদের মধ্যে অন্যতম।'
অন্যদিকে, রূপম ইসলাম সমন্ধে বলতে গিয়ে নির্মেদ, কাটা কাটা ভাষায় গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, 'ভীষণ তেজিয়ান, দৃপ্ত এক ব্যক্তিত্ব। অদ্ভুত একটা পজিটিভিটি রয়েছে ওঁর মধ্যে। আর বলতেই হবে রূপমের জনপ্রিয়তার কথা। এককথায় অকল্পনীয়। যেকোনও জায়গায় সব বাধা পেরিয়ে রূপমের জন্য চলে আসতে পারে তাঁর ভক্তরা।' 'রকস্টার'-এর লেখা নিয়েও নিজের সুচিন্তিত মত জানাতে ভোলেননি এই প্রখ্যাত সাংবাদিক-লেখক, 'রূপমের দেখার চোখটাই অন্যরকম। স্বতন্ত্র। রূপমের সেই চোখের তীক্ষ্ণ নজরের উদাহরণ কিন্তু বইটির পরতে পরতে রয়েছে। বলতে চাইছি, ও কিন্তু রোজকার চেনা পথে হেঁটে যাওয়া সেই পথিক নয়, ও সবসময় নিজের জন্য অন্য রাস্তা খুঁজে নিয়েছে। রূপমের গান শুনলে কিংবা ওঁর সঙ্গে কথা বললে যে অন্যরকম ভালো লাগা লাগে, সেই অনুভূতিই এই বইটির দু'মলাটের মধ্যে পাওয়া যাবে।
সুরসাম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরের জীবনাবসান নিয়েও শোকজ্ঞাপন করেছেন রূপম ইসলাম। এদিনের অনুষ্ঠানে কেক কাটা হয়। তারই নিজের পুরনো কম্পোজিশন ‘অনামিকা বলে ডাকতে পারি কি তোমায়?’ গানটি নিজের গলায় গেয়ে ওঠেন রূপম। দীপ প্রকাশনার তরফ থেকে দীপ্তাংশু মণ্ডলও জানান অভূতপূর্ব সাড়া মিলেছে।