ক্যানসারাস টিউমারটি হৃদযন্ত্রের সঙ্গে একদম লেগেছিল! অস্ত্রোপচার বেশ জটিল ছিল ঐন্দ্রিলার, ছিল জীবনের ঝুঁকিও। জীবন-মৃত্যুর সেই সন্ধিক্ষণ থেকে ঐন্দ্রিলাকে নতুন জীবনে ফিরিয়ে দিয়েছেন যিনি, সেই চিকিত্সককে কুর্নিশ জানালেন অভিনেত্রীর বিশেষ বন্ধু সব্যসাচী চৌধুরী। যাঁকে বামাক্ষ্যাপা নামেই বেশি চেনে বাংলা টেলিভিশনের দর্শকরা। বৃহস্পতিবার চিকিৎসক দিবস, এই বিশেষ দিনে শহরের দুই নামী চিকিৎসকে নিজের মতো করে ধন্যবাদ জানালেন ‘মুখচোরা’ সব্যসাচী। একজন ডাক্তার অমিতাভ চক্রবর্তী ও অন্যজন ডাক্তার সুমন মল্লিক।
চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতেই দ্বিতীয়বার ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার কথা জানতে পারেন ‘জিয়নকাঠি’ খ্যাত অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা। এখনও কেমো থেরাপি চলছে, তবে ফুসফুসে হওয়া ক্যানসারাস টিউমারটির জন্য কেমো নয়, প্রয়োজন ছিল অপারেশনের। সেই জটিল অস্ত্রোপচারের ঐন্দ্রিলার জীবন সংশয়ের বিষয়টিও জড়িত ছিল। এদিন ফেসবুকের দেওয়ালে প্রেমিক সব্যসাচী লেখেন,'ঐন্দ্রিলার টিউমারটি হার্টের সাথে লেগে থাকায় অস্ত্রোপচার করা এতটাই জটিল ছিল যে আমরা প্রথমে দিল্লি, মুম্বই ছাড়াও বোস্টন এবং লন্ডনে যোগাযোগ করেছিলাম। তবে অতিমারীর প্রকোপে এবং ওর শারীরিক অবনতির কথা ভেবে কোনোটাই সম্ভবপর হয়নি'। এই জটিল পরিস্থিতিতে দায়িত্ব সামলান এই শহরেরই নামী চিকিত্সক অমিতাভ চক্রবর্তী। সব্যসাচী আরও জানান, ‘দীর্ঘ বোর্ড মিটিংয়ের পর অমিতাভবাবু এবং ওনার টিম সদ্ধান্ত নেন তিনি ঝুঁকি নিয়ে এই অস্ত্রোপচার করবেন। ওকে সামনে বসিয়ে পরিষ্কার বলেন, এতে তোমার লাইফ রিস্ক আছে। তোমার জীবন, তুমি সিদ্ধান্ত নাও। ঐন্দ্রিলা এককথায় বলে, আমি রাজি। প্রায় ৭ ঘন্টা রবীন্দ্রনাথ টেগোর হাসপাতালের OT র সামনে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর, অমিতাভবাবু হাসিমুখে দরজা খুলে আমায় বলেন,দেখে যাও কী করেছি’। জটিল এই অস্ত্রোপচার যাঁর জন্য সহজ হয়ে উঠেছে তাঁকে আজকের দিনে কুর্নিশ না জানিয়ে পারলেন না সব্যসাচী।
৬ বছর আগেও যিনি ক্যানসারের হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন ঐন্দ্রিলাকে এবং যাঁর অধীনে এখনও চিকিত্সা চলছে অভিনেত্রী, সেই ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সুমন মল্লিকেও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সব্যসাচী লেখেন- ‘সম্পূর্ণ রেডিয়েশনের এবং কেমোথেরাপির দায়িত্ব তাঁর এবং তাঁর টিমের ওপর। কলকাতার নারায়ণা হাসপাতালে প্রায় প্রতিটা মানুষ এই মুহূর্তে জানে যে ঐন্দ্রিলা সেখানে চিকিৎসারত। শুরুটা দিল্লিতে হলেও, ও এখানেই বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করে, সুমনবাবুর সাথে তার বাবা-মেয়ের তুইতোকারি সম্পর্ক। আমায় বহুবার বলেছে ডাক্তার মল্লিকের মুখটা দেখলেই শান্তি, মনে হয় নিজের মানুষ। আগামী বেশ কিছু মাস সুমনবাবুর চিকিৎসার অধীনেই থাকবে সে’।
চিকিৎসক দিবসে আরও এক বিশেষ মানুষকে কুর্নিশ জানালেন সব্যসাচী। সম্পর্কে তাঁর হবু শ্বশুরমশাই, ঐন্দ্রিলার বাবা উত্তম শর্মা। সব্যসাচী লেখেন, ‘ঐন্দ্রিলার আত্মবিশ্বাসের একমাত্র চাবিকাঠি হলেন ওর বাবা ডাক্তার উত্তম শর্মা’।